১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬
`

হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল সানচেজকে

ডিফেন্ডার কার্লোস সানচেজকে - ছবি : সংগ্রহ

কি অসাধারণ জয়ই না পেল কলম্বিয়া। পোল্যান্ডকে ৩-০তে উড়িয়ে তারা এখন দারুণভাবে টিকে আছে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের মিশনে। দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে এই লাতিন দেশটিকে এখন জিততে হবে সেনেগালের বিপক্ষে। পোল্যান্ডের বিপক্ষে পরশু কলম্বিয়ানদের এই জয়ের আগে কি আতঙ্কেই না ছিল কলম্বিয়া দল। মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছিল দলের ডিফেন্ডার কার্লোস সানচেজকে। পরশু ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান কোচ হোসে লুইস পেকারম্যান।

কলম্বিয়া প্রথম ম্যাচে হেরে বসে জাপানের কাছে। ১-২ গোলে ওই হারের পর সানচেজকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। ম্যাচের তিন মিনিট বয়সেই লালকার্ড পান সানচেজ। তার ফাউলকে কেন্দ্র করে জাপান পায় পেনাল্টি। আর তাতে লিড এশিয়ার দেশটির। এরপর জয়। যা অনিশ্চিত করে লাতিন দেশটির পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়া। হুমকিদাতার দৃষ্টিতে, এতে স্বপ্ন শেষ কলম্বিয়ার। আর এর কারণেই তিনি মেরে ফেলার হুমকি দেন সানচেজকে।

কলম্বিয়াতে হুমকি শুধু হুমকিই নয়, তা পরিণত হয় বাস্তবে। ১৯৯৪ সালে এই কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার আন্দ্রেস এসকোবারের কথা সবার জানা। সে বছর বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে আত্মঘাতী গোল করে বসেন এসকোবার। দল হেরে যায় ১-২ গোলে। যা তাদের বিদায় নিশ্চিত করে। এরপর দল দেশে ফিরলে গুলি করে হত্যা করা হয় এসকোবারকে। তাই কার্লোস সানচেজকে দেয়া হুমকি একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মতো বিষয় নয়। তাই কলম্বিয়ান পুলিশ ইন্টারপোলের মাধ্যমে টুইটারে মৃত্যুর হুমকি দেয়া ব্যাক্তিকে সনাক্তের চেষ্টা করছে।

পোল্যান্ডের বিপক্ষে বড় ওই জয়ের পর কোচ পেকারম্যার এই অর্জন উৎস্বর্গ করলেন সানচেজের উদ্দেশ্যে। জানান , গত এক সপ্তাহ যাবত খুব বাজে সময় কাটাচ্ছিলেন সানেচজ। তাকে মেরে ফেলার হুমকি আসে কলম্বিয়া থেকে। এটা খুবই দু:খ জনক। এই সংবাদ শোনার পর দলের সব ফুটবলারই আতঙ্কে ছিলেন। বুঝাই যাচ্ছে সেখানে ফুটবল ছাড়াও অন্য কিছু হচ্ছে।

আরো পড়ুন : অচেনা রূপে চেনা প্রতিপক্ষ মেসিদের সামনে
রফিকুল হায়দার ফরহাদ, রাশিয়া থেকে
বিশ্বকাপ ফুটবলে আর্জেন্টিনার পিছু ছাড়ছে না নাইজেরিয়া। ১৯৯৪ সাল থেকে প্রায় প্রতিবারই তাদের সাথে সাক্ষাৎ ম্যারাডোনা-মেসির দেশের। আর সব সময়ই আর্জেন্টিনাকে জিততে হয়েছে ঘাম ঝড়িয়ে। এবার তাদের পঞ্চম বারের মতো দেখা হচ্ছে বিশ্বকাপে। আফ্রিকান দেশটি অবশ্য কখনই জিততে পারেনি তাদের বিপক্ষে। অন্য দিকে এই প্রথম দেশ দুটি গ্রুপের শেষ ম্যাচে লড়ছে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার নিশ্চয়তার জন্য। এই খেলায় জয়ের বিকল্প নেই মেসি বাহিনীর। অন্য দিকে ড্রতেও নক আউট পর্বের ছাড়পত্র মিলতে পারে নাইজেরিয়ানদের। মোট কথা এই দুই দলের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়াটা নির্ভর করছে আইসল্যান্ডের উপর। সেজন্য অবশ্য মঙ্গলবার অন্য খেলায় ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে পয়েন্ট খোয়াতে হবে আইসল্যান্ডকে।

১৯৯৪ সালের যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে প্রথম দেখা আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া। স্যাসমন সিয়াসিয়ার গোলে প্রথমে লিডও নিয়ে নেয় নাইজেরিয়া। পরে ম্যারাডোনা- আলফিও বাসিলের দলের রক্ষা ক্লাওডিও ক্যানেজিয়ার জোড়া গোলে। ওই হার সত্ত্বেও নাইজেরিয়া দ্বিতীয় রাউন্ডে গিয়েছিল। আর্জেন্টিনার বিদায় দ্বিতীয় রাউন্ডে রুমানিয়ার কাছে হেরে। ১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপে অবশ্য তাদের মোকাবেলা হয়নি।

তবে ২০০২ সালে ফের দেখা লাতিন ও আফ্রিকান এই দুই দেশের। জাপান-কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত সে প্রতিযোগিতায় বহু কস্টে ১-০তে জিততে হয়েছিল মার্সেলো বিয়েলসার দলকে। কর্নার থেকে আসা বলে হেড নেন স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল বাতিুস্তুতা। তাতে বোকা বনে যান নাইজেরিয়ান কিপার ও ডিফেন্ডারেরা। এরপর নাইজেরিয়ানরা চেষ্টা করেও সমতা আনতে পারেননি। অবশ্য এই জয়ের পরও আর্জেন্টিনার পক্ষে পরের রাউন্ডে যাওয়া সম্ভব হয়নি। ইংল্যান্ডের কাছে হার ও সুইডেনের সাথে ড্র করে বিদায় গ্রুপ পর্ব থেকে। একই পথে হাঁটে নাইজেরিয়াও।

২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে স্বয়ংসম্পূর্ণ আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ। লিওনেল মেসি, কার্লোস তেভেজ ও গঞ্জালো হিগুইন। এই তিন ফরোয়ার্ড থাকা সত্ত্বেও কোচ ম্যারাডোনার দলকে জিততে হয়েছিল ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল হেইঞ্জের হেডে। তা কর্নার থেকে আসা বলে। অবশ্য মেসির বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। কোনোটি রুখে দেন গোলরক্ষক। কোনোটি প্রতিহত হয় পোস্টে। অল্পের জন্য লক্ষ্য মিস হওয়া শটও ছিল কয়েকটি। নাইজেরিয়া শেষ পর্যন্ত প্রথম রাউন্ড খেলে বাড়ী ফিরলেও দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিল।

২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে আহমেদ মুসার দাপটে তো তটস্থ ছিল আর্জেন্টিনা। ২ গোল করেন আহমেদ মুসা। আলেসান্দ্রে সাবেলার দল অবশ্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মেসির জোড়া এবং মার্কোস রোহোর গোলে। ৩-২তে ম্যাচ জিতে নাইজেরিয়ারদের বিপক্ষ জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে। মঙ্গলবার কি সেই ধারা অব্যাহত থাকবে? নাকি এই পুরনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রথম জয়ের স্বাদ পাবে মুসা- মোসেজের দল!

১৯৯৬ এর আটলান্টা অলিম্পিক গেমসে নাইজেরিয়া ফাইনালে এই আর্জেন্টিনাকে ৩-২ গোলে হারিয়ে স্বর্ণ নিশ্চিত করেছিলো। অবশ্য ২০০৮ এর বেইজিং অলিম্পিকে ডি মারিয়ার গোলে নাইজেরিয়াকে ১-০ তে হারিয়ে স্বর্ণ ধরে রাখে আর্জেন্টিনা। কিন্তু এবার নাইজেরিয়া জানান দিয়েছে তাদের শক্তিমত্তার। ক্রোয়েশিয়ার কাছে হারলেও জিতেছে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা দল যেন পুরো ছন্নছাড়া।


আরো সংবাদ



premium cement