১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রুচি বদলে গেছে সুগন্ধি চা তৈরি করুন : প্রধানমন্ত্রী

রুচি বদলে গেছে সুগন্ধি চা তৈরি করুন : প্রধানমন্ত্রী -

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে চা বহুমুখী করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানুষের রুচি এখন বদলে গেছে। বিভিন্ন ধরনের চা এখন পাওয়া যায়। সুগন্ধি চা তৈরি করুন। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্বাদের চায়ের চাহিদা এখন অনেক বেশি। চা উৎপাদনের পাশাপাশি এ দিকে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন এবং ‘জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪’ প্রদান উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। জাগো নিউজ।
তিনি বলেন, এখন বিভিন্ন ধরনের চা পাওয়া যাচ্ছে। হারবাল টি, মসলা টি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সেজন্য ‘অ্যারোমা টি’ উৎপাদন করা প্রয়োজন। কারণ বিভিন্ন অ্যারোমা চায়ের কদর অনেক বেশি। এ ছাড়া তুলসি, আদা, লেবু, তেজপাতা, এলাচ, লং, দারুচিনি প্রভৃতির সাহায্যে আমরা যে চা বানাই সে চাও প্যাকেটজাত করা যায়।
সরকারপ্রধান বলেন, যারা চা মালিক এবং ব্যবসায়ী তাদের বলব আপনারা ভ্যালু অ্যাডেড করেন। বাল্কে চা বিক্রির পরিবর্তে যদি ভ্যালু অ্যাডেড করেন তাহলে আপনারা ভালো দাম পাবেন। উপার্জন করতে পারবেন প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা এবং বিশ্বব্যাপী এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
পাট পাতা থেকে চা তৈরিতে গবেষণা চলছে এবং সীমিত আকারে উৎপাদন হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি নিয়ে আরো গবেষণা করে এর উৎকর্ষ সাধন প্রয়োজন।
সারা দেশে বিদ্যুতায়নের সাথে সাথে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এখন গ্রামগঞ্জের মানুষ অনেক বেশি তথ্য পান। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও রাত ১১টা-১২টা পর্যন্ত সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও বিশ্ব পরিস্থিতির আলোচনায় চায়ের কাপে ঝড় ওঠে।
তিনি বলেন, চায়ের কাপে এই ঝড় দিন দিন বাড়ছে। কাজেই চায়ের চাহিদাও বাড়ছে। সেজন্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। এটা করার জন্য যা যা করা দরকার অবশ্যই আমরা করব। আপনাদের সব ধরনের সহযোগিতা করব সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি শ্রমিকদের প্রতি আরো যতœবান হওয়ার এবং তাদের দিকে বিশেষভাবে নজর দেয়াসহ তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য চা বাগানের স্কুলগুলোর উন্নয়নে মালিকপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী মালিকদের বলেন, চা শ্রমিকদের প্রতি যতœবান হলে তাদের থেকে বেশি কাজ আদায় করিয়ে নিতে পারবেন। তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসাসহ নানা বিষয় দেখবেন। চা শ্রমিকদের নাগরিকত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা। তাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই, আপন ভূমি নেই। আমরা তাদের সেই মাথাগোঁজার ঠাঁই করে দেবো।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, চা বাগানে প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত। যার সাথে সংশ্লিষ্ট আরো অনেকেই রয়েছেন। কাজেই তাদের জীবনমান উন্নত করা, আর্থিক দিক দেখা, ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ দেখা কিন্তু মালিকদের দায়িত্ব।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো: আশরাফুল ইসলাম অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন। স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্কল্প, রফতানিমুখী চা শিল্প শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশে চতুর্থবারের মতো এ বছর জাতীয় চা দিবস-২০২৪ উদযাপন হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উত্তরাঞ্চল চায়ের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে সেটাকে সম্প্রসারণ এবং যতœ করা, কিভাবে আরো চা উৎপাদন বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া চা বোর্ড, ক্ষুদ্র চাষিদের প্রযুক্তি সহায়তা, প্রণোদনা, সবদিক থেকে সরকার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পঞ্চগড়ের পাশাপাশি লালমনিরহাটেও চা বোর্ডের স্থায়ী অফিস নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পঞ্চগড়ে আঙিনায়ও চা হচ্ছে। তারা তরকারিও ফলায়, চায়ের গাছও লাগায়। আমাদের অর্থকরী ফসল হচ্ছে চা। যেটা দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে। চায়ের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে। গবেষণার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, তার সরকার চা উৎপাদনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে ২০২৩ সালে রেকর্ড ১০২ দশমিক ৯২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল।


আরো সংবাদ



premium cement