ফ্রান্সে পার্লামেন্ট ভেঙে নির্বাচনের ঘোষণা ম্যাক্রোঁর
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১০ জুন ২০২৪, ১০:২৪
নিজ দেশে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডানপন্থীদের কাছে ধরাশায়ী হয়ে আগাম জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
অতি-দক্ষিণপন্থীরা প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর দলের থেকে দ্বিগুণ ভোট পেয়েছে। ম্যাক্রোঁর দল পেয়েছে ১৫ শতাংশ ভোট ও ন্যাশনাল র্যালি পেয়েছে ৩০ শতাংশ ভোট। এরপর ম্যাক্রোঁ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে দিয়ে আবার নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
ম্যাক্রোঁর ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ জুন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের ভোটের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ৭ জুলাই।
ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘যারা ইউরোপকে রক্ষায় কাজ করতে চায়, সেই সমস্ত দলের জন্য এটা মোটেও ভালো ফলাফল নয়। অতি ডানপন্থি দলগুলো... মহাদেশের সর্বত্রই ভালো করছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে।’
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ২১টি দেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় রোববার। এ ভোটে জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়াতে অতি-ডানপন্থীরা ভালো ফল করেছে। কিন্তু তারা মধ্যপন্থীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া আটকাতে পারছে না।
ফলাফল থেকে বোঝা যাচ্ছে, উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন ২০২৯ পর্যন্ত ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট থাকবেন।
উরসুলা বলেছেন, ‘আমরা ইউরোপীয় নির্বাচন জিতছি। আমরা এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী দল। আমরা স্থায়িত্বের প্রতীক। মধ্যপন্থীরা জয় ধরে রাখতে পেরেছে।’
২৭টি দেশের সরকারি প্রোজেকশন দেখাচ্ছে, উরসুলার মধ্য-ডানপন্থী ইউরোপীয়ান পিপলস পার্টি (ইপিপি) ৭২০টি আসনের ইইউ পার্লামেন্টের ১৯১টি আসনে তারা জিতেছে। দ্বিতীয় স্থানে আছে মধ্য-বামপন্থী সোস্যালিস্টস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটরা (এস অ্যান্ড ডি)। তাদের শক্তি সামান্য কমলেও তারা ১৩৫টি আসন পেয়েছে। তৃতীয় স্থানে আছে উদারপন্থি রিনিউ গ্রপ, তারা পেয়েছে ৮৩টি আসন।
উরসুলা বলেছেন, ‘আমরা চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে দুর্গ গড়ে তুলব।’ এভাবেই মধ্য-বামপন্থী ও উদারবাদীদের বার্তা দিয়েছেন উরসুলা।
অতি-দক্ষিণপন্থীদের ভালো ফল
ফ্রান্সে অতি-দক্ষিণপন্থী লে পেনের ন্যাশনাল র্যালি, অস্ট্রিয়ায় ফ্রিডম পার্টি অফ অস্ট্রিয়া এবং জার্মানিতে অলটারনেটিভ অফ জার্মানি (এএফডি) ভালো ফল করেছে। কিন্তু তারা গোটা ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্রকে অবিলম্বে বদলে দেয়ার মতো জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি।
এটা ঠিক, আগের তুলনায় অতি-দক্ষিণপন্থীদের সদস্যসংখ্যা বাড়বে। তারা আরো জোরালোভাবে তাদের মতামত জানাতে পারবেন।
ফ্রান্সের অবস্থা
অতি-দক্ষিণপন্থীরা সবচেয়ে ভালো হয়েছে ফ্রান্সে। তারা প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর দলের থেকে দ্বিগুণ ভোট পেয়েছে। ম্যাক্রোঁর দল পেয়েছে ১৫ শতাংশ ভোট ও ন্যাশনাল র্যালি পেয়েছে ৩০ শতাংশ ভোট। এরপর ম্যাক্রোঁ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে দিয়ে আবার নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
শলৎসের দল তৃতীয় স্থানে
জার্মানিতে চ্যান্সেলর শলৎসের দল এসপিডি তৃতীয় স্থানে আছে। শলৎসের জোটশরিক গ্রিন পার্টিও ১০টি আসন হারাচ্ছে।
অতি-দক্ষিণপন্থী এএফডি আছে দ্বিতীয় স্থানে। তবে জার্মানিতে রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ সবচেয়ে বেশি ভোট পাচ্ছে।
মধ্য-ডানপন্থী ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটস (সিডিইউ)-এর জার্মান বিরোধী দলীয় নেতা ফ্রিডরিশ মার্ৎস বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে তার দলের জয় প্রত্যাশিত। এটা বুঝা যাচ্ছে জার্মান ভোটাররা অবশ্যই পরিবর্তন চায়।
অন্য দেশের ফল
ইতালিতে মেলোনি ও পোল্যান্ডে মধ্যপন্থী নেতা ডনাল্ড টাস্কের দল ভালো ফল করতে চলেছে। সুইডেন, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডে বামপন্থী ও গ্রিন পার্টির ফল ভালো ফল করেছে। ডেনমার্কে ৯৯ শতাংশ ভোট গণনা হয়ে গেছে। এসএফ যাদের গ্রিন লেফট বলা হয়, তারা ১৭ দশমিক চার শতাংশ ভোট পেয়ে চারটি আসনে জিতেছে। তারাই ইইউ-তে ডেনমার্কের সবচেয়ে বড় দল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সোস্যাল ডেমোক্র্যাট তিনটি আসনে জিতলেও তাদের ভোট পাওয়ার হার কমেছে।
পর্তুগালে বিরোধী সোস্যালিস্ট পার্টি আটটি আসনে ৩২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। সাতটি আসনে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স ৩১ শতাংশ ভোট পেয়েছে। বিদেশে দূতাবাসে যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের বাদ দিয়ে অন্য সবার ভোট গণনা হয়ে গেছে।
চেক প্রজাতন্ত্রে বিরোধী এএনও ২৬ শতাংশ ভোট পেয়ে এক নম্বরে আছে। তারা সাতটি আসনে জয়ী হয়েছে। ২২ শতাংশ ভোট ও ছয়টি আসন পেয়েছে মধ্য-ডানপন্থী জোট এসপিওএলইউ।
সূত্র : এএফপি ও ডয়চে ভেলে
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা