২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আদানির বিদ্যুৎ নিয়ে অনুসন্ধান কমিটির নির্দেশ হাইকোর্টের

আদানির বিদ্যুৎ নিয়ে অনুসন্ধান কমিটির নির্দেশ হাইকোর্টের -

 

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক মাসের মধ্যে এই কমিটি গঠন করতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিবের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কমিটি গঠনের পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে আদালতে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ওই চুক্তির বৈধতা নিয়ে করা রিট ও সম্পূরক আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য রেখেছেন আদালত।
আদেশের সময় আদালত বলেন, ‘দেশের স্বার্থে, দেশ সবার আগে। দেশ না চাইলে আমরা নাই। অবশ্যই আমরা আশা করবো যে এই ইস্যুটা আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের সঙ্গে। প্রতিবেশী মানে প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমরা ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক চাই। উনারা নিশ্চয়ই দেখবেন আশা করি।’

আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম নিজেই শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মুনীরুজ্জামান, কামরুন নাহার মাহমুদ ও আফরোজা ফিরোজ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।
হাইকোর্ট আদানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের আগে দর-কষাকষি হয়ে থাকলে সে সংক্রান্ত কাগজ ও তথ্যাদি ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের আদেশ গ্রহণ করার ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যানকে এসব তথ্য দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ওই চুক্তি সম্পাদনে যথাযথভাবে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে কি না, তা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুসন্ধান করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম আবেদনকারী হয়ে ১২ নভেম্বর রিট করেন। রিটে বিদ্যুৎ ক্রয়ের জন্য আদানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বরের চুক্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এ বিষয়ে রুল চাওয়ার পাশাপাশি রুল হলে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়। রিটটি গত সোমবার কার্যতালিকায় ওঠে। আদালত গতকাল শুনানির জন্য দিন রাখেন। রিট দায়ের করার পর সম্পূরক একটি আবেদন দাখিল করেন আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম।
আদেশের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখা যাচ্ছে, আমাদের সরকার ভারতের অন্যান্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ অনেক কম টাকায় পায়। ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে যে বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়, দর প্রতি ইউনিট হিসাবে ৫ দশমিক ৫ পয়সা পড়ে। ভারতের অন্যান্য বেসরকারি খাত থেকে বাংলাদেশ যে বিদ্যুৎ নেয়, তার খরচ ইউনিট প্রতি ৮ টাকা ৫০ পয়সা করে পড়ে।
তিনি বলেন, অথচ আদানির কাছ থেকে নিতে ১৪ টাকার ওপরে ইউনিটপ্রতি খরচ পড়ে। এমনকি নেপাল থেকে আনতে মোট খরচ পড়ছে মাত্র ৮ টাকা। আদানির সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে দর-কষাকষি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হয়নি বলে গণমাধ্যমে দেখেছি। যে কারণে আদৌ দর-কষাকষি হয়েছে কি না, হলে কিভাবে হয়েছে, এ-সংক্রান্ত তথ্য আদালতে দাখিল করার জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে সম্পূরক আবেদনে।

 


আরো সংবাদ



premium cement