০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

লকডাউনে বিপর্যস্ত জার্মানি : হত্যা করা হবে চিড়িয়াখানার অনেক প্রাণী

বার্লিনের জু-তে দুটি যমজ পান্ডা শিশু। এখন অবশ্য লোকে শুধু অনলাইনে তাদের দেখতে পারেন - সংগৃহীত

করোনাভাইরাস সংকটের কারণে জার্মানির কিছু চিড়িয়াখানা এমনই অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে যে – কিছু প্রাণীকে হয়তো এখন সেই চিড়িয়াখানারই অন্য প্রাণীর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।

জার্মানির উত্তরাঞ্চলের নিউমুনস্টার চিড়িয়াখানার পরিচালক ভেরেনা কাসপারি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "প্রথমে যে প্রাণীগুলো মেরে ফেলা হবে তার একটা তালিকাও তৈরি করেছি আমরা।"

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য জার্মানিতে আরোপ করা লকডাউনে চিড়িয়াখানাগুলো হয়ে পড়েছে দর্শকশূন্য। ‍ এক হিসেবে বলা হয়, তাদের সাপ্তাহিক লোকসান হচ্ছে অন্তত ৫ লক্ষ ইউরো।

আর্থিক সংকটে পড়ে চিড়িয়াখানাগুলো সরকারি অনুদান প্রার্থনা করছে। অনেকে কর্মচারীদের বেশিরভাগকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে।

কাসপারি বলছেন, চিড়িয়াখানা টিকিয়ে রাখতে কিছু প্রাণীকে মেরে ফেলার চিন্তাটা একেবারেই শেষ বিকল্প। কিন্তু সেটা করলেই যে আমাদের আর্থিক সমস্যা মিটবে তা-ও নয়।

তিনি বলছেন, সীল এবং পেংগুইনের মতো প্রাণীর প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ তাজা মাছ দরকার।

“সেরকম সঙ্কট হলে আমাদের কিছু প্রাণীকে মানবিকভাবে মেরে ফেলতে হবে, অন্তত তাদের খেতে না দেয়ার চেয়ে সেটা ভালো হবে।“

“আরেকটা হতে পারে কিছু প্রাণীকে অন্য প্রাণীর খাদ্য হিসেবে দিয়ে দেয়া।“

জার্মানির চিড়িয়াখানাগুলোর সমিতি বলছে, এটা অন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মত যখন খুশি বন্ধ করে দেয়া যায় না। প্রাণীদের প্রতিদিন খাবার দিতে হয়, যত্ন নিতে হয়। কোন কোন খাঁচা সার্বক্ষণিকভাবে ২০ ডিগ্রির চেয়ে বেশি গরম রাখতে হয়।

বার্লিনের জু-তে আছে দুটি যমজ পান্ডা শিশু। এখন অবশ্য পান্ডা-ফ্যানরা শুধু অনলাইনে তাদের দেখতে পারেন।

বার্লিন চিড়িয়াখানার মুখপাত্র ফিলিন হ্যাশমাইস্টার বার্তা সংস্থাকে বলেন, ‍“যমজ পান্ডা দুটি ভীষণ মিষ্টি কিন্তু আমরা সব সময়ই ভাবছি দর্শকদের তাদের লাইভ দেখতে পারা উচিত, অনলাইনে নয়। ‍“

“আমরা চাই না চিড়িয়াখানা খুলতে খুলতে ওরা বড় হয়ে যাক।“

কর্মকর্তারা আরো বলছেন, এই সংকটের একটা আবেগগত দিকো আছে, কারণ কিছু কিছু প্রাণী দর্শকদের দিক থেকে যে মনোযোগ পায় – তারা তার অভাব রোধ করছে।

বার্লিন জু’র মিজ হ্যাশমাইস্টার বলছেন, বানর-জাতীয় প্রাণীরা মানুষদের দেখতে খুব ভালোবাসে।

তার কথায়, সীল এবং তোতাপাখীরাো দর্শকদে ব্যাপারে খুব আগ্রহী এবং এখন তাদের জীবন একঘেঁয়ে হয়ে গেছে।

গত সপ্তাহে মস্কোর চিড়িয়াখানার বলেছে, তাদের দুটি জায়ান্ট পান্ডা কিছু একটার অভাব বোধ করছে।

“এখন তাদের খাঁচার সামনে দিয়ে একজন লোক হেঁটে গেলেও তারা দ্রুত সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে।“‍
সূত্র : বিবিসি

 


আরো সংবাদ



premium cement