২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

৩টি ইরানি কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণা জার্মানির

৩টি ইরানি কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণা জার্মানির - সংগৃহীত

ইরানি বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক জামশিদ শারমাহদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রতিক্রিয়ায় দেশে তিনটি ইরানি কনস্যুলেট বন্ধ করে দেয়ার ঘোণা দিয়েছে জার্মানি।

বৃহস্পতিবার জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বায়েরবক এ কথা জানান। তিনি এক টেলিভিশন ভাষণে ফ্রাংকফুর্ট, মিউনিখ ও হামবুর্গে অবস্থিত কনস্যুলেট বন্ধের এ ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তেহরানকে একাধিকবার ও স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, একজন জার্মান নাগরিকের মৃত্যুদণ্ডের পরিণতি হবে গুরুতর।’

সোমবার জামশিদ শারমাহদের ফাঁসি ঘোষণা দেয়া হলে তা কূটনৈতিক প্রতিবাদ উসকে দেয়। চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে একটি ‘কেলেঙ্কারি’ বলে অভিহিত করেন।

বায়েরবক বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে এ হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আলোকে ঘটেছে। এটি (ইরানের) স্বৈরচারী অন্যায় শাসনের দৃষ্টান্ত। তারা স্বাভাবিক কূটনৈতিক যুক্তি অনুসারে কাজ করে না। আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ইতোমধ্যে সর্বকালের সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে, এটা অকারণে নয়।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কনস্যুলেট বন্ধ করা হলে মোট ৩২ কনস্যুলারকর্মী প্রভাবিত হবে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া জানায়। একে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না’ বলে নিন্দা জানায় ও তেহরানে বার্লিনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে বলেও জানিয়েছে তারা।

বায়েরবক বার্লিনে ইরান দূতাবাসের কথা উল্লেখ করেননি। তবে তিনি জানান, তেহরানে জার্মানির কুটনৈতিক চ্যানেল ও তাদের দূতাবাস বহাল রাখবে।

৬৯ বছর বয়সী শারমাহদকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘করাপশন অন আর্থ’ বা ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির’ অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। পরে ইরানের সুপ্রিমকোর্ট এ সাজা নিশ্চিত করে।

শারমাহদ ২০০৮ সালে সিরাজ নগরীর একটি মসজিদে বোমা হামলার সাথে যুক্ত থাকার দায়ে সাজা পান। ওই হামলায় ১৪ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়। তবে তার পরিবার দীর্ঘকাল ধরে তাকে নির্দোষ বলে দাবি করে আসছে।

জার্মানি ইইউ পর্যায়ে ইরানের বিরুদ্ধে আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য চাপ দিচ্ছে। বায়েরবক বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ব্রাসেলসে আমি বিপ্লবী গার্ডদের একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করার জন্য জোর দিয়েছি।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল এই সপ্তাহের শুরুতে বলেন, ব্লকটি শারমাহদের হত্যার সম্ভাব্য কঠোরতম ভাষায় নিন্দা করেছে এবং এর পাল্টা পদক্ষেপ বিবেচনা করছে।

শারমাহদ ইরানি বংশোদ্ভূত একজন জার্মান নাগরিক এবং মার্কিন বাসিন্দা। পেশায় সফ্টওয়্যার প্রকৌশলী শারমাহদ বিদেশে অবস্থিত একটি ইরান-বিরোধী গোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে কাজ করতেন। তিনি ইরানের শাসতগোষ্ঠীর কঠোর সমালোচনা করে লেখালেখি করতেন।

তার পরিবার জানায়, ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় ইরানি কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে।
সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement