চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ করার উসকানি ভারতীয় উপস্থাপকের
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৬
ভারত থেকে পরিচালিত ইউটিউব চ্যানেল রিপাবলিক টিভিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক অপপ্রচার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই চ্যানেলের উপস্থাপক বলছেন, চট্টগ্রাম ১৯৪৭ সালে ভারতের হাতছাড়া হয়ে যায়। এখন কৌশলগতভাবে চট্টগ্রাম ভারতের অংশ হয়ে গেলে বঙ্গোপসাগর দখল করা যুক্তরাষ্ট্র বা বিশ্বের কোনো পরাশক্তির পক্ষে সম্ভব নয় বলে উপস্থাপক বলছেন। তিনি সরাসরি উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যসংলগ্ন চট্টগ্রামের মানচিত্র দেখিয়ে বলছেন, আসাম বা ত্রিপুরার মতো ভারতীয় রাজ্যে কোনো মালামাল আনতে গেলে অনেক খরচ পড়ে। চট্টগ্রাম যদি ভারতের অংশ হয়ে যায় তাহলে এই দূরত্ব একদম মিটে যাবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম অত্যন্ত সংবেদনশীল জায়গা, পাশেই কক্সবাজার। পুরো জায়গাটা যদি ভারতের অংশ হয়ে যায় তাহলে বঙ্গোপসাগরে আমেরিকা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। আমেরিকা সেন্টমার্টিন নিক, সেন্ট হেনরি নিক, অমুক নিক, তমুক নিক, চট্টগ্রামের আশপাশটা যদি স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে যায় বা ভারতের অংশ হয়ে যায় তাহলে বঙ্গোপসাগর যারা দখল করার চিন্তা করছে তারা ভয় পেয়ে যাবে।
চট্টগ্রামের হিন্দু ও বৌদ্ধদের ১৯৪৮ সাল থেকে মেরে, কেটে ও ভাগিয়ে দিয়ে অঞ্চলটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় পরিণত করা হয়েছে বলে এই ভারতীয় উপস্থাপক দাবি করেন।
এই অংশ দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে একজন দর্শক মন্তব্য করেছেন, ভারতের দাম্ভিকতা ও স্বৈরাচারী প্রকৃতি প্রতিদিনই সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তারা কি সম্মান পাওয়ার যোগ্য? অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করা।
উপস্থাপক চট্টগ্রামের ইতিহাস নিয়ে আরেকজন উপস্থাপকের শরণাপন্ন হন। তিনি দাবি করেন ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের হিন্দু ও বৌদ্ধরা শুধু প্রতারণার শিকার হয়েছেন। প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে মাস্টার দা সূর্যসেন ও প্রীতিলতা জোয়াদ্দার স্বাধীন ভারতের মূল ভূখণ্ডের জন্য চট্টগ্রাম কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা একাধিকবার বুঝিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার্তা নিয়ে লেখা চিঠি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই প্যাটেল চাপা দিয়েছিলেন। মাউন্ট ব্যাটেন বলেন, ভারত স্বাধীনতা আইনে চট্টগ্রামকে ভারতের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি।
উপস্থাপক এও বলেন, চট্টগ্রামকে ভারতের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হোক এই দাবি নিয়ে সেই সময় স্নেহ কুমার চাকমা আসেন ভারতে। ৫০ দিন অপেক্ষা করলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। তাই দিন দিন চট্টগ্রামের হিন্দু ও বৌদ্ধদের প্রতারণা ও অত্যাচার সহ্য করে আসতে হচ্ছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান বলেছিলেন, ওরা খেতে না পেলে ঘাস খাক, থাকতে না পারলে ভারত চলে যাক। মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু ও বৌদ্ধরা খান সেনাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে। তাদের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে। এর দায় কাউকে নিতে হবে। তাই আজ তারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। আর এতে ভয় পাচ্ছে ইউনূস।
এরপর উপস্থাপক বলেন, সেনাবাহিনী চট্টগ্রামের হিন্দুদের ঘরে ঘরে ঢুকছে। তারা মার খাচ্ছে। কচুকাটা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় মিছিল করা উচিত সন্তু লারমার। গর্জে উঠছে না কেন সন্তু- এমন প্রশ্ন তুলে বলা হয়, হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ছবিগুলো আবার দেখাচ্ছি। এগুলো বলে দেবে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কিভাবে নির্যাতন হচ্ছে। হিন্দু নিধন হচ্ছে।