হাসিনার বিরুদ্ধে এবার আইসিসিতে গণহত্যার মামলা
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১০
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যাওয়া এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি তার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং অন্যান্য প্রভাবশালী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্তের আবেদন করেছেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশী একজন আইনজীবীসহ আরো দু’জন ব্রিটিশ আইনজীবী।
মামলার বাদি ‘থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার্স’এর ব্যারিস্টার মো: আশরাফুল আরেফিন গত শুক্রবার সন্ধ্যায় লন্ডন-বাংলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে মামলাটি দাখিল করা হয়েছে, বলেন ওই আইনজীবী। বিডিনিউজ। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ও বিভিন্ন থানায় শেখ হাসিনাসহ তার বিভিন্ন মেয়াদের মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য এবং পুলিশসহ প্রশাসনের আমলাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলার মধ্যে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আইসিসিতে অভিযোগ দায়েরের খবর এলো।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী আইনজীবী আশরাফুল আরেফিন বলেন, মামলায় তার সাথে রয়েছেন ব্যারিস্টার সারাহ ফোরে ও ব্যারিস্টার এমিল লিক্সান্দ্রু। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইসিসি থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করা হয় বলেও তুলে ধরেন তিনি।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন থেকে সরকার পতনের আন্দোলন দমাতে শেখ হাসিনা সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘(তাদের) বিভিন্ন অপরাধের মধ্যে রয়েছে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, গোপন বন্দিশালায় নির্যাতন, চলাচল ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং গণহত্যার মতো গুরুতর অপরাধ। মামলায় ভুক্তভোগীদের ওপর সংঘটিত সহিংসতা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং ব্যাপক নিপীড়নের দলিলসহ ব্যাপক প্রমাণাদি উপস্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে সাক্ষী, ভিডিও প্রমাণ এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী আশরাফুল আরফিন জুলাই ও আগস্টে আন্দোলনের সময়কার ঘটনাকে ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের এক পৈশাচিক নৃশংসতা’ হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখোমুখি হওয়ার পর সরকার এর জবাব দেয় অমানবিক সহিংসতার মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমন করতে সরকার পুলিশ, রথ্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (রথ্যাব) এবং আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের মতো বাহিনী মোতায়েন করে। এই বাহিনী নির্বিচারে গুলি, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র, যেমন- বার্ডশট পেলেট এবং তাজা গুলি-ব্যবহার করে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা চালায়। ইতিহাসের এই বর্বরতম নৃশংসতায় ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এই গুরুতর অপরাধের নিরপেক্ষ তদন্ত করতে সক্ষম হবে কি না তা নিয়ে ‘যথেষ্ট সন্দেহ’ থাকার কথা তুলে ধরে তারা আইসিসিতে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা