প্রোটিনের গঠন ও নকশার গবেষণায় রসায়নে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
চলতি বছর রসায়নে নোবেল পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন ডেভিড বেকার, ডেমিস হ্যাসাবিস এবং জন এম. জাম্পার। প্রোটিনের গঠন এবং নকশা সংক্রান্ত অসাধারণ সাফল্যের জন্য সম্মানজনক এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তারা। বাংলাদেশ সময় গতকাল বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোম থেকে এ বছরের রসায়নে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে দ্য রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস। পুরস্কারটি দুই ভাগে প্রদান করা হয়েছে। প্রথম ভাগটি পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের অধ্যাপক ডেভিড বেকার। তিনি প্রোটিনের কম্পিউটার-ভিত্তিক নকশার জন্য সম্মানিত হয়েছেন।
দ্বিতীয় ভাগটি যৌথভাবে পেয়েছেন গুগল ডিপমাইন্ডের দুই বিজ্ঞানী ডেমিস হাসাবিস ও জন এম. জাম্পার। তারা প্রোটিনের জটিল গঠন পূর্বানুমানের জন্য একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল তৈরি করেছেন।
যে কারণে পুরস্কৃত : ডেভিড বেকার প্রোটিনের নতুন ধরনের কাঠামো তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা দীর্ঘদিন ধরে অসম্ভব বলে বিবেচিত হতো। এই আবিষ্কার জীববিজ্ঞান এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারে। অন্যদিকে, ডেমিস হাসাবিস এবং জন এম. জাম্পারের কাজ প্রোটিনের জটিল ত্রিমাত্রিক গঠন পূর্বানুমান করতে সক্ষম করেছে, যা বিজ্ঞানীদের জন্য দীর্ঘ ৫০ বছর একটি সমাধানহীন সমস্যা হয়ে ছিল। তাদের তৈরি করা এআই মডেল ‘আলফাফোল্ড’ প্রোটিনের গঠন পূর্বাভাসে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে।
ডেভিড বেকার ১৯৬২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৯ সালে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনে অধ্যাপনা করছেন এই গুণী ব্যক্তি।
ডেমিস হাসাবিসের জন্ম ১৯৭৬ সালে লন্ডনে। ২০০৯ সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জন এম. জাম্পার ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাসে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো থেকে পিএইচডি অর্জন করেন তিনি। বর্তমানে গুগল ডিপমাইন্ডের সিনিয়র রিসার্চ সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন এ বিজ্ঞানী। তাদের আবিষ্কারগুলো ভবিষ্যতে চিকিৎসা, জীবপ্রযুক্তি এবং জৈব রসায়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
নোবেলজয়ী এই বিজ্ঞানীরা পাচ্ছেন একটি নোবেল মেডেল, একটি সনদপত্র এবং এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর অর্থমূল্য প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর মধ্যে অর্ধেক অর্থ পাবেন ডেভিড বেকার এবং বাকি অর্ধেক ডেমিস হ্যাসাবিস এবং জন এম. জাম্পারের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেয়া হবে।
১৯০১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রসায়নে ১১৮টি নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৯০১ সালে প্রথম নোবেল পান জ্যাকবাস এইচ. ভ্যান হফ। রসায়নে দুইবার করে নোবেল পেয়েছেন ফ্রেডেরিক স্যাঙ্গার ও ব্যারি শার্পলেস। এদিকে, রসায়নের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে নোবেল পেয়েছেন ফ্রেডেরিক জোলিয়ট। ১৯৩৫ সালে এ পুরস্কার তুলে দেয়ার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৩৫ বছর। আর সবচেয়ে বেশি বয়সে রসায়নে নোবেল পেয়ে তাক লাগিয়ে দেন জন বি. গুডএনাফ। ৯৭ বছর বয়সে নোবেল পেয়েছিলেন তিনি। এখন পর্যন্ত রসায়নে ২৭টি নোবেল ভাগ করে নিয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। আর রসায়নে নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে নারী বিজ্ঞানী রয়েছেন আটজন।
সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯০১ সাল থেকে প্রতি বছর এই পুরস্কার প্রদান করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস। তার নামে ও রেখে যাওয়া অর্থে এই পুরস্কার দেয়া হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা