চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সাহস ও অভিজ্ঞতা আমার আছে
একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০, আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:৫৭
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, দেশের মানুষ অনেক দিন ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা অবাধ ও নিরপেক্ষ একটা নির্বাচনের জন্য অনেক সংগ্রাম, অনেক আন্দোলন করেছে বিগত বছরগুলোতে। অনেকে রক্ত দিয়েছেন। আমি তাদের একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এবং এজন্য আমি আমার সর্বোচ্চটুকু করব। আমি ইনশাআল্লাহ কনফিডেন্ট (আত্মবিশ্বাসী) আমি এটা করতে পারব। তিনি বলেন, আমি বহু চ্যালেঞ্জ দেখেছি এবং সফলভাবে মোকাবেলা করেছি। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার সাহস ও অভিজ্ঞতা আমার আছে। ইনশাআল্লাহ যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ আসুক, সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব।
গতকাল রোববার শপথ গ্রহণ শেষে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বের হওয়ার সময় মূল ভবনের প্রবেশপথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কথা বলেন। এ সময় অন্য নির্বাচন কমিশনাররা তার সাথে ছিলেন।
এ দিন বেলা দেড়টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নতুন নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) শপথ পাঠ করান। প্রথমে শপথ নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীন। এরপর শপথ নেন চারজন কমিশনার। তারা হলেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো: আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমান মাসুদ, সাবেক যুগ্মসচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঞা। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- আপিল বিভাগের সব বিচারপতি, সার্চ কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবসহ সিইসি ও চার কমিশনারের পরিবারের সদস্যরা।
নাসির উদ্দীন বলেন, ফার্স্ট অব অল শপথ নিয়েছি। শপথের সম্মানটা সমুন্নত রাখতে চাই। আমি এটাকে নিজের জীবনের বড় অপরচুনিটি (সুযোগ) হিসেবে দেখছি। এই দায়িত্বটা অপরচুনিটি টু সার্ভ দ্য নেশন। সিইসি বলেন, সবাই মিলে, আপনাদের সবার সহযোগিতা নিয়েই কিন্তু (নির্বাচন) করতে হবে। আমরা একা পারব না। আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। দেশবাসীর সহযোগিতা লাগবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা লাগবে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা এই জাতিকে একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেবো।
এক প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দীন বলেন, সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। একটা নির্বাচন করতে গেলে কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কার তো লাগবেই। এখন নানা রকম কথা হচ্ছে। কেউ প্রোপরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব), আবার কেউ বলে আগের সিস্টেমে ইলেকশন। সংবিধানে যদি এটা ফয়সালা না হয়, আমরা নির্বাচনটা করব কিভাবে? নির্বাচন করতে গেলে নতুন প্রজন্ম, যারা ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে আছে বছরের পর বছর, তাদের তো ভোটার তালিকায় আনতে হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। কোথায় কোথায় সংস্কার দরকার হবে, ইন্টারভেনশন দরকার হবে, সেটি পাব, যেহেতু নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের জন্য একটা কমিশন কাজ করছে। পরামর্শ আসুক, আমরা দেখি কোনটা কোনটা গ্রহণযোগ্য হয়। যেগুলো গ্রহণযোগ্য হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে আমাদের।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি জানান, তারাও সংবিধানের বিষয়ে সাজেশন দেবেন। আমি ও আমার টিম সংবিধানের প্রোডাক্ট। সংবিধান যদি ঠিক না হয়, তাহলে আমাদের যাত্রা এলোপাতাড়ি হয়ে যাবে। সুতরাং এ কার্যক্রমও শেষ হোক। সব সুপারিশ আসুক। বেশি দিন তো নেই। উনারা তো বলছেন, ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে। অতি অল্প সময়, আপনারা আশ্বস্ত থাকুন।’
তিনি বলেন, শুধু আমরা নই, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন করবে। তারা ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে বলে আসছে তারা ভোটের অধিকার চায়, অবাধে ভোট দিতে চায়। সুতরাং তাদের সাথে পাব। তাদের ডিমান্ডটা বাস্তবায়নে আমরা সহযোগিতা করব। সুতরাং আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। তারাও জাতির কাছে ওয়াদাবদ্ধ।’
কবে নির্বাচন দেবেন জানতে চাইলে সিইসি বলেন, দিনক্ষণ দিয়ে তো এখন বলা যাবে না। আমরা কিছু সংস্কার, যেগুলো দরকার আছে, সেগুলো করে। আগে আমি দায়িত্বটা নিই, কাজকর্মটা বুঝে নিই। আমাকে একটু বুঝতে তো দেবেন, ভাই।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে প্রধান করে ইসি গঠনে ছয় সদস্যের সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো: নূরুল ইসলাম, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান (পিএসসি) মোবাশ্বের মোনেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনার পরে এই কমিটি নতুন নির্বাচন কমিশনের নাম সুপারিশ করেন। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গত ২১ নভেম্বর নতুন সিইসি ও ইসি নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা