ভরা মৌসুমেও পর্যটন খাতে হতাশা
- আবুল কালাম
- ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৪
ভরা মৌসুমেও পর্যটন খাতে হতাশা দেখা দিয়েছে। প্রত্যাশিত পর্যটকের দেখা না মেলায় দেশের একাধিক জেলায় পর্যটন স্থানগুলোতে অনেকটা অলস সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা। পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন বাধ্যবাধকতায় এত দিন পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ হলেও এ সপ্তাহ থেকেই সীমিত আকারে তা খুলে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এর বাইরে সিলেট কক্সবাজারসহ দেশের প্রধান কেন্দ্রগুলোতেও পর্যটকদের যাতায়াত অনেক কমে গেছে। ফলে ভরা মওসুম শুরুর সময়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ট্যুরিজম ব্যবসায় এখন অস্থিরতা বিরাজ করছে। কখনো আশানুরূপ পর্যটকের দেখা মিললেও হঠাৎ করে তাতে ধস নামছে। তাতে একমাস ব্যবসা হলেও তিন মাস খারাপ যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এখন ভরা মওসুমেও তা কতটা আশানুরূপ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা মিলছে না।
কক্সবাজার হোটেল ব্যবসায়ী সমিতির একজন নেতা জানান, প্রতি বছর নভেম্বর শুরুর আগেই তাদের হোটেল মোটেলের ৬০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়ে যেত। আর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা একাধারে বাড়তে থাকত। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি অনেকটা উল্টো মনে হচ্ছে। ভরা মওসুম শুরু হলেও বুকিং একেবারেই হাতেগোনা। একই কথা জানালেন সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির আরেক নেতা। তাদের ভাষ্য, এমনিতেই গত বছর থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এরপর জুলাই বিপ্লব ঘিরে ব্যবসা বন্ধ ছিল। এরপর হাসিনা স্বৈরশাসকের পতনের পর তাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল। মনে হয়েছিল ব্যবসা অনেক ভালো হবে। তাতে হয়তো বিগত সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে তাদের হতাশা বাড়ছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী বুকিং নেই। নেই পর্যটক ফলে ভরা মওসুম কতটুকু আনন্দময় হবে তা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
একই অবস্থা বাকি পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মন্তব্য করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সেন্টমার্টিনেও এ সময় পর্যটকে ভরপুর থাকত। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় সেন্টমার্টিনে এখন পর্যন্ত পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যায়নি। মিয়ানমারের রাখাইনের চলমান যুদ্ধের কারণে টেকনাফ-দমদমিয়া ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ।
অন্য দিকে কক্সবাজারের টেকনাফেও আশানুরূপ পর্যটকের দেখা মিলছে না। উপজেলার সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, জাহাজপুরা গর্জন বাগান ও উখিয়ার ইনানী এবং হিমছড়িতে পর্যটক নেই বললেই চলে। এ মৌসুমে পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ এখনো সেন্টমার্টিনে যায়নি। স্থানীয়রা জানান, বর্ষার পরে সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, উখিয়ার ইনানী ও হিমছড়ির বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বিগত সময়ে বিপুল পর্যটকের আনাগোনা ছিল। পর্যটন মৌসুমের একমাস পেরিয়ে গেলেও এখানে প্রত্যাশিত পর্যটক মিলছে না। এতে পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসায়ীরা চরম হতাশায় রয়েছেন। যদিও ইনানী ঘাট দিয়ে দু’টি পর্যটকবাহী জাহাজ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে ইনানী ঘাটের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। তাই সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক এ নৌরুট দিয়ে পারবে কিনা সেটা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সাবেক প্রেসিডেন্ট মো: আনোয়ার কামাল বলেন, উপজেলার সব স্পটে পর্যটক বাড়াতে কাজ করছি। সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত হলে দ্বীপবাসীসহ আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
এ দিকে সেন্টমার্টিন নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। নভেম্বর মাসে পর্যটকবাহী জাহাজ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনে যেতে পারবে। তবে কত তারিখ থেকে যাবে সেটি এখনো ঠিক করা হয়নি। পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেন্টমার্টিনে পর্যটকরা রাত্রী যাপন করতে পারবে না। প্রতিদিন দুই হাজার মানুষ যেতে পারবে। তবে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট দিয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করবে কি না এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা