সৌদি বক্স অফিসে আয় হাজার কোটি টাকা
- সাকিবুল হাসান
- ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে তেলবাণিজ্য নির্ভরতা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে বৈচিত্রময় খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশটির জনগণের সামগ্রিক উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। যেখানে বড় একটি জায়গা দখল করে রেখেছে দেশটির সিনেমা বাজার। আরব নিউজের সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪-এর প্রথমার্ধে সৌদি প্রেক্ষাগৃহগুলোতে বিক্রি হয়েছে ৮৫ লাখের বেশি টিকিট। আর এ থেকে দেশটি আয় করেছে ৪২০ মিলিয়নের বেশি সৌদি রিয়াল। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ১৩০০ কোটি টাকার বেশি! নাটক-সিনেমার ওপর থেকে সাড়ে তিন দশকের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর দেশটির প্রেক্ষাগৃহগুলোতে ক্রমাগত বাড়ছে দর্শক।
সৌদি আরবের সংস্কৃতিমন্ত্রী এবং আল-উলা রয়্যাল কমিশনের গভর্নর প্রিন্স বদর বিন আবদুল্লাহ বিন মোহাম্মদ বিন ফারহান আল সৌদ গত মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সৌদি বক্স অফিস আয় করেছে ৪২১ দশমিক ৮ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল। শুধু তাই নয়, তালিকার শীর্ষ আয়কারী প্রথম তিনটি চলচ্চিত্রের দুটিই সৌদি প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে।
‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনার আওতায় ২০১৮ সাল থেকে বিনোদন জগৎ থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ওই বছরই এপ্রিলে রাজধানী রিয়াদের ‘এএমসি’ সিনেমা হলে প্রদর্শিত হয় মার্ভেল স্টুডিওর ব্ল্যাক প্যান্থার। সৌদি আরবের জেনারেল কমিশন ফর অডিও ভিজ্যুয়াল মিডিয়ার (জিসিএএম) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে সিনেমা চালুর পর পাঁচ বছরে এই খাত থেকে সৌদি আরবের আয় হয়েছে ১৪ কোটি ২৬ লাখ ডলারের বেশি। প্রথম বছরে এই আয় ছিল ২০ লাখ ডলার। সরকারি তথ্য মতে, গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে টম ক্রুজ অভিনীত অ্যাকশন ড্রামা ফিল্ম ‘টপ গান : ম্যাভেরিক’।
১২ লাখের বেশি টিকিট বিক্রি করে সিনেমাটি আয় করেছে ৮ কোটি ৪০ লাখ রিয়ালের বেশি। এর পরই আছে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ ও টম ক্রুজ অভিনীত ‘মিশন : ইম্পসিবল-ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’।
সৌদি সিনেমাগুলোও পিছিয়ে নেই। নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ার আগাম খবর পেয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরির উদ্যোগ নিতে শুরু করেন তিন সৌদি যুবক আল ফাদান, ইব্রাহিম আল খাইরুল্লাহ ও আলি খালতামি। তিনজন মিলে প্রতিষ্ঠা করেন ‘তেলফাজ ১১’ নামের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। সিনেমার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ছয় বছরের মাথায় সৌদি আরব যেমন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল বক্স অফিসে পরিণত হয়েছে, তেমনি তেলফাজ হয়ে উঠেছে দেশটির অন্যতম প্রধান প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। গত বছরের শুরুতে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে আসে তাদের প্রথম ফিচার ফিল্ম ‘সাত্তার’।
সৌদি বাজারে তুমুল সাড়া ফেলে এই সিনেমা। মুক্তির প্রথম ১২ দিনেই বক্স অফিস থেকে সিনেমাটি আয় করে ২২ লাখ মার্কিন ডলার। চলচ্চিত্র বিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম হলিউড রিপোর্টারের তথ্য মতে, সৌদিতে সিনেমাটি দেখতে হলে গেছে ৯ লাখ ৩০ হাজারের বেশি দর্শক। বিশ্বজুড়ে সিনেমাটি আয় করেছে ১১ মিলিয়ন ডলারের বেশি, যা সৌদি সিনেমার ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
চলতি বছরের শুরুতে প্রেক্ষাগৃহে তেলফাজ নিয়ে আসে দ্বিতীয় সিনেমা ‘মানদুব’। নির্মাতা আলি খালতামির কমেডি থ্রিলারটি বক্স অফিসে সাফল্য পেয়েছে।
গত বছরের টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে এর প্রিমিয়ার হয়। সেখানেও প্রশংসিত হয় ‘মানদুব’। বক্স অফিসের বাইরে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবেও বাজিমাত করছে সৌদি আরবের সিনেমা। এবারের কান উৎসবে ইতিহাস গড়েছে সৌদি আরব।
৭৭ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে উৎসবের ‘আঁ সাঁর্তে রিগা’ বিভাগে স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড জিতেছে দেশটির নির্মাতা তৌফিক আলজায়েদির সিনেমা ‘নোরাহ’। গত বছরের ডিসেম্বরে জেদ্দায় আয়োজিত রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভালে ‘নোরাহ’র প্রিমিয়ার হয়েছিল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা