ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, কার প্রতি কত সমর্থন?
- শওকত আলী রতন
- ২৩ জুন ২০১৮, ১৪:৫২, আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮, ১৫:২৪
কোটি কোটি ফুটবল ভক্ত ও অনুরাগীদের মাতাতে, আনন্দে ভাসাতে শুরু হয়েছে বিশ্বকাপের জমজমাট আসর। ফুটবল জ্বরে কাঁপছে সারা দুনিয়া, পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। ফুটবল দুনিয়ায় কে ফেবারিট দল আর কে হবে চ্যাম্পিয়ন- এ নিয়ে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। হিসাব মেলাতে দেশের ফুটবলের সমর্থকেরা দিন-রাত একাকার করে ফেলেছেন। চায়ের স্টল থেকে শুরু করে মাঠ ঘাট, লঞ্চ, বাস ও ট্রেন কোথায় নেই ফুটবলের আলোচনা কিংবা সমালোচনা। প্রতি চার বছর পর পর বিশ্বকাপের আয়োজনকে কেন্দ্র করে দেশে চলে ব্যাপক প্রস্তুতি। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিশ্বকাপ শুরুর অন্তত একমাস আগে থেকেই প্রিয় দলের পতাকা উড়ানো, জার্সি কেনা আর প্রিয় তারকার ছবিসম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন বানানোর প্রতিযোগিতা। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন বাড়তি নজর কাড়ছে সবার। প্রত্যেক পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে শীর্ষে থাকার দলগুলোর গ্রুপ। একটি গ্রুপে ২০-৩০ জনের দল নিয়ে চলছে দলের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা। কে কতজন নিয়ে সমর্থন তৈরি করতে পারে এ নিয়েও চলছে তোড়জোড়।
দোহার উপজেলার ইউসুফপুর খাড়াকান্দা এলাকার ব্রাজিল সমর্থকদের নিয়ে একটি গ্রুপ করা হয়েছে। বিশ্বকাপে প্রতিটি খেলা একসাথে দেখে এবং হইহুল্লোড়ে মেতে উঠে। এমন দৃশ্য অন্য পক্ষের সমর্থদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।
আপনি ব্রাজিল না আর্জেন্টিনা দলের সমর্থক- এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে বারবার। এমন কোনো রাস্তাঘাট কিংবা অলিগলি বাদ নেই যেখানে চোখে পড়ে না বিদেশী ফুটবল দলের পতাকা। নির্মাণ করা হচ্ছে তোরণ। বাড়ির ছাদ, যানবাহন, বাস-লঞ্চ টার্মিনাল ও অফিস পাড়ায় কোথায় নেই পতাকা।
একদলের সমর্থকেরা প্রতিপক্ষের সমর্থকদের ঘায়েল করার জন্য রীতিমতো অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কেউ কাউকে তিল পরিমাণ ছাড় দিচ্ছে না। একই ছাদের নিচে বসবাস করেও কেউ ব্রাজিল দলের সমর্থক আবার কেউ আর্জেন্টিনা দলের সমর্থক। দাদা করছে একদল আর নাতি করছে অন্য দল এমনও অসংখ্য পরিবার রয়েছে।
বিশ্বকাপ ফুটবলে আটটি গ্রুপে মোট ৩২টি দল অংশগ্রহণ করলেও এককথায় একচেটিয়া সমর্থক রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার। নারী সমর্থকসহ সব পেশায় কমবেশি আর্জেন্টিনার সমর্থক রয়েছে। ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসিকে নিয়ে চলছে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা।
এরপরই রয়েছে কিংবদন্তি ফুটবলার কালো মানিকখ্যাত ফুটবলের রাজা পেলের দেশ ব্রাজিল। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের সমর্থকেরা দলের স্ট্রাইকার নেইমার বলতে বলতে গলা ফাটিয়ে ফেলছেন।
এবারের বিশ্বকাপে বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ অংশগ্রহণ করায় দলগুলোর প্রতি নৈতিক সমর্থন রয়েছে এবারের বিশ্বকাপ ফুটবলে। রয়েছে এশিয়ার দলগুলোর প্রতি বাড়তি নজর। এশিয়ার দলগুলো বিশ্বকাপে ভালো করতে পারলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার অন্ধভক্ততা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে বলে অনেকেই মনে করেন।
বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরকে কেন্দ্র করে একমাস আগে থেকেই ক্রীড়া সামগ্রীর দোকানগুলোতে বেচাবিক্রি বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানীরা। বিশেষ করে, পতুগাল, জার্মানি, স্পেন, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের জার্সি বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ফুটবল ও পতাকার বিক্রি হচ্ছে ধুমছে। যা বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বিক্রি বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। রাজধানীর গুলিস্তানে মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে ক্রীড়া সামগ্রীর দোকানগুলোতে বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সারা বছর কমেবেশি বিক্রি হলেও ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। কেবল রাজধানীই নয় প্রিয় ফুটবল দলের পতাকা আর জার্সি পৌঁছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালা ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন জার্সি, পতাকা, স্টিকারসহ নানা উপকরণ।
মওসুমি ব্যবসা করে অনেকে ভালো আছেন। দেশের কোটি কোটি ফুটবলভক্ত উন্মাদনায় মাতোয়ারা। খেলছে ৩২টি দল, কিন্তু কোটি কোটি ভক্ত সমর্থক নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন। সারা দেশের ফুটবলপ্রেমীরা প্রিয় দলের পতাকা গাছের ডালে, রাস্তায় আড়াআড়িভাবে ও বাড়ির ছাদে উড়িয়েছেন। বিশ্ব ফুটবলে বাংলাদেশ পেছনের সারিতে থাকলেও সমর্থকদের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সামনের কাতারে। ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোর তুলনায় তৃতীয় বিশ্বের এই বাংলাদেশে বিশ্বকাপ উত্তেজনা বেশিই বলা চলে। ২১১টি দেশের মধ্যে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৯৭তম। তবুও বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ফুটবলের উত্তেজনা তুঙ্গে। গত বিশ্বকাপে জার্মানির এক সমর্থক নিজের কৃষি জমি বিক্রি করে সবচেয়ে বড় পতাকা বানিয়ে আলোচনার শীর্ষে উঠেছেন। এবারে তিনি জার্মানির সবচেয়ে বড় পতাকা বানিয়েছেন। এমনিভাবে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ১০০-১৫০ গজ কাপড়ের পতাকা উড়ছে।
এ বছর বিশ্বকাপে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জয়নাল আবেদিন টুটুল নিজের ছয় তলা বাড়ি পুরোটাই ব্রাজিলের পতাকার রঙে রঙ করিয়েছেন। এ ঘটনা সারা দেশের মানুষের নজর কেড়েছে। অন্য দিকে, বরিশাল সিটির জামাল মিয়ার বাড়ি আর্জেন্টিনা বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কারণ, বাড়িটি আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে রঙ করা হয়েছে। এমন হাজারো অদ্ভুত অদ্ভুত ঘটনা বা পাগলামি ঘটছে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা নিয়ে।
টাঙ্গাইল উপজেলার সখীপুর উপজেলায় ব্রাজিলের এক সমর্থক পতাকা টানাতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে মৃত্যুবরণ করেছে। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় রোববার বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত কয়েকটি বিশ্বকাপ আসরকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে একাধিক ভক্ত সমর্থক প্রাণ হারিয়েছেন।
প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। প্রথমে তর্ক, একপর্যায়ে জড়িয়ে যাচ্ছেন মামামারিতে। খেলা নিয়ে সারা দেশে চলছে জমজমাট জুয়া। জুয়া খেলার টাকা নিয়ে হচ্ছে সংঘর্ষ এমন সংবাদ পত্র পত্রিকায় উঠে আসছে। এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়, তবুও ঘটছে অনাকাক্সিক্ষত এসব ঘটনা।
তবে আসল কথা হলো- পৃথিবীর যেকোনো দেশের সমর্থকদের চেয়ে আমাদের দেশে কৌতুহল একটু বেশি। বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে কী না হয় আমাদের দেশে। প্রিয় তারকার ছবিসম্বলিত ফেস্টুন-ব্যানার আর বিদেশী পতাকায় ছেয়ে যায় আকাশ। বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম আসর ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে শুরু হলেও ৯০-এর দশকের পর থেকেই আমাদের দেশের সমর্থকরা প্রিয় দলেরা পতাকা ও প্রিয় তারকার ছবি এঁকে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন। প্রযুক্তির পরির্বতনের সাথে সাথে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চলছে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে নানা ধরনের প্রচার-প্রচারণা, সেই সাথে মন্তব্য তো থাকছেই।
প্রায় ১৬ হাজার কিলোমিটার দূরের দেশ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থনে বাংলাদেশের ফুটবল দর্শকদের উন্মদনাকে নিছক পাপলামি ছাড়াই কিছুই দেখছেন না অনেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রিকেটের মতো যদি বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ করতে পারত, তাহলে নিজের দেশকে নিয়ে মাতোয়ারা থাকত। তার পরও এশিয়ার কোনো দেশ খেলার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে বড় একটি সমর্থক তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবলক যাতে আগামীতে এগিয়ে যেতে পারে সেজন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। ফুটবল দর্শকদের কথা বিবেচনা করে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের আরো মনোযোগী হওয়া দরকার। তাহলেই বিদেশী দলের সমর্থকদের সংখ্যা অনেকাংশে কমে যাবে।
আরো পড়ুন : কত রঙ্গ জানোরে মানুষ
জোবায়ের রাজু
রনি ব্রাজিল দলকে সাপোর্ট করার প্রধান কারণ হচ্ছে নেইমার। এই ফুটবলার তার খুব পছন্দের। এবার ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে বাংলাদেশের যে দৃশ্যটি ভালো লেগেছে রনির, তা হচ্ছে ব্যানার। হাটবাজার থেকে শুরু করে গাঁও-গেরামের প্রতিটি রাস্তার চারপাশে শোভা পাচ্ছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমর্থকদের পতাকাময় ব্যানার। এসব ব্যানার জুড়ে সাপোর্টারদের ছবি দেখা যাচ্ছে। যারা আর্জেন্টিনা ভক্ত, তারা কয়েক বন্ধু মিলে বড় সাইজের একটা পতাকার কালারের ব্যানার বানিয়ে নিজেদের ছবি সংযোজন করে হাটবাজার আর গ্রামের রাস্তার মাঝখান বরাবর ওপরে টাঙিয়ে দিচ্ছে। এত করে সবাই জানছে কে কোন দলের পক্ষে।
বিষয়টি দারুণ আমলে নিয়েছে রনি। ব্রাজিলের পতাকাময় ব্যানারে নিজের ছবি দেখতে সে ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। সে ব্যানার ঝুলিয়ে দেবে নিজেদের বাড়ির সামনের গেট বরাবর রাস্তার ওপরে। তারপর লোকে দেখবে সে কোন দলের অনুরাগী। এই দায় থেকে রনি চায় রাস্তার পাশের ওসব ব্যানারে তার চেনা জানা যেসব ইয়ং জেনারেশনকে দেখছে, তাদের মতো এ রকম একটি ব্যানারে রনির ছবিও থাকুক। তবে ব্যানারে সে ছবিটি হবে রনির একার। অবশ্য একা নয়, নেইমারের ছবিও থাকতে হবে। ব্যানারের ডানপাশে নেইমারের ছবি আর বামপাশে রনির।
এ ব্যাপারে রনিকে হেল্প করতে আসে সবুজ। কিভাবে কোথা থেকে ব্যানার বানাবার অর্ডার দিতে হবে, রনির কোন ছবিটা ব্যানারে শোভা পাবে- এসব বিষয়ে সবুজই রনিকে উপযুক্ত সহায়তা করেছে। সব মিলিয়ে ব্যানারের খরচ এসেছে এক হাজার ৫০০ টাকা। তিনটি পাঁচশত টাকার কচকচে নোট বন্ধু সবুজের হাতে সঁপে দিয়ে অনাগত ব্যানারের অপেক্ষায় থাকার পালা শুরু করে রনি। ব্যানার বানানোর অর্ডার দিয়ে এসে সন্ধ্যায় সবুজ জানায় তিন দিন পর ব্যানার আসবে। ব্যানারের খরচ হিসেবে সবুজ রনির কাছ থেকে যে এক হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছে, সেখান থেকে ৭০০ টাকা মেরে দিয়েছে সবুজ। কারণ ব্যানার বানাতে ৮০০ টাকাই যথেষ্ট। রনি এসব খতিয়ে দেখেনি। তার বাবার অনেক টাকা। ৭০০ টাকা কে মেরে দিয়েছে আর দেয়নি, এসবে রনির সূ² কৌশল জানার আগ্রহ নেই।
২.
ব্যানার দেখে রনির চোখ ছানাবড়া। এত সুন্দর ব্যানার। ব্যানারে নেইমার আর তার ছবি দুটো বেশ মানিয়েছে। এই সুন্দর কাজটি করার জন্য বখশিশ হিসেবে সবুজের পকেটে ৫০০ টাকা ভরে দেয় রনি।
একটু পর বাড়ির সামনের গেটে ঝুলানো হবে এই ব্যানার। একঝাঁক কিশোর এসে ভিড় জমায় সে দৃশ্য দেখতে। রনির মনে খুশির নাচন। ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়ার জন্য দু’টি ছেলেকে নিয়োগ করেছে রনি। তাদেরকে বিপুল অঙ্কের পারিশ্রামিক দেয়া হবে বলে মহানন্দে তারা ব্যানার ঝোলানোর দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত।
ঠোঁটে পরম হাসির রেশ টেনে রনি যখন ব্যানার ঝোলানোর কার্যক্রম দেখছে, এমন সময়ে একটা ভিক্ষুক এসে রনির কাছে সাহায্য চেয়ে আবদার করে- ‘ক’টা টাকা দেন না ভাই। খুব ক্ষিধা পাইছে।’ ভিক্ষুকের কথায় মন নেই রনির। সে ব্যানার ঝোলানো দেখছে। ভিক্ষুক আবারো আবদার করে-‘ভাই দেন না টাকা।’ রনি ধীরে বলে-‘এখন যান। মাফ করেন।’ কিন্তু নাছোড়বান্দা ভিক্ষুক তবুও আশা ছাড়ে না। ক’টা টাকার আশায় সে যখন নত গলায় বলে-‘ক’টা টাকা দিলে কি হয় ভাই!’, শোনে রনির মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। ফলে সে রাগে ক্ষোভে ভিক্ষুকের গালে কষে এক চড় মারে। কাঁদতে কাঁদতে চলে যায় ভিক্ষুক।
ব্যানার ঝোলানোর কাজ শেষে তৃপ্তির হাসি ফোটে রনির মুখে। ব্যানারের ছবি তোলে ফেসবুকে আপলোডও হয়ে গেছে ততক্ষণে।
৩.
রাতে রনি স্বপ্ন দেখে সেই ভিক্ষুককে, যাকে সে চড় মেরেছে। সে অসহায় গলায় বলছে- ‘অযথা অনেক টাকাই আপনারা খরচ করেন, বিশ্বকাপের পতাকা আর ওসব ব্যানারের পেছনে বহু টাকাই নষ্ট করেছেন। অথচ পেটের দায়ে আপনাদের কাছে হাত পাতার অপরাধে আমাদের গালে চড় জোটে।’
ভোরের আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভাঙার পর রনি জানতে পারে কালরাতে কারা যেন তার স্বপ্নের ব্রাজিলের পতাকাময় ব্যানার ছিঁড়ে পেলেছে। সে করুণ দৃশ্য দেখতে ঘুম ঘুম চোখে ব্যানারের কাছে এসে রনি তাকায় ব্যানারের দিকে। হায়! ব্যানার ছিঁড়ে লণ্ডভণ্ড...।
ঘটনাটা জানাতে সবুজকে কল দেয় রনি। ওপার থেকে সবুজ জানায়- ‘এসব আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কাজ। টেনশন করিস না বন্ধু। আরেকটা ব্যানার বানানোর জন্য টাকা রেডি কর। এবারের ব্যানারটা আরো বড় করে বানিয়ে দেবো।’
আমিশাপাড়া, রাজু ফার্মেসি, নোয়াখালী