ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের জনপ্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১১ জুন ২০২৪, ০০:২২
ভারতের নতুন সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জনপ্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবে, এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘আধুনিক কৃষি, অভিন্ন নদীর পানি আগ্রাসন এবং জলবায়ু ভারসাম্যহীনতা রোধে শহীদ জিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ, নিঃসন্দেহে প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশ। আমরা ভারতের নতুন সরকারের কাছে একটাই আশা করব যে, তাদের দেশে যেভাবে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে, তাদের নির্বাচন কমিশন যেভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তাদের বিচার বিভাগ যেভাবে কাজ করতে পারে বাংলাদেশেও সে রকম পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। আমাদের প্রত্যাশা, ভারতের সরকার বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবেন এবং সেভাবে তারা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলবেন।
অভিন্ন নদীর হিস্যা আদায়, তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি না হওয়া এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে শেখ হাসিনা সরকারের ব্যর্থতারও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট বিজয়ী হওয়ায় গত রোববার তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন নরেন্দ্র মোদী এবং তার নতুন মন্ত্রিসভাও শপথ নেয়।
‘এটা আজিজ-বেনজীরের আওয়ামী লীগ’ : মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ নেই যারা স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিল, সেই আওয়ামী লীগ নেই যারা আমাদের সাথে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম-লড়াই করেছিল। এটা আজিজ-বেনজীরদের আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যখনই আসে তখনই তাদের কেমিস্ট্রেতে পরিবর্তন শুরু হয়। সেই পরিবর্তনটা হচ্ছে তারা সর্বগ্রাসী হয়ে যায়। শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই বলেছিলেন, সবাই পায় সোনার খনি, আমি পাই চোরের খনি। চোরের খনি সব দিকে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এরা (সরকার) পরিকল্পিতভাবে সচেতনভাবে বাংলাদেশকে একটা নতজানু ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। ফেলড স্টেট করতে চায় যেটা জিয়াউর রহমান রুখে দিয়েছিলেন। অনেকে বলবে, এত উন্নয়ন করছে, মেগা প্রজক্টে করছে, এত ফ্লাইওভার হচ্ছে। কিন্তু সেই সাথে তারা কত মেগা পাচার করেছে চুরি করেছে সেটাও জানা দরকার। একই সাথে সাধারণ মানুষের, গ্রামের মানুষের কি উপকারটা হয়েছে এতে। এত উন্নয়ন করেছে যে, ঢাকা শহরে আর লোক থাকতে পারছে না। তারা চলে যাচ্ছে গ্রামে। কিন্তু কি দুর্ভাগ্য! গ্রামে ফিরে গিয়েও তার কর্মসংস্থান নাই, কাজ পাচ্ছে না। কোথায় কাজ পাবে দেশে তো কোনো কাজ নাই। তিনি বলেন, আজকে এমন একটা অবস্থা হয়েছে যে, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা একেবারেই শেষপর্যায় গিয়ে পৌঁছেছে। যে বাজেট দিয়েছে সেটা লুটপাটের বাজেট। আজ বিচার নাই, কোথাও কোনো ব্যবসা করতে গেলে সে সুযোগও নাই। টাকা ছাড়া ঘুষ ছাড়া কেউ কথা বলে না। শিক্ষা ব্যবস্থা আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, ছাত্ররা আবার মাঠে নেমেছে। আমাদের সবচেয়ে বড় যে সঙ্কট হচ্ছে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার, ভোটের অধিকার সেই অধিকারটা তারা কেড়ে নিয়েছে। আজকে গোটা পরিবার, দল এবং ব্যক্তিকে নিয়ে সে একটা পুরোপুরি ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, যে ফ্যাসিবাদে আমরা নির্যাতিত হচ্ছি। ফখরুল বলেন, যে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে, যেমন করে হোক এই দানবকে সরিয়ে ফেলতে হবে। এর সেই পথ একটাই- জনগণকে সংগঠিত করে আমাদের আন্দোলন আরো তীব্র করতে হবে এবং সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশের আজ ভয়াবহ অবস্থা। জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, বাংলাদেশের শতকরা ১৭ ভাগ মানুষ তারা এফেক্টেড হবেন। এটার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এ জন্য আন্তর্জাতিকভাবে যে ফান্ড আসে সরকার তা খেয়ে ফেলেছে। এদের তো খিদার শেষ নেই। সর্বগ্রাসী ক্ষুধা।
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও দফতর সম্পাদক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহসভাপতি নাসির হায়দার, মামুনুর রশীদ খান, এস এম ফয়সাল, খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, আ ন ম খলিলুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক ওবায়দুর রহমান টিপু এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জামসেদ আলী রিপন বক্তব্য রাখেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহাদত হোসেন বিপ্লব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা