সিরাজগঞ্জ ও পাবনায় সংঘর্ষ : নিহত ১ আহত ১৬
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৪ মে ২০২৪, ০১:৩৫
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় একজন নিহত ৩০ জন আহত হয়েছে। পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে ১০ জন আহত হয়েছে।
পাবনা প্রতিনিধি জানান, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান তানভীর ইসলামের সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম কামালের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল রাতে উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের মতিগাছা এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। আহতরা হলেন- মতিগাছা এলাকার এলেম উদ্দিনের দুই ছেলে আফাই মোল্লা ও সইমুদ্দিন মোল্লা, সিরাজুল প্রামাণিকের ছেলে আবুল কাসেম এবং আবুল কাসেমের ছেলে মাহাতাব প্রামাণিক। অপর আহতদের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে তানভীর ইসলামের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন শেষে ফেরার পথে তানভীর ইসলামের সমর্থকদের মারধর করে কামালের সমর্থকরা। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগে চাঁদভায় আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করেছে কামালের লোকজন। আজকে আমার সমর্থকরা অফিস উদ্বোধন শেষে বাড়ি ফেরার পথে পরিকল্পিতভাবে কামালের সমর্থকরা হামলা করে। এতে আমার কয়েকজন সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছেন। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
তবে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, আমার সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ মিথ্যা ও কাল্পনিক। দেবোত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপরই হামলা করা হয়েছে। এতে আমার এক বৃদ্ধ ও নারী সমর্থক আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে আটঘরিয়া থানার ওসি হাদিউল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনা শুনেছি। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করছে। আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকিরের চাচা আব্দুল আলিম (৫৭) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে গতকাল ভোর রাতে তার মৃত্যু হয়। নিহত আব্দুল আলিম বেলকুচি উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের মরহুম হায়দার আলীর ছেলে। আটককৃতরা হলেন বেলকুচি উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের চান মিয়া, রাসেল ও আবুল হোসেন।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকিরের মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী ছিলেন আব্দুল আলিম। গত ৮ মে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম সরকার বিজয়ী হন। বিজয়ী হওয়ার পর বিজয়ী চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সরকারের কর্মী চান মিয়ার নেতৃত্বে তার গ্রুপের রাসেল, আবুল হোসেন, বাবলু, আব্দুল মান্নান, সাদ্দাম ও খালেক মেম্বর মিলে আব্দুল আলীমের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর আহত করে। আহত আলিমকে উদ্ধার করে বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাকে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা। সেখান থেকে গতকাল ভোর রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকির বলেন,‘নিহত আব্দুল আলীম আমার চাচা। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার চাই।’ এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় এমপির সমর্থনপুষ্ট বিজয়ী দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম সরকারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
বেলকুচি থানার ওসি মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, নির্বাচনের রাতে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারিতে আহত আব্দুল আলীম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা