হত্যাকাণ্ডের চেয়েও গুম খারাপ অপরাধ : আসিফ নজরুল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৬
ফ্যাসিবাদের শেকড় অনেক দূর ছড়িয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্টের শেকড় এতটাই গভীরে চলে গেছে যে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই এত সহজ নয়। গত ১৫ বছরে তারা জড়ো হয়েছে আর এদিকে আমরা কয়েক সপ্তাহ এই প্রক্রিয়ার বিপরীতে কাজ করছি। তিনি বলেন, গুমের বিরুদ্ধে আইন করার ক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। হত্যাকাণ্ডের চেয়েও গুম খারাপ অপরাধ। গতকাল শুক্রবার এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিসএপিরেন্সের (এএফএডি) অনুষ্ঠানে আসিফ নজরুল এ কথা বলেন।
দুই দিনব্যাপী অষ্টম কংগ্রেসের উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠানে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সক্ষমতার ঘাটতি থাকলেও গুমের বিরুদ্ধে আইন করায় সরকারের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। হত্যাকাণ্ডের চেয়ে গুম খারাপ অপরাধ।
অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, বর্তমান সরকার গুম হওয়া মানুষের পরিবারের সাথে রয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান বলেন, আইন উপদেষ্টার কাছে গুমের মতো অপরাধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়নের অনুরোধ করছি। যাতে এ ধরনের অপরাধ কেউ না করতে পারে।
সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলরকে স্ট্যান্ড রিলিজ
সুইজারল্যান্ড বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে নাজেহালের ঘটনায় জেনেভায় বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলামকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ করা হয়েছে। একই সাথে তাকে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলামের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
এর আগে শ্রম কাউন্সিলর বিভাগের এক কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে নাম না প্রকাশের শর্তে বলেছিলেন, উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে যারা নাজেহাল করেছিলেন তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এমন বক্তব্য দেয়ার একদিন না যেতেই শ্রম কাউন্সিলর স্ট্যান্ড রিলিজ হলেন।
জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডি এবং সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে ৭ নভেম্বর আসিফ নজরুল দেশে ফিরছিলেন। দূতাবাসের প্রটোকলে তিনি গাড়িতে করে জেনেভা বিমানবন্দরে পৌঁছান। গাড়ি থেকে নামার পর হঠাৎ একদল লোক তাকে ঘিরে ধরে নাজেহাল করেন। এ সময় আসিফ নজরুলের সাথে ছিলেন জেনেভা মিশনের শ্রম কাউন্সিলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম ও মিশনের স্থানীয় কর্মী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মিজান। ঘটনার সময় তারা দু’জনই চুপ ছিলেন।
সেদিন বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশের পর এ ঘটনার সময় তার নির্লিপ্ততার কারণ জানতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল। জবাবে কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘আপনি কথা বলছিলেন, তাই আমি চুপ ছিলাম।’
জানা গেছে, জেনেভা বিমানবন্দরে উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে নাজেহাল করার ঘটনাকে সরকার পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে করছে। এ ব্যাপারে জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে ঢাকায় একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সাথে জেনেভায় অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পর গত বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিদেশে বাংলাদেশের সব মিশনে একটি জরুরি পরিপত্র পাঠানো হয়। সেই পরিপত্রে মিশনগুলোকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সরকারি সফরের সময় দু’টি বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে বলা হয়েছে।
এক. সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিদেশ সফর করার সময় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যথাযথ প্রটোকল দেয়া বাংলাদেশের মিশনগুলোর বিশেষ দায়িত্ব। দুই. বিদেশী মিশনগুলোকে এ ধরনের সফর শুরুর আগেই সফরকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সফরের সময় যেকোনো অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে আরো সচেষ্ট থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, মিশনের শ্রম কাউন্সিলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজের পাশাপাশি মিজানকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিসিএস ২৯ ব্যাচের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ২০২১ সালে জেনেভার বাংলাদেশ মিশনের শ্রম উইংয়ে যোগ দিয়েছিলেন। উপসচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তা এর আগে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিব ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা