২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

চট্টগ্রামে হাসিনা-কাদেরসহ ৭০৬ জনের নামে মামলা

নড়াইলে মামলা নিতে ওসিকে আদালতের নির্দেশ
-

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্রজনতার ওপর গুলি করার দুই ঘটনায় চট্টগ্রাম ও নড়াইলে পৃথক দুই মামলা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে চবি ছাত্র হৃদয় চন্দ হত্যা মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ২০৬ জনের নামোল্লেখ এবং আরো ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
অপরদিকে গত ৪ আগস্ট নড়াইলে ছাত্রজনতার ওপর হামলা, গুলির অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকসহ ৭২ নেতাকর্মীর নামে মামলা গ্রহণে সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্র হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৭০৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২০৬ জনের নাম উল্লেখ এবং আরো ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানায় শুক্রবার রাতে হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বন্ধু আজিজুল হক বাদি হয়ে মামলাটি করেন।
চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আফতাব উদ্দিন বলেন, এ মামলায় চট্টগ্রামের চার সাংবাদিক, সাবেক দুই ওসিসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ রেহেনা, সাবেক এমপি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম, খাগড়াছড়ির সাবেক এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, নরসিংদীর মনোহরদী থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া, কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি মোহাম্মদ মহসিন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, সময় টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান কমল দে, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক ও একুশে টিভির সাবেক আবাসিক সম্পাদক রফিকুল বাহার প্রমুখ।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ১ থেকে ৪০ নম্বর আসামিদের নির্দেশনা, অর্থায়ন ও প্ররোচনায় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন আন্দোলনকারীদের গুলি করার নির্দেশ দেন। এরপর ৪১ থেকে ২০৬ নম্বর এবং অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জন হামলা চালিয়ে অস্ত্রসহ আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ করে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই চান্দগাঁও এলাকায় সংঘর্ষের সময় হৃদয় চন্দ্র তরুয়া গুলিবিদ্ধ হন। ২৩ জুলাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নড়াইল প্রতিনিধি জানান, নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, সহ-সভাপতি ও নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র আঞ্জুমান আরাসহ ৭২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর আমলী আদালতের বিচারক জুয়েল রানা মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার আদেশ দিয়েছেন।
সদরের বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান এ মামলার বাদি হয়েছেন। বাদিপক্ষের আইনজীবী কাজী জিয়াউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত নড়াইল সদর থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদি ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, প্রায় ১৫ দিন ধরে মামলা করার জন্য বারবার সদর থানায় ধর্না দিলেও ওসি সাইফুল ইসলাম নেননি। আমাকে অনেকবার ঘুরিয়েছেন। বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়েছেন। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়ে মামলা করতে বিলম্ব হলো।
এ ছাড়া মামলায় আসামি করা হয়েছে- জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ কুন্ডু মিটুল, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান কায়েস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম উজ্জ্বল, সাধারণ সম্পাদক আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম পলাশ, জেলা যুবলীগের সভাপতি গাউসুল আজম মাসুম, সাধারণ সম্পাদক খোকন কুমার সাহা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল সিকদার নীল, সময় টিভির নড়াইল প্রতিনিধি সজীব রহমানসহ আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরো ৪০০ থেকে ৫০০ জন।


আরো সংবাদ



premium cement