২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থীদের বিরুদ্ধে জনসমাবেশ

জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থীদের বিরুদ্ধে জনসমাবেশ - ছবি : সংগৃহীত

জার্মানির বিভিন্ন শহরে উগ্র ডানপন্থী এবং অভিবাসনবিরোধী রাজনৈতিক দল এএফডির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সপ্তাহান্তে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। রোববারেও একাধিক শহরে হয়েছে গণবিক্ষোভ।

জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রতিবাদীদের।

রোববার বার্লিন থেকে একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘এই মানুষগুলো আমাদের সকলকে সাহস জোগায়। তারা আমাদের গণতন্ত্রকে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করছে। তারা আমাদের সংবিধান রক্ষা করছে। তারা মানবতাকে রক্ষা করছেন।’

রোববার মানুষ আবার জার্মানির রাস্তায় নেমেছেন। জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল এএফডির বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থী নাগরিকেরা জোরাল সমাবেশ করে। বার্লিন, কোলন, ড্রেসডেন, লাইপজিশ এবং বনসহ একাধিক জায়গায় রোববারেও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

এআরডি জানিয়েছে, মিউনিখের পুলিশ বলেছিল যে ২৫ হাজার পর্যন্ত অংশগ্রহণকারী সমাবেশে যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভিড়ের কারণে একটা সময় পর বিক্ষোভ সমাবেশ বন্ধ করে দেয়া হয় বলে পুলিশের মুখপাত্র বার্তাসংস্থা ডিপিএকে জানিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, আনুমানিক ৮০ হাজার অংশগ্রহণকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি বলে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রায় দুই লাখ মানুষ মিউনিখের মিছিলে যোগ দিয়েছিল। কোলনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিলে পা মিলিয়েছেন।

বার্লিনে সপ্তাহান্তে সক্রিয় প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে। প্রায় তিন লাখ বিক্ষোভকারী ইতোমধ্যেই শনিবার সারাদেশের শহরগুলোতে জড়ো হয়। গণণাধ্যম এআরডি জানায়, বিক্ষোভকারীরা ‘নাৎসি আউট’-এর মতো পোস্টার নিয়ে এসেছিলেন।

বাভারিয়ার দক্ষিণ থেকে উত্তর সর্বত্র বিক্ষোভ হয়েছে। হামবুর্গ শহর এবং পশ্চিমের শহরগুলো যেমন ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে এরফুর্ট পর্যন্ত, পূর্বে সালেতেও (যেখানে এএফডি প্রায় ৩০ শতাংশ সমর্থন পেয়েছে সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী) বিক্ষোভ হয়েছে। রোববারেও এই জায়গাগুলোয় জনসমাবেশ হতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছিল।

এমনকি নর্থ সির সিল্ট রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত নয়, সেখানেও প্রায় ৬০০ জন অতিডানপন্থীদের বিরুদ্ধে সপ্তাহান্তের বিক্ষোভ অংশ নেয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সপ্তাহান্তে ভয়াবহ ঠান্ডা আবহাওয়া সত্ত্বেও হামবুর্গ, ফ্রাঙ্কফুর্ট, হানোফার, কাসেল, ডর্টমুন্ড, ভুপারটাল, কার্লশ্রুহে, নুরেমবার্গ, এরফুর্ট এবং অন্য জার্মান শহরে সবমিলিয়ে শনিবারে আনুমানিক তিন লাখ মানুষ জড়ো হয়। তাদের হাতের পোস্টারে লেখা ছিল ‘ফ্যাসিবাদ বিকল্প নয়।’

সম্প্রতি একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা থেকে জানা গেছে যে এএফডি সদস্যরা নভেম্বরে উগ্রডানপন্থীদের একটি সভায় যোগ দেয়। পটসডামের মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারীরা আলোচনা করেছেন। আশ্রয়প্রার্থী এবং অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, এমনকি সমাজে যথেষ্ট একীভূত হননি, এমন কারো জার্মান পাসপোর্ট থাকলেও তাদের প্রত্যাবাসন করা হতে পারে বলে আলোচনায় উঠে এসেছে।

অনুসন্ধানী আউটলেট কারেকটিভের প্রতিবেদন ১০ ​জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। ফলে জার্মানিতে একটি আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যেখানে মানুষ আতঙ্কিত।

সাম্প্রতিককালে পূর্ব-জার্মানির তিনটি নির্বাচনে ভোটের সংখ্যা বেড়েছে এএফডির। জার্মান রাজ্যগুলোতে চলতি বছরের শেষের দিকে আঞ্চলিক নির্বাচন হওয়ার কথা। এরই মাঝে পটসডামের বৈঠকে উগ্র ডানপন্থীরা ‘রিমাইগ্রেশন’ শব্দটি ব্যবহার করেছে বলে খবরে বলা হয়েছে। এটি অভিবাসী এবং সংখ্যালঘুদের বহিষ্কার করা বোঝাতে অতিডানপন্থীরা ব্যবহার করে থাকে।

জার্মান ডানপন্থী গোষ্ঠী ভের্টে ইউনিয়ন (ভ্যালুজ ইউনিয়ন) শনিবার জানিয়েছে, তারা নতুন একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করতে চায়, আগের স্থিতিশীল দলের এটাও একটা অংশ হবে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement