ভারতের দয়ায় নয় জনগণের শক্তিতে আ’লীগ টিকে আছে : ওবায়দুল কাদের

ভারতের দয়ায় নয়, জনগণের শক্তিতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে আছে বলে দাবি করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বললেন দেশের জনগণকে নয়, পার্শ্ববর্তী দেশকে খুশি করে ক্ষমতায় টিকে আছে আওয়ামী লীগ। গয়েশ্বর বাবুকে বলবো, ভারত আমাদের প্রতিবেশী পরীক্ষিত বন্ধু। নির্বাচনের সময় তারা কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। ভারতকে খুশি করে নয়, ভারতের দয়ায় নয়, জনগণের শক্তিতেই আমরা ক্ষমতায় টিকে আছি। পঁচাত্তরের পর কত বছর ক্ষমতায় ছিলাম না, তখন কি ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল?
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের এক যৌথ সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ ও ডা: দীপু মনিসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সহ সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। যৌথসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, আগামী ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলো।

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করতে পারে তারা দেশের বিরুদ্ধে অনেক কিছুই করতে পারে। আন্দোলন ও নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থতার পর বিএনপি আবারো আন্দোলনের নামে দেশে বিশৃখলা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তিনি আরো বলেন, বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা ও রক্তপাত। কাজেই বিএনপির কাছে গোটা রাজধানীকে যদি তাদের ওপর ছেড়ে দিই তাহলে জনগণের জানমাল সুরক্ষায় সমস্যা হয়। সেজন্য আমাদের মাঠে থাকতে হয়। কোনো পাল্টাপাল্টি নয়, জনগণের সুরক্ষার জন্যই আওয়ামী লীগকে মাঠে থাকতে হয়। সমাবেশ থেকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্যটাই বিএনপির রাজনীতি। তাই আমাদের সজাগ থাকতে হবে। বিএনপি সুযোগ পেলেই ফনা তুলে রাষ্ট্র ও জানমালের ক্ষতি করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কারা পালায় আবারো তা প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি পালায়, তাদের নেতা রাজনীতি করবে না এমন মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে গেছে, দেশে ফেরার সাহস নেই। বিএনপি চলে রিমোট কন্ট্রোলে। এই রিমোট কন্ট্রোলে আন্দোলন সফল হয় না। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভোটারদের ভয় পায় বলেই বিএনপি নির্বাচনে আসে না। নির্বাচন নিয়ে তাদের দাবির কোনো যৌক্তিকতা নেই। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা কোনো সংঘাতে জড়াব না।

বিএনপি আমলে কোন স্থানীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে, কোনো ধরনের ক্যাজুয়্যালিটি ছাড়া? এমন প্রশ্ন রেখে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে, কোনো ধরনের সঙ্ঘাত হয়নি। এর কৃতিত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, এবারে যে ভোট পড়ছে খ্বু ভালো ভোট পড়েছে বলব না, মোটামুটি পড়েছে। এই নির্বাচনে বিএনপির ভোট বর্জনকে প্রত্যাখ্যান করে দলটির অনেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। ভুল আর ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে থাকা বিএনপি কোনো কিছু আদায় করতে পারবে না। মুখে ফুলঝুরি ছড়ালেও ভেতরে তারা হতাশ। যত দিন তারা ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফিরে না আসবে তত দিন তারা জনবিচ্ছিন্ন থাকবে।
এ সময় আওয়ামী লীগ সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সফল বলে উল্লেখ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে যুদ্ধংদেহী ইসরাইল ফিলিস্তিনের রাফায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই ইসরাইল সারাবিশ্বের জন্য আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।