২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১, ২০ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

রাষ্ট্রপতি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি

সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টির আশঙ্কা
-

রাষ্ট্রপতি মো: শাহাবুদ্দিনের অপসারণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হয়নি অন্তর্বর্তী সরকার। এ ইস্যু নিয়ে কোনো সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হোক তা চাইছে না বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করে বিএনপি প্রতিনিধিদল তাদের অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছে।
অন্য দিকে সশস্ত্রবাহিনীর হাইকমান্ডও এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে নতুন কোনো জটিলতা সৃষ্টি হোক তা চাইছে না বলে জানা গেছে। রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিনের একটি মন্তব্য ঘিরে তার অপসারণের বিষয়টি সামনে চলে আসে। তিনি মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সাথে এক সাক্ষাৎকারে জানান, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এমন কোনো দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই। অথচ তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে এক রেফারেন্সে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে মন্তব্য চেয়েছিলেন।
পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে রাষ্ট্রপতির দুই ধরনের মন্তব্য মিথ্যাচার ও শপথভঙ্গের কারণ বলে মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তার এই মতের সাথে উপদেষ্টা পরিষদ একমত বলে জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব এক ব্রিফিংয়ে।
এ দিকে, রাষ্ট্রপতির অপসারণ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে গতকাল বুধবার জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো: শফিকুল আলম। তিনি বলেন, সরকারের এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রাষ্ট্রপতির অপসারণ চেয়ে বঙ্গভবনের আশপাশে যারা বিক্ষোভ করছেন তাদের আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
পরিস্থিতিতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এ মুহূর্তে নতুন সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারে বলে সেনা নেতৃত্ব মনে করছেন। সংবিধানের বিধান অনুসারে প্রেসিডেন্ট তার পদ থেকে ইস্তফা দিলে স্পিকার রাষ্ট্রপতি হন। স্পিকার পদত্যাগ করায় সে বিধান অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এ সংসদ বিলুপ্ত থাকা অবস্থায় নতুন রাষ্ট্রপতি নির্ধারণে শূন্যতা দেখা দিতে পারে।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক ডকট্রিন অব নেসেসিটি বিবেচনায় অন্য কেউ রাষ্ট্রপতি হতে পারেন বলে মন্তব্য করেন। তবে তিনি এও বলেন যে, সংবিধানের বাইরের একটি ব্যবস্থা হবে এটি।
অন্য দিকে সংবিধানের কাঠামো ভেঙে একটি বিপ্লবী সরকার ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন লেখক ফরহাদ মজহারসহ বেশ ক’জন বুদ্ধিজীবী। কূটনৈতিক অংশীদারদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সাংবিধানিক ব্যবস্থার বাইরে না যাওয়ার পক্ষপাতি বলে জানা গেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাথে আমেরিকান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সাক্ষাৎ করে এমন মনোভাবের কথা জানিয়েছেন বলে একটি সূত্র দাবি করেছে। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করলেও দ্রুত এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে যেতে চাইছে না অন্তর্বর্তী সরকার। আন্দোলনকারী রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতির শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি তদন্তের আহ্বান জানালেও তার পদত্যাগের দাবি জানায়নি।
রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি : রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের অপসারণের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি মো: শফিকুল আলম। তিনি রাষ্ট্রপতির অপসারণ চেয়ে বঙ্গভবনের আশপাশে যারা বিক্ষোভ করছেন তাদের আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।
গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব এ কথা জানান। এ সময় ডেপুটি প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গভবনের সামনে নিরাপত্তা জোরদার : রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে বঙ্গভবনের চার পাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টার ঘটনা ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার পর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বঙ্গভবনের সামনের রাস্তায় বসানো হয়েছে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী। চার স্তরের বেষ্টনীর পাশাপাশি রাখা হয়েছে ব্যারিকেড ও তিন স্তরের কাঁটাতারের বেড়াও। বঙ্গভবনের প্রধান ফটকের সামনে সশস্ত্র অবস্থান নিয়েছেন বিপুল সংখ্যক এপিবিএন, বিজিবি, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্য। প্রস্তুত রাখা হয়েছে এপিসি, জলকামানসহ রায়ট কারও।
মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা প্রায় সবাই চলে গেলেও গতকাল দিনভর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করেছে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের সামনে। সকাল থেকে ছাত্র-জনতার উপস্থিতি দেখা না গেলেও সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। তবে বিকেলে শ’ খানেক মানুষকে বঙ্গববনের সামনে রাষ্ট্রপতির পতদ্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। এ সময় লোহার বেষ্টনির সামনে সেনাবহিনীর সদস্যদের সতর্ক প্রহরায় দেখা যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে বঙ্গভবনের পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশের রাস্তার কিছু অংশে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
গোলাম আযমকে বাংলাদেশের মানুষ মুকুটহীন রাজা বানিয়েছে : আযমী ঢাবিতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল, দুই ছাত্র সংগঠনের প্রতিবাদ তুরস্কে প্রতিরক্ষা সংস্থায় হামলা : নিহত ৪ আইবিএ’র সাবেক পরিচালকসহ আটজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আবদুল্লাহ হত্যা মামলা থেকে শ্রমিক লীগ নেতার নাম বাদ দিতে আবেদন সমুদ্র গবেষণায় সামরিক কর্মকর্তা নিয়োগে উদ্বেগ ইসরাইল ব্যর্থ হয়েছে : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে মধ্যরাতে নোবিপ্রবিতে আনন্দ মিছিল বিএনপির পর জামায়াতের রিভিউ আবেদন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করায় ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের আনন্দ মিছিল প্রধান উপদেষ্টার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সাক্ষাৎ

সকল