০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১,
`

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ১৭ নভেম্বর

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ১৭ নভেম্বর -


বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। সোমবার ঢাকার নবম বিশেষ জজ আদালতে দুদকের পক্ষে আটজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ দিন ধার্য করা হয়েছে।
এদিন আলোচিত এ মামলার আসামি সেলিম ভূঁইয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ালি-উল-ইসলাম ছাড়াও পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের সাবেক ও বর্তমান আট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাক্ষ্য নেয়া হয়।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে সাক্ষীদের জেরা করেন আইনজীবী আমিনুল ইসলাম; সাথে ছিলেন আহমেদ আজম খান, জাকির হোসেন ভূইয়া, জিয়া উদ্দিন জিয়া প্রমুখ।
এ বিষয়ে আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, নাইকো মামলায় এ পর্যন্ত যাদের সাক্ষী নেয়া হয়েছে তার দ্বারা খালেদা জিয়া বা এ মামলার অন্য কোনো আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে নাইকোর সাথে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন চুক্তির কাজ শুরু হয়। এরপর বিএনপি ক্ষমতায় এসে শুধু চুক্তির কাজটি এগিয়ে নেয়। আজ (সোমবার) যারা জবানবন্দী দিয়েছেন তারা কেউ এ মামলার সাথে খালেদা জিয়ার অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি স্বীকার করেননি।
এ আইনজীবী আরো বলেন, গ্যাস অনুসন্ধানের ঘটনায় ১৯৯৯ সালে সিদ্ধান্ত হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। শুধু হয়রানির উদ্দেশে খালেদা জিয়াসহ তৎকালীন সময়ে যারা কাজ করেছেন তাদের আসামি করা হয়েছে।
এই মামলায় শেখ হাসিনা এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন। তিনি ক্ষমতায় এসে বিশেষ আদালত বসিয়ে বিচারককে ম্যানেজ করে নিজের নাম মামলা থেকে বাদ দিয়েছেন। আর মামলাটি দুদক করলেও এখনো খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি। ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে খালেদা জিয়া খুব শিগগিরই এ মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন।

২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদি হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করেছিলেন। এরপর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
মামলায় আরো আসামি করা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো: শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আলমামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এর মধ্যে এ কে এম মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো: শফিউর রহমান মৃত্যুবরণ করায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডিয়ান কোম্পানিটি নাইকোকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল শুনানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (৩ নভেম্বর) এ বিষয়ে দুটি লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আগামী ১০ নভেম্বর দিন ঠিক করেছেন বিচারপতি মো: রেজাউল হকের চেম্বার জজ আদালত। ওই দিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান। সেই সাথে এ মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ছয় আসামির প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement