প্রেসিডেন্টের নাচের পর এবার ক্রোয়েশিয়ার মন্ত্রীদের অভিনব উদযাপন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ জুলাই ২০১৮, ১০:০৫, আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮, ১০:০৯
বিশ্বকাপ কী-ই না করতে পারে। জয়ের পর ক্রোয়েশিয়ার জার্সি গায়ে ভিআইপিতে প্রেসিডেন্টের নৃত্য দেখেছেন অনেকেই। এবার তিনি একা নন পুরো মন্ত্রিসভা বৈঠক করল ক্রোয়েশিয়ার জার্সি গায়ে দিয়ে।
সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ক্রোয়েশিয়া। মডরিচ-রাকিটিচদের এমন সাফল্যে উচ্ছ্বাসে ভাসছে পুরো ক্রোয়েশিয়া। এই তালিকা থেকে বাদ যাননি দেশটির মন্ত্রীরাও। ক্রোয়েশিয়ার জার্সি গায়েই তারা অংশ নিয়েছেন মন্ত্রিসভার বৈঠকে। পুরো সময় তারা জাতীয় দলের জার্সি পরেছিলেন।
দল শেষ ষোলোর টিকিট নিশ্চিত করার পর মাঠে উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্র্যাবার কিটারোভিচ। ডেনমার্কের বিপক্ষে ম্যাচটি শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে বিমানের ইকোনমি ক্লাসে করে রাশিয়ায় পৌঁছান তিনি। ডেনমার্কের বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মডরিচ-রাকিটিচদের উৎসাহ দিয়েছেন। কোলিন্দা ছাড়াও সেমিফাইনাল ম্যাচটি দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ প্লেনকোভিচ। দলের জয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত প্লেনকোভিচ দেশে ফিরে জাতীয় দলের জার্সি গায়েই অংশ নিয়েছেন মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্যান্য মন্ত্রীরাও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আসেন।
শুধু তা-ই নয়, জার্সির পেছনে লেখা ছিল প্রিয় ফুটবলারের নাম। মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মন্ত্রীদের জার্সি গায়ে বৈঠকের ছবি ও ভিডিও। দেশে ফিরেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দিয়ে ফুটবলারদের প্রশংসায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লুকা মডরিচের দলের এই জয় ক্রোয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় উত্থান। এই জয় দেখিয়ে দিয়েছে দেশ ছোট হলেও হৃদয় অনেক বড়। ১৯৯৮ সালের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সকেও হার মানিয়েছে বর্তমান দল।’
রাশিয়া বিশ্বকাপের শুরু থেকেই চমকপ্রদ পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে যাচ্ছে ক্রোয়েশিয়া। গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনা, নাইজেরিয়া ও শেষ ম্যাচে আইসল্যান্ডকে হারিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে জায়গা করে নেয় তারা।
আরো পড়ুন : জয়ের পর ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্টের নাচ এখন ভাইরাল
রাশিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার ওপর চাপের ঝড় বইয়ে গেছে। বিশ্বকাপে আগে স্বাগতিক দেশের বিপক্ষে কখনো জয় পায়নি তারা। রাশিয়ার বিপক্ষে তাই ইতিহাস বদলাতে হলো। ওদিকে সোচি স্টেডিয়ামের পুরো দখলই ছিল স্বাগতিক দর্শকদের। কিন্তু সব কিছু পেছনে ফেলে ঠিকই ম্যাচে জয় তুলে নেয় ক্রোয়েশিয়া। আর দলের খেলার সময় ভিআইপি বক্সে দারুণভাবে দলকে উৎসাহ জুগিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ। রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সামনে নেচে উঠলেন বারবার। এমনকি স্বাগতিক রাশিয়াকে হারানোর পর খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে গিয়ে বিজয় উদযাপন করলেন নেচে নেচে।
কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ ক্রোয়েশিয়ার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট। তিনি কতটা ফুটবলপ্রেমী তার প্রমাণ অনেকেই টেলিভিশন পর্দায় ম্যাচ চলাকালেই দেখেছেন। খেলার ফাঁকে ফাঁকে কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচকে মাঝে মধ্যেই খুঁজে নিচ্ছিল টিভি ক্যামেরা। ভিআইপি বক্সে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উপস্থিত না থাকলেও ছিলেন প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ। ছিলেন ফিফা সভাপতি জিয়ানি ইনফান্তিনো।
ম্যাচের দিন প্রথমে ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে যাওয়ার পর রাশিয়া তা পরিশোধ করে। নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যেখানে ক্রোয়েশিয়া গোল করে এগিয়ে যায়। সেই গোলের সময় ভিআইপি গ্যালারিতে নেচে উঠতে দেখা যায় ক্রোয়েশিয়া প্রেসিডেন্টকে। পরে অবশ্য রাশিয়া গোল পরিশোধ করলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে ৪-৩ ব্যবধানে জয় ক্রোয়েশিয়ার।
খেলা শেষে ক্রোয়েশিয়া প্রেসিডেন্ট খেলোয়াড়দের সাথে জয় উদযাপন করতে চলে যান ড্রেসিং রুমে। সবাইকে নিয়ে নেচে সেমিফাইনালে ওঠা উদযাপন করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা ভাইরাল হতে সময় নেয়নি। দলকে উৎসাহ জুগিয়ে শিরোনামে আসা অবশ্য এটিই প্রথম নয় ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্টের। ডেনমার্কের বিপক্ষে ম্যাচেও গ্যালারিতে তার উদযাপন ভাইরাল হয়েছিল। ১৯৯৮ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠল ক্রোয়েশিয়া। ১১ জুলাই দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে দলটি।