সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কোনো কাজ করবো না : সিইসি
বিএনপিসহ পাঁচটি দল ইসির আমন্ত্রণে যায়নি- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২১ জুন ২০২২, ২১:০২
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আমরা যারা কমিশনে আছি তারা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কোনো কাজ করবো না, সরকারও চাইবে না আমরা আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করি।
মঙ্গলবার (২১ জুন) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সাথে ইভিএম নিয়ে মতামত শেষে সমাপনী বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন সিইসি।
এদিকে, দেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ পাঁচটি রাজনৈতিক দল ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আলোচনায় যায়নি। বর্তমান ইসি এবং ইভিএম নিয়ে সম্মতি না থাকায় তারা ওই আলোচনায় যাননি বলে জানা গেছে। ফলে এক্ষেত্রেও ইসি আরেকবার হোঁচট খেলো।
বিএনপি ছাড়াও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ইভিএমের আলোচনায় যায়নি।
মঙ্গলবারের আলোচনায় মোট ১৩টি নিবন্ধিত দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে ইসি থেকে জানানো হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্য কমিশনারগণ এবং ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিল, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
মতবিনিময়কালে সিইসি বলেন, ইভিএমে আমার ভোট আপনি দেবেন আর আপনার ভোট আমি দেব- এটা একেবারে অসম্ভব।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সম্প্রতি যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা কোনো কেন্দ্র থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি যে এটার (ইভিএম) অপব্যবহার হয়েছে। আপনারা টিভিতে দেখেছেন, দুয়েকজনের হাতের ছাপ মিলছিল না। সে বাসায় গিয়ে ধুয়ে আসার পরে আবার যখন আঙুলের ছাপ দিল, তখন কিন্তু আইডেন্টিফাই হয়েছে। যন্ত্রের কিছু সমস্যা হতে পারে। ব্যালেটে যেমন একজনের জায়গায় এক শ’টা (ভোট) দেয়া হতে পারে, আঙুলের ছাপ না মিলতে পারে। কিন্তু আমার ভোট আপনি, আর আপনার ভোট আমি এটা একেবারে অসম্ভব।’
ইভিএম ও ব্যালটের প্রসঙ্গ টেনে সিইসি আরো বলেন, ‘ব্যালটে আমার নিজেরও অভিজ্ঞতা আছে কিভাবে ভোটকেন্দ্র দখল করে এক ঘণ্টায় দুই-তিন শ’ সিল মেরে ভরাট করেছে। আপনারা পাশে থেকেও তো ওটা বন্ধ করতে পারেন নাই। সেদিক থেকে ইভিএমে যদি কোনো দোষত্রুটি থেকে থাকে, আমি ইভিএম বিশেষজ্ঞ না, তারপরেও আমি এ পর্যন্ত যতটুকু ইভিএম দেখেছি ইতিবাচক দিকগুলো অনেক বেশি।’
সিইসি বলেন, ‘ইভিএমের উপর যেহেতু আপনাদের পুরোপুরি আস্থা আসছে না। আমরা আজকের আয়োজন করেছিলাম ব্যাপক আলোচনাটা জন্য। আজ ১৩টি দলকে ডেকেছি, এর আগে ১৩টি দলকে ডেকেছিলাম। ১৩টি দল বোধ হয় আসেনি, ৯-১০টি এসেছিল। আমরা জানি ইভিএম নিয়ে আপনাদের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আছে। আমরা কিন্তু আপনাদের মতামত শুনছি। আপনাদের মতামতকে মূল্য দিচ্ছি। এরপর আরো ১৩টি দল আসবে। তাদের সাথেও আমরা এভাবে মতবিনিময় করবো। আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আমরা সবদলের মতামত না নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবো না। এই জন্য আমরা এই প্রক্রিয়াটা গ্রহণ করেছি। আমরা আপনাদের মতামত বিশ্লেষণ করবো সেই সুযোগটা আমাদের রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সবার সর্বাত্মক চেষ্টা লাগবে। আপনারা ভোটকেন্দ্রে এসে লক্ষ্য করে দেখবেন যে, আমরা ইভিএমে কোনো ম্যানুপুলেশন করছি কি-না, জাল ভোট হচ্ছে কি-না বা ব্যালটেও তো ভোট হবে। সেখানেও ভোটাররা সঠিকভাবে তাদের ভোট দিতে পারছে কি-না। সেই চেষ্টাগুলো সার্বিকভাবে আপনাদেরকেও করতে হবে।’
সিইসি বলেন, ‘আমাদের উপর আপনারা নির্ভর করলে নির্বাচনটা সুন্দর হবে না। আপনাদের দায়িত্ব আরো বেশি। আপনারা ফিল্ডে থাকেন, আমি কয়টা সেন্টারে যাবো সিইসি হয়ে? আমরা পুলিশ নামানোর চেষ্টা করবো, বিজিবি নামানোর চেষ্টা করবো। এই কাজগুলো করার চেষ্টা করবো।’
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে শতভাগ আস্থায় বিশ্বাস করি না। শতভাগ আস্থা কখনো হয় না। আপনি হারলে বলবেন উনি চোরামি করেছেন। আর উনি বলবেন আমি খুব সৎ। কারণ এই দ্বন্দ্ব থেকে যাবেই। এক শ’ পারসেন্ট আমি সৎ থাকবো, আমার চারপাশে যারা আছে- যাদের উপর আমার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেই, আপনারা রাজনৈতিক দল, সরকার, সরকারি দল। তারাসহ সবাই কি আপনারা হান্ড্রেড পারসেন্ট সৎ থাকবেন?’ প্রশ্ন রাখেন সিইসি।
উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে ১৯ জুন ১৩ দলকে আমন্ত্রণ জানালেও ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও আন্দালিব রহমান পার্থর বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি’র কোনো প্রতিনিধি ওই সভায় অংশ নেয়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা