পর্ন সাইটে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর ডিপফেক ভিডিও!
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২২ মার্চ ২০২৪, ১০:১৫
এবার ডিফফেকের শিকার ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। বেশ কয়েকটি ভিডিওতে তার মুখ ব্যবহার করে অ্যাডাল্ট সাইটে আপলোড করার অভিযোগ উঠেছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আমেরিকার একটি কনটেন্ট ওয়েবসাইটে নাকি সেগুলো ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ সেই ভিডিওগুলো দেখেছেন। এই ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির পাশাপাশি মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন মেলোনি।
বিবিসি সূত্রে খবর, ইতালির প্রধানমন্ত্রীর এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন যে এক পর্ণ অভিনেতার সাথে মেলোনির ডিফফেক ভিডিও বানিয়ে আমেরিকার একটি অ্যাডাল্ট সাইটে আপলোড করা হয়েছিল। মাসের পর মাস ধরে সেগুলোতে লাখ লাখ ভিউ হয়েছে। ২০২২ সালে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেছিলেন মেলোনি। অভিযোগ, তারও আগে মেলোনির মুখ ব্যবহার করে ভিডিও বানিয়ে তা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। সম্প্রতি বিষয়টি তাদের নজরে আসে। এর পরই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। আদালতের দ্বারস্থ হন মেলোনি।
বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘটনায় বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি ও তার বাবার (৭৩) দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। বাবা ও ছেলে মিলে নাকি ওই ভিডিওগুলো বানিয়েছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দুজনের বিরুদ্ধেই মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। যে মোবাইল থেকে ভিডিওগুলো আপলোড করা হয়েছিল তার সূত্র ধরেই ওই দুজনের সন্ধান মিলেছে।
জানা গেছে, আগামী ২ জুলাই সাসারির একটি আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার কথা রয়েছে মেলোনির। এই ঘটনায় ইতালির প্রধানমন্ত্রী এক লাখ ইউরোর ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। এনিয়ে মেলোনির আইনজীবী মারিয়া গিউলিয়া মারোঙ্গিউ জানিয়েছেন, জর্জিয়া মেলোনি যে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন সেটি যদি মঞ্জুর করা হয়, তাহলে তা অন্য কাজে লাগানো হবে। তিনি ক্ষতিপূরণের গোটা অর্থ পুরুষের সহিংসতার শিকার এমন মহিলাদের জন্য তৈরি তহবিলে দান করে দেবেন। এই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে তিনি আসলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে চেয়েছেন। এই ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার মহিলারা যাতে ভয় না পান এবং নির্দ্বিধায় নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারেন তাই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতালির আইন অনুসারে, কিছু নির্দিষ্ট মানহানির মামলা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। এবং তা প্রমাণিত হলে অপরাধীদের কারাদণ্ডও হতে পারে।
উল্লেখ্য, ডিপফেক হলো একটি এআই প্রযুক্তি। যার মাধ্যমে একজনের ভিডিওতে আরেকজন মুখ বা শরীরের যেকোনো অংশ খুব সহজেই পাল্টে ফেলা যায়। ওই ছবি বা ভিডিও দেখে আপাতভাবে বোঝাই যায় না, এই ছবি বা ভিডিও আসল নয়, নকল। এমনকি, বদলে ফেলা যায় কণ্ঠস্বরও। ২০১৭ সালে রেডইট সোশাল মিডিয়ার হাত ধরে প্রথম প্রকাশ্যে আসে এই ডিপফেক প্রযুক্তি। সেখানে একবারে পাল্টে ফেলা হয়েছিল গাল গোডো, টেলর শিফট, স্কারলেট জহনসানের। আর তার পর থেকেই গোটা দুনিয়ায় ত্রাস হয়ে উঠেছে ডিফফেক। সাধারণ মানুষ থেকে নামকরা তারকারাও এর শিকার হচ্ছেন।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন