সেই পুরনো প্রতিশ্রুতি র্যাবের
‘এবার ডেড লাইন চাই’- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সেই পুরনো প্রতিশ্রুতি দিলো তদন্তকারী সংস্থা সেই পুরনো প্রতিশ্রুতি র্যাব। দশ বছরেও মামলার তদন্ত শেষ করতে পারেনি র্যাব। আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে এরই মধ্যে ৮৫ বার সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। তারপরও র্যাব বলছে, মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং দ্রুতই প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হবে।
রাজধানীর কাওরান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে গতকাল শুক্রবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে র্যাব এর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, যেকোনো মামলার তদন্ত সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে করে র্যাব। সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৬০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে যেসব তথ্য-উপাত্ত ও আলামত পরীক্ষা নিরীক্ষা করা দরকার র্যাব তা করছে। আশা করছি, দ্রুত তদন্ত শেষ করা যাবে। র্যাব সবসময় চেষ্টা করে তদন্তে যেন নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত না হয়।
তিনি বলেন, সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত ভার গ্রহণ করেছি দুই মাস পর। আমরা রিমান্ডে এনে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সরকার এতটাই গুরুত্ব দিয়েছে এ মামলার ক্ষেত্রে যে তথ্য-উপাত্ত তা প্রমাণের জন্য আলামত পরীক্ষা করতে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। আলামত পরীক্ষার প্রতিবেদন পেতে সময় লেগেছে। আমরা মাত্র কিছু দিন আগে পেয়েছি, তদন্ত চলমান।
সাগর-রুনি হত্যার ১০ বছর হচ্ছে, আর কত দেরি হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব জানতে চাইলে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, র্যাব এ মামলা তদন্ত করছে আদালতের নির্দেশে। আমরা সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি। এমন চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত করার মতো সক্ষমতা কি র্যাবের নেই, এমন প্রশ্নের উত্তরে কমান্ডার মঈন বলেন, র্যাব অনেক চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত করেছে। র্যাব কখনো নিজে থেকে মামলার তদন্ত করে না। আদালত দিলেই কেবল তদন্ত করে। আমরা যে আজ একটি অভিযান পরিচালনা করেছি এটারও আলামত ও আসামি থানায় সোপর্দ করা হবে। সুতরাং নিয়মতান্ত্রিক উপায়েই র্যাব সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত করছে।
বাদিপক্ষ মামলার তদন্তে র্যাবের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে এমন বক্তব্যও আসছে, এ প্রসঙ্গে র্যাব গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, আমরা এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিটি ডেটে আদালতকে অবহিত করছি। আমরা এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো অভিযোগ বা বক্তব্য পাইনি। আদালতও আমাদের বলেনি। এখানে তদন্ত নিয়ে খারাপ লাগার কিছু নেই। তিনি বলেন, আমরা চাই এটি দ্রুত শেষ হোক। নিরপরাধ কেউ সাজা না পাক।
সরকারের চেয়ে হত্যাকারীরা শক্তিশালী, এটা আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন বারবার পেছানো হয়েছে। তদন্তের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি কী করছেন, সেটা আমরা জানি না। প্রতি বছর আমাদের এই দিবস পালন করতে লজ্জা হয়। আমরা আর এই দিবসটি পালন করতে চাই না। আমরা ১১ ফেব্রুয়ারি আসার আগেই সাগর-রুনি হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রাঙ্গণে গতকাল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, আমরা আগেও প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি, তাতেও কোনো কাজ হয়নি। আমাদের দাবি ও স্মারকলিপি এবার রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবারো দেবো। আমরা তাদের একটি ডেডলাইন দিতে বলব, আসলে কত দিনের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারবেন।
সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, সাংবাদিক পেশার দু’জন মানুষকে এক দশক আগে হত্যা করা হয়েছে। তাদের হত্যাকারীদের প্রশাসন এখনো গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ জানাচ্ছি। আদালত যদি এ বিচারের দিকে সুদৃষ্টি দেয় তবে সারা দেশের মানুষের প্রত্যাশার এ বিচার দ্রুত শেষ হবে।
ডিইউজে (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলাম খান তপু বলেন, ২০১২ সালের এ দিনে সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি খুন হন। ওই বছর আমাদের প্রতিবাদের বছর ছিল। সারা দেশে দলমত নির্বিশেষে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল সেটির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ডিআরইউ। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা সেই বিচার পাইনি। দফায় দফায় তদন্ত প্রতিবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। হয়তো কয়েক দিন পরে সেটা ১০০ বার পার হয়ে যাবে। সেটা না করে দ্রুত আমরা বিচার চাই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা