১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩০, ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

বাবা সিদ্দিকি খুন, সালমান-ঘনিষ্ঠতাই কি কাল হলো

বাবা সিদ্দিকি খুন, সালমান-ঘনিষ্ঠতাই কি কাল হলো -

মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী অজিত পাওয়ারের দল এনসিপির নেতা বাবা সিদ্দিকিকে ঘটনায় মুম্বাইয়ের গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সূত্রের বরাতে এনডিটিভি বলছে, এ ঘটনায় গ্রেফতার দু’জন নিজেদের লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য বলে দাবি করেছে।
‘সালমান খানের বন্ধু যে কেউ তাদের শত্রু’ বলে এর আগে হুমকি দিয়ে রেখেছেন লরেন্স বিষ্ণোইয়ের সহযোগী রোহিত গোদারা। তাই সালমান খানের সাথে ঘনিষ্ঠতার কারণেই বাবা সিদ্দিকি খুন হলেন কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছে। অন্য কেউ এই হত্যার দায় স্বীকার না করলেও পুলিশ এই দাবি যাচাই করেনি।
গত শনিবার রাতে ৬৬ বছর বয়সী বাবা সিদ্দিকীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকে এবং পেটে গুলি লেগেছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
সিদ্দিকীর খুনের ঘটনায় গ্রেফতার দু’জন হলেন- উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা কর্নেইল সিংহ ও হরিয়ানার ধরমরাজ কাশ্যপ। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে দুজনই বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য বলে স্বীকার করে নিয়েছেন।
শনিবার রাতে বান্দ্রা পূর্ব এলাকায় ছিলেন বর্ষীয়ান এনসিপি নেতা। ছেলে বিধায়ক জিশান সিদ্দিকীর অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে দশেরা উপলক্ষে তিনি বাজি ফাটাচ্ছিলেন। সেই সময় তাকে লক্ষ্য করে আচমকা গুলি ছোড়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য। গাড়ি করে তিনজন এসেছিল, তাদের প্রত্যেকের মুখ রুমাল দিয়ে ঢাকা ছিল।
পুলিশ বলছে, মোট তিন রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছিল। সিদ্দিকীর বুকে এবং পেটে গুলি লাগে। একটি গুলি আটকে যায় বুকে। ঘটনাস্থলেই তিনি পড়ে যান। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। ৯.৯ এমএম পিস্তল থেকে ছোড়া হয়েছিল গুলি।
চিকিৎসকরা জানান, শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় বাবা সিদ্দিকীর। সেই কারণে বুলেট বের করা গেলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রাত ১১টা ২৭ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এই খুনের ঘটনায় জড়িত তৃতীয় আরেকজন ঘটনাস্থল থেকেই পালিয়ে গিয়েছিল। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানিয়েছেন, যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শনিবার রাতের এই ঘটনার পর মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত রোববারের সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করে দেন। তিনি রাতে মুম্বাইতে ছিলেন না। শিগগির সেখানে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার।
গত ফেব্রুয়ারিতেই কংগ্রেসের সাথে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ত্যাগ করেন সিদ্দিকী। যোগ দেন অজিত শিবিরে। তবে তার আগে প্রায় পাঁচ দশক কংগ্রেসের সাথে ছিলেন সিদ্দিকী। সত্তরের দশকে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন থেকে মূল স্রোতের রাজনীতিতে এসেছিলেন সিদ্দিকী। ১৯৯৯ সালে প্রথম বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়েছিলেন বান্দ্রা এলাকার এই নেতা। ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনবার ভোটে জিতলেও ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে বান্দ্রা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে তিনি হেরে গিয়েছিলেন।
বলিউডের সাথেও তার যোগাযোগ আছে ব্যাপক। বিভিন্ন সময়ে তার দেয়া পার্টিতে বলিউড তারকাদের দেখা গিয়েছে। ২০১৩ সালে তার পার্টিতেই শাহরুখ খান এবং সালমান খানের ‘মানভঞ্জন’ হয়। দুই খানকে দুই পাশে নিয়ে তোলা তার সেই ছবি স্মরণীয় হয়ে আছে।


আরো সংবাদ



premium cement