হজ ব্যবস্থাপনা সুন্দর করতে সব ধরনের চেষ্টা করছে সরকার
- খালিদ সাইফুল্লাহ
- ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৮
হজ ব্যবস্থাপনা সুন্দর করতে সরকার সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, আগামী বছরের হজে যাতে হাজীরা সর্বোচ্চ সেবা পান সেটি নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। এ ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয় বেসরকারি এজেন্সিগুলোর সাথে সমন্বয় করে সেবা নিশ্চিত করবে বলেও তিনি জানান।
গতকাল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে নয়া দিগন্তকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানান। এক প্রশ্নের জবাবে ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, এজেন্সি প্রতি হজযাত্রীর সর্বনি¤œ কোটা ঠিক করে দিয়েছে সৌদি সরকার। এবার সব দেশের জন্য দুই হাজার হজযাত্রীর কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারত এটি মেনে নিয়ে সে অনুযায়ী কাজ করছে। কিন্তু আমরা এটি কমাতে প্রথম থেকেই কাজ করছি। প্রথমে আবেদন করে এটি অর্ধেক অর্থাৎ এক হাজারে নামিয়ে আনি। পরে আবার আবেদন করে ৫০০ করার অনুরোধ করি। সর্বশেষ হজ এজেন্সি মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এটি ২৫০ জন করতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করে আজ দুপুরে (গতকাল সোমবার) চিঠি দিয়েছি। আশা করি সৌদি সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
হজ এজেন্সি মালিকরা তো সর্বনি¤œ কোটা ১০০ করার দাবি জানিয়েছেন, সেক্ষেত্রে ২৫০ হলে তারা মানবেন কি না? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোটা সৌদি সরকার নির্ধারণ করে। এখানে আমাদের করার তেমন কিছু থাকে না। এটি আমাদের হাতে থাকলে ১০০ জনই করে দিতে পারতাম। কিন্তু এটি সৌদির এখতিয়ারাধীন। ফলে তাদের কাছেই আমাদের বারবার অনুরোধ করতে হয়। এমনকি তারা আমাদের জানিয়ে দিয়েছে পরবর্তী হজে তারা সর্বনি¤œ কোটা দুই হাজারই করবে।
ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, সৌদি সরকার আমাদের মোনাজ্জেমের (এজেন্সি) সংখ্যা কমাতে বলেছে। গত হজে ছয়শোর বেশি ছিল বলে তারা উষ্মা প্রকাশ করেছেন। এজন্য এবার তারা সৌদিতে সার্ভিস প্রদানকারী কোম্পানি, আবাসন, ক্যাটারিং এবং পরিবহন কোম্পানি ঠিক করতে অভিজ্ঞ এজেন্সি মালিকদের নিয়ে কমিটি করতে বলেছে। প্রতিটি কমিটির সদস্য সংখ্যা কোনোক্রমেই পাঁচজনের বেশি করা যাবে না বলে তারা জানিয়েছে। এসব কমিটি হজযাত্রীদের সার্ভিস প্রদানকারী কোম্পানি এবং মক্কা আল মোকাররমা ও মদিনা আল মোনাওয়ারায় আবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবে বলেও তারা জানিয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রতি এক হাজার জনে পাঁচজন যেতে পারবেন বলে তারা জানিয়েছে। ধর্ম উপদেষ্টা জানান, ইউরোপ-আমেরিকায় এজেন্সি শুধুমাত্র হাজী সংগ্রহ করে সৌদিতে পাঠায়। আর সৌদি সব ধরনের সেবা দিয়ে আবার তাদের বিমানে উঠিয়ে দেয়। সৌদিতে তাদের কোনো এজেন্সি কাজ করে না। সৌদি সরকার আমাদের ক্ষেত্রেও সেটি করতে চাচ্ছে। তারা সেখানকার ক্যাটারিং সার্ভিস নিজেরা দেয়ার চিন্তা করছে।
আপনারা এজেন্সির সংখ্যা নিয়ে কী চিন্তা করছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে ড. খালিদ বলেন, সৌদি আমাদের বারবার বলেছে এজেন্সির সংখ্যা কমাতে। এজন্য হজের আগে বা পরে যখনই হোক যেসব এজেন্সি নিয়ম নীতি মানবে না তাদের ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।
এজেন্সি মালিকরা জানিয়েছেন, বিমান ভাড়া আরো কমানোর সুযোগ ছিল, এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এবার বিমান ভাড়া কমাতে প্রথম থেকেই আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছি। আমরা এক লাখ ৪০ হাজার টাকা করার জন্য প্রথমে বিমানকে অনুরোধ করি। কিন্তু তারা সেটি করতে রাজি হয়নি। এরপরও বিমান কর্তৃপক্ষের সাথে বারবার যোগাযোগ করে ২৭ হাজার টাকা কমানো সম্ভব হয়েছে। গত হজে এটি প্রায় দুই লাখ টাকা ছিল। বিমান ভাড়া কমাতে থার্ড ক্যারিয়ার চালুর সুযোগ ছিল কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিমানে হাজী পরিবহন করলে সেক্ষেত্রে থার্ড ক্যারিয়ার চালুর সুযোগ থাকবে না বলে সৌদি কর্র্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এজন্য করা সম্ভব হয়নি।
হজ নিবন্ধনের সময় আর বাড়াবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধনের শেষ সময় দেয়া হয়েছে। সৌদি সরকার আমাদের কাছে বারবার জানতে চাচ্ছে আমরা কত সংখ্যক হাজী পাঠাবো। কিন্তু শেষ না হওয়ায় আমরা জানাতে পারছি না। এজন্য ২৬ ডিসেম্বরের পর আর সময় বাড়ানোর সুযোগ নেই। নিবন্ধন শেষ হলে আমরা প্রকৃত সংখ্যাটি সৌদিকে জানাতে পারবো। আর এ সংখ্যা অনুসারে বাড়ি ভাড়া, মিনায় তাঁবু নির্ধারণ ইত্যাদি কাজ শেষ করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে এসব কাজের জন্য সৌদিতে এক কোটি টাকার বেশি পাঠিয়েছি। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। আমরা বেসরকারি এজেন্সির সাথে সমন্বয় করে হাজীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। আশা করি আগামী হজ অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারবো আমরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা