ভারতকে বাংলাদেশের একসাথে থাকার পরামর্শ উপেন্দ্র দ্বিবেদীর
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৩০
ভারতের কাছে বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি বলেছেন, আমাদের একসাথে থাকতে হবে। এমন কোনো কিছু করা উচিত না, যাতে আমাদের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দুসহ একাধিক ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে উপেন্দ্র দ্বিবেদী এ কথা বলেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্তে পাঁচটি জায়গায় ভারতের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে রোববার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের পরদিনই দেশটির সেনাপ্রধান এমন কথা বললেন। নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে এরইমধ্যে তলব করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ইন্ডিয়া টুডের এক সাংবাদিক চলমান বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধানের বক্তব্য জানতে চান। উত্তরে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী। দেশটির খুব ছোট্ট একটি অংশ ছাড়া পুরো সীমান্ত জুড়েই রয়েছে ভারত। আমাদের সবসময় একসাথেই থাকতে হবে। একে অপরকে বুঝতেও হবে। এমন কোনো কিছু করা উচিত না, যাতে আমাদের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে তার। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের সময় বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সাথে কথা হয়েছিল। সবশেষ বাংলাদেশ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাথে গত বছরের ২৪ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সে যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দু’দেশের সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে যখন একটি নির্বাচিত সরকার আসবে, তখন আমাদের এ নিয়ে কথা বলা উচিত। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সাথে সামরিক সম্পর্ক ভালো এবং সঠিক পথে রয়েছে। দু’দেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্ককে তিনি ‘ওয়েল অ্যান্ড পারফেক্ট’ বলে মন্তব্য করেন।
ভারত-বাংলাদেশের সেনার যৌথ মহড়া কবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামরিক ক্ষেত্রে দু’পক্ষের মধ্যে যে সমন্বয় ছিল, তা সে রকমই আছে। একমাত্র যে যৌথ মহড়া হতো, সেটা বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছুটা সময়ের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। যখন পরিস্থিতির উন্নতি হবে, তখন সেই যৌথ মহড়া চালানো হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নেয়ার পর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কূটনৈতিকভাবে দু’পক্ষের মধ্যে চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, ‘আমাদের কোনো পক্ষেরই আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমার সে দেশের সেনাপ্রধানের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ আছে। বস্তুত বাংলাদেশে পালাবদলের পর আমরা নিজেদের মধ্যে সব সময় যোগাযোগ রেখে চলছি। দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে অপসারিত হয়ে বাংলাদেশের একটি মিলিটারি এয়ারক্র্যাফটে করে দিল্লির কাছে হিন্ডন এয়ারবেসে এসে অবতরণ করেন। তখন থেকে আজ পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে তিনি ভারতেই রয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেশ ছাড়ার এই প্রক্রিয়াটা দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় রেখেই সম্পন্ন হয়েছিল।
জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বাংলাদেশে তার কাউন্টারপার্টের দেয়া একটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে আরো বলেন, ‘উনি যেমন বলেছেন ভারত তাদের জন্য স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, কথাটা আমাদের দিক থেকেও সত্যি। আমরা পরস্পরের প্রতিবেশী, আমাদের একসাথেই থাকতে হবে ও পরস্পরকে বুঝতে হবে যেকোনো ধরনের শত্রুতা আমাদের উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর হবে।’
উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, ‘যদি আপনারা (দুই দেশের) সম্পর্কের কথা বলেন, সেটা ওখানে নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত সম্ভব নয়। তবে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক একদম ঠিক আছে, সব মসৃণভাবে চলছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা