সৌদি আরবের সিনেমায় মনোযোগ
- আলমগীর কবির
- ০৫ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
কয়েক বছর আগেও যে দেশে সিনেমা প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেখানেই এখন চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য দেয়া হচ্ছে বিশেষ ছাড়। সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, সফলভাবে ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়নের জন্যই দেশটির এ উদ্যোগ। এরই মধ্যে হলিউডের বেশ কয়েকটি সিনেমার শুটিং হয়েছে মরুর দেশটিতে। এখন বলিউডের সিনেমার শুটিংয়ের লম্বা তালিকা রয়েছে শিডিউলে।
সারা বিশ্বে সৌদি আরবের পরিচিতি রক্ষণশীল মুসলিম দেশ হিসেবে। ২০১৮ সালে দেশটিতে আর্থসামাজিক সংস্কারের অংশ হিসেবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। দেশটিতে রুপালি পর্দা উঠার প্রথম বছরে চলচ্চিত্রের দর্শকরা ব্যয় করেছিলেন ২০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ। সেখানে ২০২১ সালে তারা খরচ করেছেন ৫ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। সে হিসাবে চার বছরের মাথায় সৌদি আরবে চলচ্চিত্রের টিকিট বিক্রি বেড়েছে ২ হাজার ৬০৫ শতাংশ।
২০২১ সালে সৌদি আরবের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দুবাইভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-আরাবিয়া। ২০১৮ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে সর্বসাধারণের জন্য সিনেমা প্রদর্শনীর অনুমতি দেয়া হয়। রাজধানী রিয়াদের ‘এএমসি’ সিনেমা হলে প্রদর্শন করা হয় মার্ভেল স্টুডিওর সিনেমা ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’।
আগের বছর ২০১৭ সালে অর্থসামাজিক সংস্কারের লক্ষ্যে ‘ভিশন-২০৩০’ পরিকল্পনা হাতে নেয় সৌদি সরকার। এই পরিকল্পনার আওতায় দেশটির শিল্পে প্রবৃদ্ধি স্থানীয়ভাবে বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়। সেগুলোরই একটি সিনেমার প্রদর্শনীর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া।
বর্তমানে সৌদি আরবজুড়ে সিনেমা হলের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে নির্মাণ হয়েছে ১১টি নতুন সিনেমা হল। সৌদি আরবের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বলছে, দেশটিতে এখন সিনেমা হলের সংখ্যা ৫৪টি।
সৌদি আরবে সিনেমা প্রদর্শনীর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের চার বছর পূর্তির সময় দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস অ্যাজেন্সি তিন কোটি টিকিট বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিল। পাশাপাশি সিনেমাশিল্প দেশটির ৪ হাজার ৪০০ তরুণের চাকরির সুযোগ তৈরি করেছে জানানো হয় তাদের প্রতিবেদনে।
সৌদি আরবে বলিউডের প্রথম সিনেমার শুটিং শুরু হবে শিগগিরই। নাম ‘ডাংকি’। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করবেন শাহরুখ খান। আগামী ১৫ নভেম্বর শাহরুখ খান, পরিচালক রাজকুমার হিরানি ও অন্য কলাকুশলীরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে পা রাখবেন। জেদ্দা ও এর আশপাশের এলাকায় মাসের শেষ পর্যন্ত তারা শুটিং করবেন।
সূত্রটি আরো জানায়, আগামী দিনে এশিয়ার মধ্যে সৌদি আরব শুটিংয়ের প্রধান গন্তব্য হয়ে দাঁড়াবে। দেশটির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় চলচ্চিত্র নির্মাণ ব্যয়ের ওপর ৪০ শতাংশ নগদ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় অনুমতি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সুবিধা তো থাকছেই। বলা হচ্ছে, সৌদি আরবের সুন্দর ও আনকোড়া লোকেশন বড়পর্দায় নতুন চমক হিসেবে ওঠে আসবে।
জানা গেছে, অক্ষয় কুমার ও টাইগার শ্রফের ‘বড় মিয়া ছোট মিয়া’ সিনেমার নির্মাতারাও সৌদি আরবে যেতে ইচ্ছুক। এ তালিকায় সালমান খানের ‘নো এন্ট্রি ম্যায় এন্ট্রি’ও রয়েছে। সব মিলিয়ে ছয় মাসের মধ্যে বলিউড তারকাদের ভিড় লেগে যাবে সৌদি আরবে।
এর আগে সৌদি আরবে এই লোকেশনে হলিউডের বড় বাজেটের তিন সিনেমার শুটিং হয়েছে। জেরাল্ড বাটলারের ‘কান্দাহার’, রুপার্ট ইয়াটের ঐতিহাসিক ছবি ‘ডেজার্ট ওয়ারিয়র’ ও রুশো ব্রাদার্সের ‘চেরি’।
সৌদি আইডল : শুধু সিনেমা নয়, দেশটিতে গানের প্রসার বাড়ানোর লক্ষ্যে ইন্টারন্যাশনাল ‘আইডল’ টেলিভিশন ফ্র্যাঞ্চাইজি ট্যালেন্ট শোর নতুন সংস্করণ আসতে যাচ্ছে সৌদি আরবে।
ডিসেম্বরে ‘সৌদি আইডল’ নামে নতুন এই সংস্করণের সম্প্রচার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির (জিইএ) চেয়ারম্যান তুর্কি আল-শেখ। সম্প্রতি এক ঘোষণায় এমনটিই জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আশা করা হচ্ছে, এই বছরের ডিসেম্বরেই প্রথম পর্বের সম্প্রচার সম্ভব হবে। আরবের জিইএ ও এমবিসি গ্রুপের সহযোগিতায় এই শো চালু হতে যাচ্ছে।
নতুন এই শোর মাধ্যমে সৌদি গায়ক-গায়িকা অন্বেষণ করা হবে। আর এর বিচারক হিসেবে থাকছেন সৌদি আরবের গায়ক আসিল আবু বকর, আরব আমিরাতের অভিনেত্রী ও গায়িকা আহলাম, সিরিয়ার গায়িকা আসালা ও সৌদি-ইরাকি সুরকার মাজিদ আল-মোহান্দিস।
অন্যান্য দেশের আইডলের মতো সৌদি আইডলেও থাকছে অডিশন রাউন্ড ও লাইভ পারফরম্যান্স রাউন্ড। প্রাথমিক বাছাইকৃত প্রতিযোগীরা অডিশন রাউন্ডে সুযোগ পাবেন, সেখান থেকে বিচারকরা তাদের নির্বাচিত করলে পরের রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
ব্রিটেনে ২০০১ সালে প্রথম শুরু হয় পপ-আইডল। সেখান থেকে পুরো বিশ্বের ৫৬টি অঞ্চলে এর ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়েছে। ২০১৪ সালে লেবাননে শুরু হয় মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম আরব আইডল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা