০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ডেঙ্গুতে মারা গেল ১৯ জন নতুন আক্রান্ত ৩০৩৩

-

ডেঙ্গুতে মারা গেল আরো ১৯ জন এবং সারা দেশে আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৩৩ জন। গত কয়েক দিন ধরে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারের নিচে নামছে না। চলতি সেপ্টেম্বরের ২৪ দিন ৮ ঘণ্টায় (গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে রেকর্ড পরিমাণ ৬৬ হাজার ৯৫০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। দৈনিক গড়ে ২ হাজার ৭৫২ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩৩৫ জন এবং দৈনিক গড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জন। চলতি মাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুতে পূর্বের একই সময়ের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড হতে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, মশক নিধন অভিযান জোরদার করতে পারলে এত মানুষের মৃত্যু হতো না এমনকি এত মানুষ আক্রান্তও হতো না।
এককভাবে রাজধানীতে বেশি ডেঙ্গু রোগী থাকলেও ঢাকার বাইরের রোগী বেড়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো সময় ঢাকার বাইরে দ্বিগুণেরও বেশি ভর্তি হচ্ছে প্রতিদিন। সেপ্টেম্বর মাসে দেশের সর্বত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়ে আসছে। ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশার বংশবৃদ্ধির পরিবেশও ইদানীং পরিবর্তন হয়ে গেছে। ফলে এই মশাটি নোংরা পানিতেও ডিম পাড়তে পারে এবং তা থেকে লার্ভা হচ্ছে। আগে কেবল পরিষ্কার পানিতে ডিম থেকে লার্ভা পরিস্ফুটন হতো। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশারের সাম্প্রতিক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। ঢাকার বাইরে এডিস মশা উৎপাদনের পরিবেশ থাকায় সেখানে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুধুই বাড়ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, ঢাকার ঘনবসতি ও লাগালাগি দালান-কোঠা গড়ে ওঠায় ঢাকায় যেমন এডিস মশার ঘনত্ব বেশি। আবার ঢাকা রাজধানী বলে চিকিৎসার সব সুবিধা এখানেই রয়েছে। ফলে মানুষ সীমাবদ্ধতার মধ্যেও চিকিৎসা নিতে পারছে। বর্তমানে গ্রামে ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ায় সেখানে কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেই। তা ছাড়া রোগটি সম্বন্ধে গ্রামের মানুষের পর্যাপ্ত সচেতনতা নেই। কখন হাসপাতালে যেতে হবে, আক্রান্ত হলেও কতক্ষণ বাড়িতে থাকা যাবে, কি চিকিৎসা নেবে সে সম্বন্ধে পর্যাপ্ত জ্ঞান তাদের নেই। ফলে সেখানকার ডেঙ্গু রোগাক্রান্ত মানুষ সত্যি অসহায়ত্বের মধ্যেই দিন যাপন করে থাকে।
গতকাল যে তিন হাজার ৩৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ২৩২ জন এবং ঢাকায় ভর্তি হয়েছে ৮০১ জন। অন্য দিকে যে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ঢাকায় ৯ জন এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার ৭৫৮ জন এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ৯২৮ জন।
ডেঙ্গুতে যত মারা যাচ্ছে এর ৭২.৮১ শতাংশ ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়েছে। অপর দিকে এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোমে মারা গেছে ১৫.১৭ শতাংশ মানুষ। এই এক্সপান্ডেড শক সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির দুই বা ততোধিক অঙ্গ আকর্যকর হয়ে পড়ে। সব সুবিধা রয়েছে এমন হাসপাতাল না হলে এসব রোগীদের বাঁচানো যায় না।
চিকিৎসকরা বলছেন, সবচেয়ে বড় কথা দেশে ডেঙ্গুর ব্যাপারে যে ধরনের প্রচারণার প্রয়োজন তা যথাযথভাবে হচ্ছে না। সব মানুষের বোধগম্য করে প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

 


আরো সংবাদ



premium cement