১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

চীনের সাথে সামরিক যোগাযোগ বাড়াতে চায় সরকার : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

-

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, চীনের সাথে সামরিক যোগাযোগ বাড়াতে চায় সরকার। একই সাথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের আরো জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন এসেছে। তাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে চীনের সাথে সম্পর্ক সামগ্রিকভাবে দেখা দরকার।
গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক এবং ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে আয়োজিত বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে সামনে রেখে সেন্টার ফর চায়না স্টাডিজের সহায়তায় বিআইআইএসএস এই সেমিনারের আয়োজন করে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনসহ অন্যরা বাংলাদেশকে সহায়তা করছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীন ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ কোনো ফল বয়ে আনেনি। আমি মনে করি, মিয়ানমারের ওপর চীনের প্রভাব রয়েছে এবং এটি বাস্তবতা। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা যেন তাদের অধিকার নিয়ে নিরাপদে রাখাইনে ফেরত যেতে পারে, সেজন্য চীনকে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। দুই দেশের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিল্প খাতে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য আবারো চীনে রফতানি করা সম্ভব হলে তা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সহায়ক হবে। বর্তমানে চীনের সহায়তায় কিছু প্রকল্প চলমান আছে। আমরা আশা করি, এসব প্রকল্প দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সেমিনারে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে চীন আগ্রহী। ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক আগের মতোই অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের যে কোনো সঙ্কটে চীন পাশে ছিল। কোভিড মহামারী কিংবা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানেও চীনা কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ছেড়ে যাননি। সব প্রকল্প সময়মতো শেষ হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন সরকার নিশ্চিত যে বিদ্যমান সমস্যা উত্তরণে নেতৃত্ব দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে। নতুন সরকার স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে দ্রত অগ্রসর হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বাংলাদেশে প্রথম বিদেশী বিনিয়োগ চীন থেকে এসেছে বলে তিনি জানান।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে চীনের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। তবে আমাদের দেখতে হবে অশুল্ক বাধা আছে কি না এবং বাণিজ্য প্রক্রিয়ায় ধীরগতি আছে কি না।
চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মিত কর্ণফুলী টানেলের অর্থনৈতিক উপযোগিতা বাড়াতে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত গওসুল আজম সরকার, মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস ও সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক ইয়াং জেইমিয়ান বক্তব্য দেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement