ভারতের দ্বিচারিতা নিন্দনীয় ও আপত্তিকর : আসিফ নজরুল
- বাসস
- ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১০
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সংখ্যালঘু নিয়ে ভারতের দ্বিচারিতা নিন্দনীয় ও আপত্তিকর। উপদেষ্টা গতকাল শুক্রবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে আসিফ নজরুল বলেন, ভারতের নিজের মাটিতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর অসংখ্য নির্মমতার ঘটনা ঘটে চলেছে। অথচ সেটা নিয়ে তাদের সঙ্কোচ বা অনুশোচনা নেই। ভারতের এই দ্বিচারিতা নিন্দনীয় ও আপত্তিকর। তিনি বলেন, সর্বশেষে চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নির্মম ও উসকানিমূলকভাবে হত্যার পরও বাংলাদেশের মুসলমানরা অসীম সংযম ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। এরপরও বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর ভারতের অযাচিত উদ্বেগ প্রকাশ থেমে নেই।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ভয়েস অব আমেরিকা বাংলার একটি জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ (৬৪ দশমিক ১ শতাংশ) মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে বেশি নিরাপত্তা দিতে পারছে। তিনি আরে বলেন, আমরা নিজেরাও দেখেছি, ছাত্র সংগঠন, মাদরাসা ও রাজনৈতিক দলসহ বাংলাদেশের মানুষ সাম্প্রতিক দুর্গাপূজার সময় কিভাবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করেছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার এবং জামিন আবেদন নামঞ্জুর করার ঘটনায় গত মঙ্গলবার উদ্বেগ জানায় ভারত। এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, চিন্ময়কে গ্রেফতার এবং জামিন আবেদন নাকচ করায় ভারত উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার পর এ ঘটনা ঘটেছে। দেশটিতে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট এবং দেবতার অবমাননা ও মন্দিরে চুরি-ভাঙচুরের একাধিক নথিভুক্ত ঘটনা রয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বিষয়ে মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিটি বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এমন একটি বিষয় নিয়ে এই বিবৃতি দেয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে উল্লেখ করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, এরপরও অত্যন্ত হতাশা ও গভীর দুঃখের সাথে সরকার লক্ষ করছে, চিন্ময় দাসকে গ্রেফতার করার ঘটনাকে কিছু মহল ভুলভাবে তুলে ধরছে। (ভারতের) এ ধরনের ভিত্তিহীন বিবৃতি শুধু সত্যের ভুল উপস্থাপনই নয়, বরং দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার চেতনারও পরিপন্থী।
এ দিকে ভারতের সংসদেও গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হয়। লিখিত প্রশ্নোত্তরে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কৃতি বর্ধন সিং বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব বলে মনে করছে ভারত।
এ কারণেই আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ ফেসবুক পোস্টটি লিখেছেন।
বিদেশে শ্রমিক শোষণ বন্ধে কাজ করছি : ড. আসিফ নজরুল
বাসস আরো জানায়, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিদেশে শ্রমিক শোষণ বন্ধের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। কিছুটা অগ্রগতি হোক, তখন জানাব।
উপদেষ্টা গতকাল শুক্রবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ কথা বলেন, আমি সরকারি কাজে কাতারে ছিলাম তিন দিন। আমার হোটেলে যেসব বাংলাদেশী ভাইরা কাজ করেন তাদের থেকে তাদের বঞ্চনার অনেক খবর শুনেছি। দূতাবাসে আমন্ত্রিত অনেক শ্রমিক ও পেশাজীবী ভাইবোনের সাথে কথা বলেছি। দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বক্তব্যও শুনেছি।
তিনি বলেন, সেখানকার প্রবাসী ভাইবোনদের মূল অভিযোগ পাসপোর্ট-এনআইডি-পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সংক্রান্ত বিষয়ে এবং সেখানে কর্মসংস্থান ও পারিশ্রমিক নিয়ে। এর মধ্যে পাসপোর্টের বিষয়ে আমি ডিজির সাথে কথা বলেছি। তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পাসপোর্ট সরবরাহ শুরু হবে।
পাসপোর্ট আর এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয় উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, তবে সেখানে আমি যোগাযোগ অব্যাহত রাখব। কালকে আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে পাসপোর্ট ফি কমানো বা কমহারে সবার জন্য এক রকম করার কথা বলেছি। এটা নিয়ে আমার যোগোযোগ অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, এ ছাড়া পাসপোর্ট আর এনআইডি সহজীকরণের বিষয়ে কী কী করা যায় তা আইন মন্ত্রণালয়ের থেকে খতিয়ে দেখব।
ইসলামী ব্যাংকগুলো থেকে টাকা স্থানান্তর ও তোলার সমস্যা বিষয়ে অভিযোগ ছিল উল্লেখ করে তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এটি সমাধানের জন্য অর্থসংস্থান করেছে। আমরা সর্বোতভাবে এই ব্যাংকগুলোর প্রতি বিগত সরকারের আমলে করা অবিচারগুলো (যা আমি সুপরিকল্পিত বলে মনে করি) নিরসনের চেষ্টা করব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা