৫৯ কোটি টাকায় পরামর্শক হচ্ছে কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান
- সৈয়দ সামসুজ্জামান নীপু
- ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০, আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:০০
কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এ কাজে নিয়োগ পেতে যাচ্ছে যৌথভাবে কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান উজো সানজিন। এ জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে ৫৯ কোটি ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।
এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে সরকারি অর্থায়নে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ৩৭০৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দরে রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর অনুমোদিত হয়।
প্রকল্পের জন্য পরামর্শক সেবার ক্রয় কাজটি ডিপিপিতে প্যাকেজ নম্বর ১ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছে যার ক্রয়পদ্ধতি কিউসিবিএস (আন্তর্জাতিক) ও ক্রয়কারী হচ্ছে বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ (সিএএবি)। ডিপিপিতে এ কাজের জন্য ৪৫ কোটি ৪২ লাখ ২০ হাজার টাকার সংস্থান আছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এডিপিতে ১০৪ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ রয়েছে, যা থেকে এ ক্রয় কাজের ব্যয় নির্বাহ করা হবে বলে সূত্র জানায়।
বিমান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের বাস্তবায়ন তদারকির জন্য পরামর্শক নিয়োগের লক্ষ্যে কিউসিবিএস (আন্তর্জাতিক) পদ্ধতি অনুসরণে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি এক্সপ্রেশন অব ইন্টারয়েস্ট (ইওআই) আহ্বান করা হয়। ইওআই বিজ্ঞপ্তি সিহপিটিইউর ওয়েবসাইটসহ চারটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহপত্র দাখিল করে।
সূত্র জানায়,কারিগরি সাবকমিটি ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি প্রস্তাব পর্যালোচনা করে চারটি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করে। এর মধ্যে কোরিয়ার জয়েন্ট ভেঞ্চার অব উজো সানজিন ৮০.৪৫ এবং জার্মানির এয়ারপোর্ট কনসাল্টিং পার্টনার্স জিএমবিএইচ ৮১.৩৪ স্কোর করে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। প্রতিষ্ঠান দু’টি ২০২১ সালের ১ মার্চ আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করে। জার্মানির এয়ারপোর্ট কনসাল্টিং পার্টনার্স জিএমবিএইচ তাদের প্রস্তাবে বাংলাদেশী টাকায় ৯৮ কোটি ৭৫ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯৪ টাকা দর উল্লেখ করে। অন্যদিকে কোরিয়ার উজো সানজিন ৫৪ কোটি ৫৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮০ টাকা উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়।
জানা গেছে, রানওয়ের দৈর্ঘ্য মহেশখালী চ্যানেলের দিকে তিন হাজার ফুট সম্প্রসারণ কাজ তদারকির জন্য পরামর্শক সেবা ক্রয়ের জন্য প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় রানওয়ের দৈর্ঘ্য তিন হাজার ফুটের পরিবর্তে এক হাজার ৭০০ ফুট সম্প্রসারণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরামর্শক সেবার ব্যাপ্তি কমে আসে।
সূত্র জানায়, সে পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করে মূল্য হ্রাস করে সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান উজো সানজিন-এর কাছ থেকে সংশোধিত আর্থিক প্রস্তাব চাওয়া হলে তারা পরামর্শকের জন-মাস ১১১৬ এর স্থলে ৯২৪ জন-মাস (বৈদেশিক-১৫০, স্থানীয়-৭৭৪) নির্ণয় করে এবং যানবাহন খাতে পুনর্ভরণযোগ্য ব্যয়ের পরিমাণ কমিয়ে আয়কর ও ভ্যাট বাদে ২৮ লাখ ৪৯ হাজার ৮১০ মার্কিন ডলার এবং ১৭ কোটি ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৪০০ টাকা সমপরিমাণ ৪১ কোটি ৩০ লাখ ছয় হাজার ২৮৮ টাকার সংশোধিত আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করে।
সংশোধিত আর্থিক প্রস্তাবের উপর মূল্যায়ন কমিটির আলোচনায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৪১ কোটি ৩০ লাখ ছয় হাজার ২৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া ২০ শতাংশ ট্যাক্স ১০ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৫৭২ টাকা এবং ভ্যাট ১৫ শতাংশ হিসেবে সাত কোটি ৭৪ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৯ টাকা মিলে সর্বমোট ৫৯ কোটি ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার ৫৩৯ টাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন এবং এভিয়েশন খাতে রিজিওনাল হাব হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরসহ দেশের বিমানবন্দরগুলোর আধুনিকায়নের কাজ চলছে। কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রতিদিন গড়ে ১০টি যাত্রীবাহী ও টি কার্গো বিমান উড্ডন-অবতরণ করছে। পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটন শিল্প বিকাশে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকাশপথে যাতায়াত সুবিধাসহ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় প্রকৃতিক দুর্যোগের সময় দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দেন এবং তিনি ২০১৭ সালে এ বিমানবন্দরে ই-৭৩৭-৮০০ বিমান উড্ডয়ন-আবতরণ উদ্বোধনের সময় বিমানবন্দরে পূর্ণ লোডে সুপরিসর বিমান চলাচল নিশ্চিত করাসহ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য রানওয়ের দৈর্ঘ্য ১২ হাজার ফুটে উন্নীত করতে মৌখিক নির্দেশনা দেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা