এবার ব্যাবের নজরদারিতে নিউজ পোর্টাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম
রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার, গুজব, উসকানিমূলক প্রচারণা রোধ ; সরকারের দুর্নীতি সংক্রান্ত ‘মিথ্যা সংবাদ’ বন্ধ করা ; ১২১ কোটি ৪০ লাখ টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা ; প্রকল্প এলাকা রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের ৪৩টি থানা- হামিদ সরকার
- ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নজরদারিতে আনা হচ্ছে দেশী-বিদেশী সব অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ফেসবুক আইডি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ডিভাইস বসানোর মাধ্যমে এসব নজরদারিতে আনা হবে। র্যাব সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হবে সেল ও পাঁচটি মনিটরিং টিম। রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন অপপ্রচার, গুজব, উসকানিমূলক মিথ্যা প্রচারণা, বিভ্রান্তি ছড়ানো রোধেই এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যেসব পেইজ ও আইডি বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালায় তার ব্যাপারে রিপোর্ট করা এবং সেগুলো বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া হবে। চার মাসে এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১২১ কোটি ৩৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকার প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
প্রস্তাবনা ও মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় যেসব নিউজ পোর্টাল লিপ্ত রয়েছে সেগুলোকে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। নজরদারির মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরের, প্রতিষ্ঠানের, দফতরের এবং সরকারের দুর্নীতি সংক্রান্ত মিথ্যা সংবাদ বন্ধ করা হবে। এসব গুজব ও মিথ্যা প্রচারণার কারণে উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র, বিদেশী প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশী জনগণের মাঝে দেশ সম্পর্কে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তা বন্ধ করা। পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সঠিক জনমত তৈরি করা এবং জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে বাঁচাতে সরকারের ইতিবাচক দিকগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে তুলে ধরা। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ফোর্স বা র্যাব।
প্রকল্প এলাকা হলো রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের ৪৩টি থানা। এর মধ্যে আছে মহাখালী, বনানী, গুলশান, বারিধারা, উত্তরা, আশুলিয়া, বিমানবন্দর, তুরাগ থানা, বাড্ডা, খিলক্ষেত, উত্তরখান, দক্ষিণখান, পোড়াবাড়ি, ধানমন্ডি, নিউ মার্কেট, হাজারীবাগ, কলাবাগান, শেরেবাংলানগর, মোহাম্মদপুর, আদাবর, তেজগাঁও, খিলগাঁও, রামপুরা, রমনা, শাহবাগ, সবুজবাগ, মুগদা, মতিঝিল, পল্টন, শাহজাহানপুর, মিরপুর, দারুস সালাম, শাহআলী, কাফরুল, ক্যান্টনমেন্ট, ভাসানটেক, পল্লবী, রূপনগর, সাভার, আরিচা ও ধামরাই থানা।
জানা গেছে, র্যাবের পাঁচটি দল বিভক্ত হয়ে প্রকল্পের এই কাজ সম্পাদন করবে। তাদের কাজ হবে জাতীয় ও বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ফেসবুক আইডি ও পেইজসমূহের রিয়েল টাইম মনিটরিং করা। পাশাপাশি গত ১০ বছরে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের তথ্যাদি বিভিন্ন পেইজের মাধ্যমে প্রচার করা। পাঁচটি দল হলোÑ ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেট্রোলিং দল, প্রচারণা দল, কাউন্টার প্রোপাগাণ্ডা দল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের শনাক্তকরণ দল, বিশেষজ্ঞ দল। তবে পেট্রোলিং দলের কাজ হলো, শ্রমিক আন্দোলন। যেমন-গার্মেন্ট শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক সংক্রান্ত উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড, রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার যেমন বিভিন্ন সেক্টরের বা সরকারের দুর্নীতি সংক্রান্ত মিথ্যা সংবাদ, দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত, উগ্রবাদ এবং ধর্মীয় উসকানিমূলক প্রচারণা সংক্রান্ত, রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গুজব ও মিথ্যা প্রচারণা সংক্রান্ত এবং সব অনলাইনভিত্তিক মিডিয়ার পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংবলিত ডাটাবেজ তৈরি করা।
কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্দোলনকে পুঁজি করে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক তথ্য প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। একটি বিশেষ গোষ্ঠীর অনুগত থাকা এই স্বার্থান্বেষী মহল দেশ ও বিদেশ থেকে সমান তালে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। এ ছাড়া এই গোষ্ঠীর সদস্যরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন, সরকারি, বেসরকারি দফতরগুলোতে মিথ্যা তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে কোণঠাসা করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি বিশ্লেষণে এ ধারণা করা হচ্ছে রাষ্ট্রের স্পর্শকাতর কাজগুলোর সফল বাস্তবায়নের বিপরীতে বিশেষ করে রাষ্ট্রকে বিশ্বদরবারে হেয়প্রতিপন্ন করতে বড় ধরনের কোনো ষড়যন্ত্র হতে পারে।
প্রস্তাবনার তথ্যানুযায়ী, দেশের গত ১০ বছরের উন্নয়ন ও গঠনমূলক কাজের ইতিবাচক দিকগুলো বিভিন্ন পেইজের এবং পোস্টের মাধ্যমে প্রচারণায় রাষ্ট্রের ইমেজ অক্ষুণœ রাখা হবে। রাষ্ট্রবিরোধী প্রোপাগান্ডা যেমন বিভিন্ন সেক্টরের, প্রতিষ্ঠানের, দফতরের এবং সরকারের দুর্নীতি সংক্রান্ত মিথ্যা সংবাদ বন্ধ করা হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা তথা পেট্রলবোমায় আহত-নিহত ব্যক্তিদের পারিবারিক সাক্ষাৎকার নিয়ে তা প্রচারণার ব্যবস্থা করা। একই সাথে এসব পরিবারকে সরকার থেকে কী কী সাহায্য করা হয়েছে তা প্রচার মাধ্যমে তুলে ধরে সরকারের প্রতি আস্থার পরিবেশ বজায় রাখা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাষ্ট্রবিরোধী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো চিহ্নিত করা গেলেও তাদের ব্যক্তি পরিচয় নিরূপণ করা অনেক সময় সম্ভব হয় না। রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তিকে প্রতিহত করার জন্য র্যাব ফোর্সেস থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণ প্রকল্প পরিকল্পনা দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে গুজব ছড়ানো ও অপপ্রচার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হবে। দেশের ইমেজও বৃদ্ধি পাবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা