আজ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস
১০ দিনের কর্মসূচি বিএনপির- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:১৯, আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:২০
আজ ৭ নভেম্বর, ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সিপাহি-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটেছিল, যা দেশের তৎকালীন রাজনীতির গতিধারা পাল্টে দিয়ে দেশ ও জাতিকে নতুন পরিচয়ে অভিষিক্ত করেছিল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী সেনা অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যখন চরম নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল, তখন সিপাহি-জনতা মিলিত ঐক্যের বিপ্লব দেশ ও জাতিকে অনাকাক্সিক্ষত শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিয়েছিল। অভূতপূর্ব সেই বিপ্লব-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সাময়িক বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন স্বাধীনতার ঘোষক তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান।
রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, এই পটপরিবর্তনের পর রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রভাবমুক্ত হয়ে শক্তিশালী সত্তা লাভ করে। গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়, এই দিন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে।
আওয়ামী শাসনামলে দিবসটি স্বাচ্ছন্দ্যে উদযাপন করতে পারেনি বিএনপি। স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে সমাদৃত জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে বরং ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার নানা চেষ্টা হয়েছে। এবার দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে আগামীকাল শুক্রবার রাজধানীতে বিশাল কার্যাবলি করার প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ঘটনার ধারাবাহিকতায় ওই দিনই সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফ তার অনুসারী সেনাসদস্যদের নিয়ে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করেন। স্বঘোষিত পদোন্নতি নিয়ে খালেদ মোশাররফ মেজর জেনারেলের ব্যাজ ধারণ এবং সেনাপ্রধানের পদ দখল করেন। ৬ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ বঙ্গভবনে গিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমদকে গ্রেফতার করে মন্ত্রিসভা বাতিল ও জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দেন। একই দিনে তিনি প্রধান বিচারপতি আবু সা’দাত মোহাম্মদ সায়েমকে দেশের প্রেসিডেন্টের পদে বসান। একপর্যায়ে ৬ নভেম্বর গভীর রাতে সেনাবাহিনীর সাধারণ সিপাহিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সেই অভ্যুত্থানে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দিয়ে সর্বস্তরের জনতা রাজপথে নেমে আসে। সিপাহি-জনতার মিলিত সেই বিপ্লবে বন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়াউর রহমান। পাল্টা অভ্যুত্থান ঠেকাতে গিয়ে প্রাণ হারান খালেদ মোশাররফ ও তার কিছু অনুসারী। পরদিন ৭ নভেম্বর সর্বস্তরের সৈনিক ও জনতা সম্মিলিতভাবে নেমে আসে ঢাকার রাস্তায়, ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। অভূতপূর্ব এক সংহতির নজির সৃষ্টি হয় দেশের রাজনীতিতে। তার পর থেকেই ৭ নভেম্বর পালিত হচ্ছে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে। বিএনপি সরকারের আমলে এ দিনটিতে ছিল সরকারি ছুটি।
বাণী : দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয জীবনের এক ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সিপাহি-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও হারানো গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অভূতপূর্ব অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত।
তিনি বলেন, ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।
পৃথক এক বাণীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকের এই মহান দিনে আমি দেশবাসী সবাইকে আহবান জানাই-এখনও দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চূড়ান্ত উত্তরণ হয়নি। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন, নাগরিক স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ সাধন করতে হবে। ৫ আগস্টের পরে দেশবাসী কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। এখনও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে পদানত করার জন্য কুচক্রী মহল সদা তৎপর। সুতরাং যে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরে আমরা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেই একই চেতনা বুকে ধারণ করে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিশ্চিত করা, স্বাধীনতার সুফল তথা অর্থনৈতিক মুক্তি, শান্তিশৃঙ্খলা, সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
কর্মসূচি : মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আজ বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরস্থ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে বিশাল র্যালি করার প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা