ফ্রান্সে বাম বিপ্লবে ত্রিশঙ্কু পার্লামেন্টের শঙ্কা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪০
ফরাসি নির্বাচনে বাম বিপ্লব! চমক দিয়ে ফ্রান্সের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেল বামেদের ফ্রন্ট। যদিও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার ধারেকাছেও যেতে পারেনি। দ্বিতীয় রাউন্ডের ফলাফল গণনার পরে দেখা গেছে যে বামেদের ফ্রন্ট ১৮২টি আসনে জিতেছে। ১৬৮টি আসনে জিতেছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জোট। আর মারিন ল্য পে'র অতি ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যালি মাত্র ১৪৩টি আসন পেয়েছে। অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগারের ধারেকাছে পৌঁছাতে পারেনি কোনো দল। ফ্রান্সের ৫৭৭টি আসনের জাতীয় সংসদ নিয়ন্ত্রণের জন্য ২৮৯টি আসন প্রয়োজন হয়। সেই পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু রাজনৈতিক নয়, সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, ত্রিশঙ্কু পার্লামেন্টের জেরে ফ্রান্সের অর্থনীতি, শেয়ার বাজার, বৈদেশিক নীতির মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
আজ ইস্তফা দেয়ার পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী
সংসদ নির্বাচনে সেই ফলাফল সামনে আসার পরে সোমবারই ইস্তফা দেয়ার পরিকল্পনা করছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তের আমাদের দেশ অভূতপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। আর কয়েক সপ্তাহ পরেই বিশ্বকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।’ উল্লেখ্য, এবার অলিম্পিক্স হচ্ছে ফ্রান্সের প্যারিসেই। আগামী ২৬ জুলাই থেকে শুরু হবে প্যারিস অলিম্পিক্স।
অ্যাডভান্টেজ অতি ডানপন্থীদের, মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল
অথচ ফ্রান্সে যে এরকম পরিস্থিতি হতে পারে, তা ভোটের আগে পর্যন্ত অনুমান করতে পারেনি রাজনৈতিক মহল। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে অতি ডানপন্থীদের (ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিরা ছিলেন) দুর্দান্ত ফলাফল দেখে কার্যত জুয়া খেলেন ম্যাক্রোঁ। ভেঙে দেন জাতীয় সংসদ। হয় নির্বাচন।
সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা ছিল যে অতি ডানপন্থীদের ন্যাশনাল র্যালিই এবার ক্ষমতায় আসবে। প্রথম রাউন্ডের ভোটগ্রহণ পর্বেও সেই ইঙ্গিত মিলেছিল। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রথমবার ফ্রান্সে কোনো অতি ডানপন্থী দল ক্ষমতায় আসত। যে দলের অভিবাসন-বিরোধী নীতিই মারিনদের জয়ের পথ প্রশস্ত করবে বলে অনুমান করেছিলেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
‘গায়ে কাঁটা দিচ্ছে’, উচ্ছ্বাসে ফুটছে বামেরা
কিন্তু যাবতীয় অঙ্ক ওলট-পালট করে দিয়েছে বামেদের ফ্রন্ট। আর সেই অপ্রত্যাশিত ফলাফলে উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছে বামেরা। প্যারিসে বামেদের ফ্রন্টের সভায় যোগ দেয়া দর্শনের শিক্ষার্থী মারি দেলিলে বলেন, ‘আমি খুব খুশি। অভাবনীয় উন্মাদনা দেখতে পাচ্ছি। গায়ে কাঁটা দিচ্ছে আমার। দারুণ লাগছে।’ অপর এক বামকর্মী দালিল দিয়াব বলেন, 'কী যে শান্তি হচ্ছে, সেটা বলে বোঝাতে পারব না। আগামিদিনের ফ্রান্সে বামেদের সামনে সম্ভাবনার এক নয়া দিগন্ত উন্মোচিত হয়ে গেল।'
সেই উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটে প্যারিসের রিপাবলিক স্কোয়ারেও। সেখানে বামেদের জমায়েতে উচ্ছ্বাসে ভেসে যান অনেকে। তবে তারইমধ্যে একজন বলেন, ‘এটা জয়। কিন্তু এটা আপেক্ষিক জয়। আমাদের লড়াই জারি রাখতে হবে। এখনও লড়াই শেষ হয়ে যায়নি। কিন্তু নিশ্চিতভাবে একটা স্বস্তি পাওয়া গেল। এরকম যে হবে, সেটা আমরা ভাবিনি। অভাবনীয়।’
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস এবং অন্যান্য
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা