২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ শাবান ১৪৪৬
`

বন্দিবিনিময়ের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের শেষ ধাপ সম্পন্ন

-


অবশেষে সম্পন্ন হলো ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তির প্রথম পর্যায়ের শেষ ধাপ। এই ধাপে গতকাল শনিবার হামাস ছয়জন ইসরাইলি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। যার মধ্যে পাঁচজনকে ইতোমধ্যে রেড ক্রসের মাধ্যমে ইসরাইলি বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। খবর : আলজাজিরা, রয়টার্স, মিডল ইস্ট মনিটর ও এপি।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে যে, শনিবার হামাসের হাতে বন্দী থাকা পাঁচ ইসরাইলি মুক্তি পেয়েছে। তারা হলেন ওমের ওয়েনকার্ট, ওমের শেম তোভ, এলিয়া কোহেন, তাল শোহাম ও আভেরা মেংগিস্তু। আর হিসাম আল-সায়েদ নামের ষষ্ঠ বন্দীকে মুক্তি দেয়ার পর রেড ক্রসের কাছে স্থানান্তর করেছে হামাস।
এ ছাড়া এদের মুক্তির বিনিময়ে এদিন ৬০২ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। যার মধ্যে ৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। এদিকে হস্তান্তরের কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরাইলি বাহিনী দখলকৃত পশ্চিমতীরে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দীর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে বলে আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে।
ফিলিস্তিনি বন্দীদের মিডিয়া অফিসের (এএসআরএ) খবর অনুসারে, ইসরাইলি সেনারা ওই বন্দীদের পরিবারকে হুমকি দিয়েছে এবং কোনো উদযাপন অনুষ্ঠান না করার জন্য বলেছে। অন্য দিকে শনিবার সকালে পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বাহিনী দুই ফিলিস্তিনি শিশুকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বার্তা সংস্থা ওয়াফা।

নিহত ১২ বছর বয়সী আয়মান নাসের আল-হায়মুনি হেবরনের বাসিন্দা, ১৩ বছর বয়সী রিমাস আল-আমুরি জেনিনের। এর আগে নির্ধারিত সময়ের একদিন পর হামাস শিরি বিবাসের লাশ হস্তান্তর করেছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি এ বন্দীর পরিবার। গত বৃহস্পতিবার হামাস যে চারটি লাশ হস্তান্তর করে, তার মধ্যে শিরির লাশ ছিল না। এ নিয়ে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলে হামাস নিজেদের ভুল স্বীকার করে নেয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সব বন্দীকে মুক্তির প্রস্তাব : গাজা উপত্যকায় আটক সব বন্দীকে একসাথে মুক্তি দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে হামাস। এর বিনিময়ে তারা চায় যুদ্ধের অবসান ও গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার। হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম এক বিবৃতিতে এই প্রস্তাবের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। হামাসের মুখপাত্র কাসেম বলেন, আমরা দ্বিতীয় ধাপে (যুদ্ধ বিরতির) যেতে প্রস্তুত। যেখানে একটি চুক্তির ভিত্তিতে সব বন্দীকে একসাথে মুক্তি দেয়া হবে। এই চুক্তির শর্ত হবে স্থায়ী যুদ্ধ বিরতি এবং গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার।
তিনি আরো বলেছেন, গাজা থেকে হামাসকে সরিয়ে দেয়ার ইসরাইলের শর্ত একটি হাস্যকর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। গাজা থেকে প্রতিরোধ বাহিনীকে প্রত্যাহার বা নিরস্ত্র করা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এর আগে হামাস গতকাল শনিবার মুক্তি দেয়া বন্দীর সংখ্যা তিনজনের পরিবর্তে ছয়জনে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার হামাস নেতা খলিল আল-হায়া এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। কাসেম বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে এবং চুক্তির সব শর্ত বাস্তবায়নে আমাদের আন্তরিকতা প্রমাণ করতে বন্দীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
এই প্রস্তাব এসেছে এমন এক সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ধাপে ধাপে বন্দী মুক্তির প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন। গাজায় আটক বন্দীদের পরিবারও সবাইকে একসাথে মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
পশ্চিমতীরে ২ শিশু নিহত : এদিকে ওয়াফার বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানায়, পশ্চিমতীরের হেবরনের দক্ষিণে আত্মীয়দের সাথে দেখা করতে যাওয়ার সময় ইসরাইলি বাহিনী আল-হায়মুনিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা সেখানেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপর দিকে ডিফেন্স ফর চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল-ফিলিস্তিন (ডিসিআইপি) জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে জেনিনে নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় আল-আমুরি নামে অপর এক শিশুকে গুলি করা হয়। আল-আমুরির পেটে গুলি লাগে। তাকেও দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তা-ও বাঁচানো যায়নি।
এক ইসরাইলি সেনা সাঁজোয়া গাড়ি থেকে কমপক্ষে পাঁচটি গুলি চালায়, গুলিগুলো শিশুটির পিঠে লাগে। ইসরায়েলি সেনারা হুট করে কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই শিশুটির ওপর এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ডিসিআইপির প্রতিনিধি আয়েদ আবু ইকতাইশের। ইসরাইলি সেনাবাহিনী অধিকৃত পশ্চিমতীরের নাবলুস, তুলকারেম, জেনিন ও নাবলুসে শুক্রবার রাতভর ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে।
ওয়াফা ও স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, ইসরায়েলি সেনারা অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমের কাফর আকাব, নাবলুস, এল-বিরেহ, জেরিকো, বেথেলহেম, রামাল্লা ও দেইর আমমার শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালায়। এর বাইরে নাবলুস শহরের পশ্চিমে জাওয়াতা শহর থেকে তারা এক ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতারও করেছে।

লাশ হস্তান্তরে দ্বৈত নীতি : গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) বিরুদ্ধে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের লাশ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ‘দ্বৈত নীতি’ গ্রহণের অভিযোগ এনেছে। আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল থাওয়াবতা এক্সে-এ বলেছেন, যদিও রেড ক্রস ইসরাইলি বন্দীদের লাশ গ্রহণকালে আনুষ্ঠানিকতা পালন করে, কিন্তু ফিলিস্তিনি শহীদদের লাশ অত্যন্ত তাচ্ছিল্য করে নীল ব্যাগে করে ট্রাকের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়। যেখানে মানবিক মর্যাদার সবচেয়ে মৌলিক উপাদান নেই। এটি স্পষ্ট বৈষম্যমূলক দ্বৈত নীতির প্রতিফলন, ন্যায়বিচার ও সততা অর্জনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ। এই অভিযোগের বিষয়ে রেড ক্রসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দাউদকান্দিতে স্কুলশিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ নেত্রকোনায় ফিরছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ভারতের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান চট্টগ্রামে পঞ্চম বিয়ে করায় চতুর্থ স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন! নাইজেরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ কম্বোডিয়ায় গ্রেনেড বিস্ফোরণে ২ শিশু নিহত মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমানে হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী আমতলীতে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বাড়িতে ডাকাতি ৫ দফা দাবিতে চমেক হাসপাতালে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি এস আলমের ৮ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা অবরুদ্ধের আদেশ চীন ও ভারতের ওপর পাল্টা শুল্ক চাপানোর ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প

সকল