নিভে যাওয়ার চেয়ে পুড়ে যাওয়া ভালো - কেট ব্ল্যানচেট
- আলমগীর কবির
- ২০ মে ২০২৪, ০০:০০
অস্ট্রেলিয়ান অভিনেত্রী কেট ব্ল্যানচেটকে বলা হয় রূপালী পর্দার রানী। শনিবার রাতে কান চলচ্চিত্র উৎসবে সোনালি রঙের গাউনে এই রানীর উপস্থিতি উৎসবে আলাদা রঙ দিয়েছিল। এদিন তার নতুন সিনেমা ‘রিউমার’এর প্রিমিয়ার ছিল। প্রিমিয়ার শেষে ৪ মিনিটের স্ট্যান্ডিং ওভেশন (দাঁড়িয়ে করতালি) পেয়েছে। কানে দর্শকদের কাছ থেকে এমন অভিবাদনকে বেশ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেয়া হয়, বিশেষ করে সেরা ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে । ‘রিউমার’ সিনেমাটি মূল প্রতিযোগিতার বাইরে থাকায় সেরা হওয়ার সুযোগ নেই। তবে দর্শকদের এমন উষ্ণ ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়েছেন সিনেমার পুরো টিম। ছবির গল্পের সূত্র ধরে তারা বলেছেন, নিভে যাওয়ার চেয়ে পুড়ে যাওয়া ভালো।
এখানে বলা প্রয়োজন যে ডার্ক কমেডি গড়ানার এই সিনেমা তৈরি হয়েছে জি-৭’এ বিশ্ব নেতাদের একটি বিবৃতিকে কেন্দ্র করে। যেখানে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধানরা একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি তৈরি করতে গিয়ে জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে।
সিনেমাটি তৈরি করেছেন তিনজন পরিচালক। তারা হলেন- গাই ম্যাডিন, ইভান জনসন এবং জনসন। সিনেমার স্ক্রিনিং শেষে তিনজন পরিচালকের হাতে একটি মাইক্রোফোন অনেকে অবাক হয়েছিলেন।
ব্ল্যানচেট এর আগে টড হেইনের ‘ক্যারল’ (২০১৫) এর জন্য ক্রয়েসেটে ছিলেন, যার জন্য তিনি অস্কারে সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০১৮ সালে ব্ল্যানচেট উৎসবের জুরি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে ৮৫ বছরের একজন বুড়োর জন্য তমুল হইচইয়ের খবর পাওয়া গেছে। ‘গডফাদার’ ট্রিলজির কিংবদন্তি পরিচালক ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা বলে কথা! কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রাণকেন্দ্র পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনের গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরের সামনের সড়ক বিভাজক ঢেকে গিয়েছিল জনস্রোতে। তরুণ-তরুণী, বুড়ো-বুড়ি সবার দৃষ্টি তার দিকে। লালগালিচায় হেঁটে লুমিয়েরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে এক হাতে টুপি নেড়ে সবার অভিবাদনে সাড়া দেন তিনি।
সাগরপাড়ের শহর কানে ৪৫ বছর পর ‘মেগালোপলিস’ নিয়ে উৎসবের মূল প্রতিযোগিতায় ফিরলেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় এর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছে। কল্পবিজ্ঞানধর্মী বড় ক্যানভাসের ছবি ‘মেগালোপোলিস’ নিজের ওয়াইন বিক্রি থেকে প্রাপ্ত ১২ কোটি ডলার খরচ করে কয়েক দশক সময় নিয়ে বানিয়েছেন তিনি। এর মাধ্যমে ১৩ বছর পর তার নতুন ছবি এলো।
সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা অন্যতম। কানে ১৯৭৪ সালে তার ‘অ্যাপোক্যালিপস নাউ’ স্বর্ণপাম জয়ের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। যদিও এটি ছিল বিতর্কিত, কারণ উৎসবটিতে প্রদর্শনের সময় এর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি! ১৯৭৯ সালে তার পরিচালিত ‘দ্য কনভারসেশন’ ছবিটিও স্বর্ণপাম জিতেছে। ১৯৯৬ সালে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে বিচারকদের প্রধান ছিলেন তিনি।
২ ঘণ্টা ২০ মিনিটের ছবিটির প্রদর্শনী শেষ হতেই টানা ৭ মিনিট দাঁড়িয়ে করতালিতে অভিবাদন জানিয়েছেন দর্শক ও অতিথিরা। তখন অভিনেতা অ্যাডাম ড্রাইভার ও জিয়ানকার্লো এসপোসিতোকে জড়িয়ে ধরেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। আবেগপ্রবণ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার কেমন লাগছে তা বলে বোঝানো যাবে না।’
এরপর দর্শক সারিতে থাকা নিজের পরিবারের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। তবে তিনি বলেন, ‘তারাই একমাত্র নয়, ছবিটির অসাধারণ অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই আমার পরিবার। যেমন স্থপতি চেজার কাতিলিনা (‘মেগালোপোলিস’ ছবির প্রধান চরিত্র) বলেছেন, আমরা সবাই এক পরিবার। তোমরা সবাই আমার কাজিন। আমরা এক। আমরা মানব পরিবার। আমাদের পুরো পরিবার, দিনের শেষে এই সুন্দর বাড়ি ও পৃথিবীর প্রতি আমাদের সবারই আনুগত্য থাকা দরকার। এটাই আমার চাওয়া। শিশুরাই আমাদের কাছ থেকে এমন সুন্দর পৃথিবীর উত্তরাধিকারী হতে চলেছে। সুন্দর পৃথিবীতে যেকোনো ভাষায় আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হলো ‘এসপারেনচা’। অর্থাৎ আশা। এটাই আমি উৎসর্গ করছি।’
ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার পরিবারের মধ্যে গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে ছিলেন বোন টালিয়া শায়ার, মেয়ে নাতনি রোমি মার্স (সোফিয়া কপোলার মেয়ে), ভাগ্নে জেসন শোয়ার্জৎম্যান। রোমি ও জেসন ‘মেগালোপলিস’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। এতে আরো আছেন অ্যাডাম ড্রাইভার, শায়া লাবাফ, নাতালি এমানুয়েল, অব্রে প্লজা, ডাস্টিন হফম্যান, লরেন্স ফিশবার্ন, জন ভয়েট, ক্যাথরিন হান্টার, গ্রেস ভান্ডারওয়াল, ক্লোয়ি ফাইনম্যান, মাদেলেইন গারদেল্লা, বালথাজার গেটি, বেইলি আইভস, ইসাবেল কুসমান, জেমস রেমার, ডি. বি. সুইনি প্রমুখ।
এবারের মূল প্রতিযোগিতায় রয়েছে ২২টি চলচ্চিত্র। এর মধ্যে পল শ্রেডারের ‘ও কানাডা’র অভিনেতা রিচার্ড গেয়ার ‘মেগালোপলিস’-এর প্রিমিয়ার দেখেছেন। অস্কারজয়ী ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার সামনের সারিতে বসেন তিনি। নির্মাতার গালে চুম্বনের পর তাকে অভিনন্দন জানান এই তারকা।
‘মেগালোপলিস’ ছবির গল্পে দেখা যায়, একটি দুর্ঘটনায় নিউ ইয়র্ক সিটি ধ্বংস হওয়ার পর টেকসই ইউটোপিয়া হিসেবে শহর পুনর্নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করে চেজার। কিন্তু তাকে চ্যালেঞ্জ করে দুর্নীতিগ্রস্ত মেয়র ফ্র্যাঙ্কলিন সিসেরো। তার মেয়ে জুলিয়াকে ভালোবেসে ফেলে চেজার। মেয়েটি তাকে লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করে যায়।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের আরেক চলচ্চিত্র ‘বার্ড’-এর উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়েছে। এটি পরিচালনা করেছেন যুক্তরাজ্যের আন্ড্রেয়া আর্নল্ড। দর্শক ও অতিথিরা এই ছবি দেখে টানা সাত মিনিট দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানিয়েছেন। এতে অভিনয় করেছেন ব্যারি কিওগ্যান, জেসন বুডা, জেসমিন জবসন প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা