১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১০ রজব ১৪৪৬
`

নিয়ন্ত্রণে আসছে না মাছ মুরগি ও চালের বাজার

-

শীত মৌসুমের সাথে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। নিম্নমুখী হওয়ার কারণে ক্রেতাদের মধ্যে সন্তুষ্টির লক্ষ্য করা গেছে। তবে নিয়ন্ত্রণে আসছে না চালের দাম। একই সাথে মুরগি ও মাছের দামে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি আলুর দাম কমেছে ১০ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন বাজারে শীতকালীন সব সবজির দাম ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। তবে ডিমের দাম স্থিতিশীল আর চাল, মুরগি ও মাছের দাম আগের মতোই ঊর্ধ্বগতি।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার গতকাল ঘুরে ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। গতকাল ফুলকপি, বাঁধাকপি ও টমেটোর দাম নিম্নমুখী লক্ষ্য করা গেছে। বাকি সবজিগুলো আগের মতোই কম দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল প্রতিকেজি গোল ও লম্বা বেগুন আগের মতো ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি মুলা ২০ টাকা, পেঁপে ও শালগম প্রতিকেজি ছিল ৩০ টাকা। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১৫-৩০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৪০-৫০ টাকা, কলার প্রতি হালি ৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ৬০-৮০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, শসা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। মিরপুর-৬ কাঁচাবাজারে গতকাল প্রতিকেজি করলা, পটোল, ঝিঙা ও ধুন্দল ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্রতিকেজি চিচিঙা ৬০ টাকা, গাজর ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক কেজি টমেটোর দাম ছিল ৫০-৬০ টাকা। প্রতি আঁটি লালশাক, পালংশাক, কলমিশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি হয়েছে।
গতকাল ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতিকেজি আলুতে দাম কমেছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি আলুর দাম ছিল ৫৫-৬০ টাকা। গতকাল প্রতিকেজি আলু ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মিরপুর ৬ নম্বর কাঁচাবাজারে ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন শীতের সবজির সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। এতে দাম ও নিয়ন্ত্রণ চলে এসেছে। বাজারে এখন যথেষ্ট পরিমাণে আলু পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীর বাজারগুলোতে আলু আসছে। এ জন্য অব্যাহতভাবে দাম কমছে। এদিকে গতকাল প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারতীয় নতুন পেঁয়াজ প্রতিকেজির দাম ছিল ৫৫-৬০ টাকা। এ ছাড়া দেশি রসুন ২৫০ ও ভারতীয় রসুন প্রতিকেজির দাম ছিল ২২০ টাকা, চীনা আদা প্রতিকেজির দাম ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। গতকাল খোলা সয়াবিন তেল প্রতিকেজির দাম ছিল ১৮৫ টাকা। খোলা পাম তেল ও সুপার প্রতিকেজি ১৭৫ টাকা, বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন ৮৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও গরু গোশতের দাম। প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৪০ টাকা দরে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২০০ থেকে ২১০ টাকা। প্রতিকেজি গরুর গোশতের দাম ছিল ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা। প্রতিকেজি খাসির, গোশতের ছিল ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা। এদিকে গতকাল আকারভেদে প্রতিকেজি পাবদা মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, ছোট রুই ২৫০ টাকা, ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের রুই ৪৫০ টাকা, টেংরা ৬৫০ টাকা, চাষের শিং ৪৫০ টাকা, পাঙাশ আকারভেদে প্রতিকেজি দাম ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের মতোই চড়া দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। গতকাল প্রতিকেজি নাজিরশাইলের দাম ছিল ৮০-৯০ টাকা, মানভেদে মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৬০-৬৫ টাকায়, মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) ৫৫-৫৮ টাকা, পুরোনো আটাশ ৬৫ টাকা, পাইজাম ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৮৫ টাকা, বাসমতী ৯৪-৯৮ টাকা, পোলাও চাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও আমন ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
কাওরান বাজারের চাল ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বাজারভেদে চালের দাম ৫-৬ টাকা কমবেশি হয়। এর কারণ সরবরাহ ও মজুত। কারো কাছে পুরোনো চাল থাকলে সে আগের দামে বিক্রি করতে পারে। তবে চালের দামের ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। আনিস নামে এক ক্রেতা বলেন, ৭০ টাকার নিচে ভালো কোনো চাল নেই। ভরা মৌসুমে চালের দাম এত বেশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। চালের দাম কেন বাড়ছে সরকারের উচিত কারণ খুঁজে বের করা। সিন্ডিকেট করে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নাজমুল নামের আরেক ক্রেতা বলেন, চালের ভরা মৌসুমি দামের যে পরিস্থিতি, কিছুদিন পর ১০০ টাকায় চাল পাওয়া যাবে না। চালের বাজারে কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।


আরো সংবাদ



premium cement