ইউক্রেনে ইউরোপের সেনা পাঠাতেও প্রস্তুত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৩৪
রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহায়তার সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিতে প্রস্তুত নন। এমনকি প্রয়োজনে সেনাবাহিনী পাঠানোর কথাও বলেছেন তিনি।
সোমবার প্যারিসে ইউক্রেন সংক্রান্ত ইউরোপীয় সম্মেলনে উপস্থিত ইউরোপীয় নেতাদের সাথে আলোচনার পর ম্যাক্রোঁ গেশের অভ্যন্তরে ও যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার আরো কড়া অবস্থানের উল্লেখ করেন। তার মতে, এমন অবস্থায় ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে রাশিয়ার পরাজয় অপরিহার্য। শুধু ইউক্রেন নীতির কারণে নয়, সার্বিকভাবে রাশিয়ার আগ্রাসী মনোভাব বেড়ে চলেছে বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মন্তব্য করেন।
রাশিয়ার হামলা মোকাবেলা করতে ইউক্রেনের সহায়তা সম্পর্কে ইউরোপে নীতিগত ঐকমত্য থাকলেও খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর প্রশ্নে মতপার্থক্য রয়েছে। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরেই জার্মানি সে দেশকে সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা দিলেও সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে নারাজ। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ সম্প্রতি ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে নিজের দ্বিধার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। জার্মান অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালালে জার্মানিও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
ম্যাক্রোঁ স্বীকার করেন যে ইউরোপীয় সেনাবাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে এখনো কোনো ঐকমত্য নেই। তবে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’র স্বার্থে তিনি কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিতে প্রস্তুত নন। স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো মনে করিয়ে দেন যে দুই বছর আগে রাশিয়ার হামলার শুরু হওয়ার পরেও অনেকে ইউক্রেনকে ট্যাংক বা যুদ্ধবিমান দেয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার মতে, বিনয়ের সাথে স্বীকার করা উচিত যে অবশেষে ছয় থেকে ১২ মাস দেরিতে সেই সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ প্যারিস সম্মেলনের পর বলেন, আপাতত ইউক্রেনের কমে আসা গোলাবারুদ ও অস্ত্রশস্ত্রের প্রেক্ষাপটে অবিলম্বে আরো সামরিক সহায়তার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আরো বেশি ও আরো দ্রুত মাঝারি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা সরবরাহ করে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে চায় ইউরোপ। এমনকি ইউরোপের বাইরে থেকেও গোলাবারুদ কিনতে ইউক্রেনকে সাহায্য করার পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে প্যারিস সম্মেলনে যোগ দেন। সংক্ষিপ্ত বার্তায় তিনি সমবেতভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তার মতে, পুতিনকে কিছুতেই ‘আমাদের সাফল্য’ ধ্বংস ও অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধেও আগ্রাসন চালাতে দেয়া হবে না। তবে সেই সংগ্রামে পশ্চিমা সহায়তা সম্পর্কে ইউক্রেনে কিছুটা হতাশা দেখা যাচ্ছে। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ রোববার বলেন, পশ্চিমা সামরিক অঙ্গীকারের প্রায় অর্ধেক অনেক দেরিতে এসে পৌঁছাচ্ছে। জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, ইইউ যে ১০ লাখ গোলাবারুদ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার মাত্র ৩০ শতাংশ ইউক্রেন হাতে পেয়েছে। মার্কিন সংসদে বিশাল সামরিক সাহায্যের প্রস্তাব আটকে থাকায়ও যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেন কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে