লক্ষ্মীপুরে বাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৩ জন নিহত, আহত ২০

লক্ষ্মীপুরে একটি বাসে গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই তিন জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আরো ২০ জন আহত হন। তাদের কয়েকজনের হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গুরুতর আহত ১০ জনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল থেকে তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতরা হলেন- মো: হৃদয় (১৯), মো: ইউসুফ (৩২) ও সুজন (২৫)।
গতকাল সোমবার ভোরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: জয়নাল আবেদিন ও লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রঞ্জিত কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত রোববার রাত ২টার দিকে পৌর শহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় ঢাকা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবস্থিত গ্রিন লাইফ ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস নেয়ার সময় মেঘনা পরিবহনের বাসটির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। বাসটি রামগতি-লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী রুটে চলাচল করে। দুর্ঘটনার পর গ্যাস পাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

নিহত হৃদয় লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের রাজিবপুর গ্রামের সিরাজের ছেলে ও পেশায় মোটর মেকানিক। ইউসুফ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য বাঞ্চানগর গ্রামের সুজা মিয়ার ছেলে এবং সুজন সদর উপজেলার চরমনসা গ্রামের বটু মিয়ার ছেলে।
এ ছাড়া মো: রকি, ফাহাদ হোসেন, সিরাজ মিয়া, মো: সুমন, শান্ত খান ও আবদুল মালেকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গ্রিন লাইফ ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার আল-আমিন জানান, নিহত তিনজনই সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক। আহতরাও অটোরিকশায় গ্যাস নেয়ার জন্য পাম্পে অপেক্ষারত ছিলেন। আহতদের মধ্যে বাসচালক ও তার সহকারীও রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ সিলিন্ডার বিস্ফোরণের বিকট শব্দ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাপক ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। বিকট শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে পাম্পে থাকা চালকরা ছোটোছুটি শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রঞ্জিত কুমার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পৌঁছে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তিনজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি নিম্নমানের ছিল। গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: জয়নাল আবেদিন বলেন, তিনজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন, তাদের আমরা চিকিৎসা দেয়ার সুযোগ পাইনি। আহত আছেন অন্তত ২০ জন। এর মধ্যে ১০ জনেরই কারো হাত, কারো পা নেই। এ ছাড়া অন্যরা শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছেন। আমরা অধিকাংশ রোগীকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছি।