২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ মাঘ ১৪৩১, ২২ রজব ১৪৪৬
`

নতুন ভোরের সুরের তিরন্দাজ মানিক

-


৫ আগস্ট ২০২৪, বাংলাদেশে এক অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানে গোটা পৃথিবী চমকে ওঠে, যেখানে ছাত্রদের রক্ত, আঘাত এবং নিখোঁজ হওয়ার বিনিময়ে আসে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বাধীনতার সূর্য। এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে প্রায় দুই দশক ধরে কাজ করা কিছু শিল্পীর অবদান, যাদের মধ্যে অন্যতম আমিরুল মোমেনীন মানিক। তিনি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এবং ভারতের বাংলাভাষী মানুষের মধ্যে জীবনমুখী গানের শিল্পী হিসেবে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। গান, লেখা এবং সাংবাদিকতার মাধ্যমে তিনি প্রায় দুই দশক ধরে স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।

২০১৪ সালে তিনি ভারতের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘আয় ভোর’ গানটি গেয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেন। এরপর তাদের যৌথ প্রয়াসে প্রকাশিত হয় সচেতনমূলক গান ‘নীল পরকীয়া’, যা সামাজিক সমস্যাগুলোর প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নচিকেতার সাথে তাদের আরেকটি জাগরণী সঙ্গীত ‘সকাল হবে কি?’ (ডরষষ ঞযবৎব ইব ধ গড়ৎহরহম?) প্রকাশিত হয়, যা ছাত্রদের আন্দোলনে অনুপ্রেরণা জোগায়। এই গানটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক মুক্তির বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা প্রদান করে।
২০১০ সালে, তিনি কণ্ঠশিল্পী আগুনের সঙ্গে ‘মা গো তুমি কেমন আছো?’ শিরোনামের একটি গান প্রকাশ করেন, যা জনজীবনের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে। ২০১১ সালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলানী হত্যাকাণ্ডের পর প্রথমবার শিল্পী হিসেবে সোচ্চার হন মানিক। তিনি লিখেন ‘সীমান্ত প্রহরী’ গানটি, যা বিজিবি সদস্যদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

২০২০ সালে, মানিকের কথা এবং হাবিব মোস্তফার সুরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়ের গাওয়া ‘আগুনের জুতো পায়ে হাঁটছি’ গানটি প্রকাশিত হয় এবং ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। নানা প্রতিবন্ধকতা, হুমকি এবং সাংস্কৃতিক বৈষম্যের শিকার হলেও, মানিক থেমে থাকেননি। তার গানের মাধ্যমে অন্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতিবাদ করেছেন। ‘মানুষ কবে মানুষ হবে?’ এবং ‘তুমি কোন পার্টির লোক?’ গানগুলোর মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা ও বিবেকহীনতার বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেন।
২০২১ সালে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে আলামিন হাওলাদারের কথায় ‘জাগো’ গান প্রকাশিত হলে তা রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে এবং মানিককে হুমকির সম্মুখীন করে। ২০২২ সালে তার ‘মধ্যবিত্ত চুচু ভাই’ গানটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায় এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে ওঠে।

৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে নতুন ষড়যন্ত্রের মুখে, মানিক গেয়ে উঠেন, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ / তিতুমীর থেকে আবরার, প্রেরণা দেয় বারবার’। এই দুটো লাইন পরবর্তীতে জনপ্রিয় স্লোগানে পরিণত হয়।
ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে তার সঙ্গীত সংগ্রাম নিয়ে মানিক বলেন, ‘৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত করতে গত দুই দশক ধরে নানা অঙ্গনে নানা উপায়ে বুনিয়াদ তৈরি করতে হয়েছে। সঙ্গীতে সময়কে ধারণ করতে গিয়ে মানুষের পক্ষে থাকার অব্যাহত চেষ্টা করেছি। আমাদের গানের মাধ্যমে একদিকে মানুষের মধ্যে জাগরণ তৈরি হয়েছে এবং অন্যদিকে নিপীড়কদের প্রতি ঘৃণা ও দ্রোহ উচ্চারণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা।’


আরো সংবাদ



premium cement
পুরুষদের উচ্চতা-ওজন বেড়েছে দ্বিগুণ রাজউকের ২০ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা জাপান সফরে উন্নয়নের কথা বলে অর্থনীতিকে মেরুদণ্ডহীন করেছে আ’লীগ : নূরুল ইসলাম বুলবুল ভোরের কাগজ বন্ধের ঘোষণায় বিএফইউজে ও ডিইউজের নিন্দা অবশেষে সেই নারায়ণের বিরুদ্ধে ফল জালিয়াতির মামলা বনানীতে দুই সেনা সদস্যসহ ৪ ডাকাত গ্রেফতার দাবি না মানলে ট্রেন চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি রানিং স্টাফদের মিরসরাইয়ের অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনা কারখানায় অগ্নিকাণ্ড দুই মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে নদভী ইঞ্জিনিয়ার বোরহানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি হরিপুরে গণপিটুনিতে মোটরসাইকেল চোরের মৃত্যু

সকল