শপথের সম্মান রাখতে চাই : নতুন সিইসি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৩৬, আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:১০
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের শপথগ্রহণ শেষে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে রোববার (২৪ নভেম্বর) সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন নতুন সিইসি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শপথ যেটা নিয়েছি। শপথের সম্মান রাখতে চাই। শপথ সমুন্নত রাখবো। এই দায়িত্বকে জীবনের বড় সুযোগ হিসেবে দেখছি। জাতির জন্য কিছু করতে এটা বড় সুযোগ।’
নতুন সিইসি বলেন, ‘দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, রক্ত দিয়েছেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের দক্ষ টিম রয়েছে, আমরা আত্মবিশ্বাসী।’
সিইসি বলেন, ‘একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান আমাদের একার বিষয় নয়। সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা লাগবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা বদ্ধপরিকর।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন করতে গেলে বিদ্যমান ব্যবস্থায় কিছু সংস্কার লাগবে। সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন করে দিয়েছেন তারা কাজ করছে। ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের সুপারিশ পেশের জন্য বলা হয়েছে। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এলে যা প্রয়োজন তা গ্রহণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ভোটাধিকার নিয়ে দাবি জানিয়ে আসছে। আমরা তাদের সাথে পাবো।’
তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম ভোট দিতে মুখিয়ে আছে। তাদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চাকরি জীবনে বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি। নির্বাচন কমিশনেও সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব।’
এর আগে নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার নির্বাচন কমিশনার আজ শপথ নিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাদের শপথবাক্য পাঠ করান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমদ ভূঞা।
শপথ অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ, নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত সার্চ কমিটির সদস্যরা, নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর দেড়টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
২১ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার নির্বাচন কমিশনারের সমন্বয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনাররা হলেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো: আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমান মাসুদ, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম-সচিব বেগম তহমিদা আহমদ ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটির প্রস্তাবিত তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজনকে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে গঠিত ছয় সদস্য বিশিষ্ট সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন ইসি গঠন করা হলো। গত ২৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘দ্য চিফ ইলেকশন কমিশনার অ্যান্ড আদার ইলেকশন কমিশনারস অ্যাপয়েনমেন্ট অ্যাক্ট, ২০২২’-এর ধারা-৩ অনুযায়ী এই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম।
এই অনুসন্ধান তথা সার্চ কমিটির কাছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দল ও পেশাজীবী সংগঠনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পর্যায়েও আগ্রহী ব্যক্তিরা নাম প্রস্তাব করেন।
বিভিন্ন দলের ও সংগঠনের প্রস্তাব থেকে সার্চ কমিটি গত বুধবার (২০ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম সুপারিশ করেছিল। সার্চ কমিটির আহ্বানে নতুন ইসি গঠনের লক্ষ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ১৭টি দল ও জোট নাম প্রস্তাব করেছিল।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান হয় গত ৫ আগস্ট। গণঅভ্যুত্থানের মুখে ওইদিন পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এরপর দেড় মাস ধরে শূন্য থাকার পর এখন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলো।
নতুন সিইসি নাসির উদ্দীনের বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়। ১৯৫৩ সালের ১ জুলাই তার জন্ম। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করার পর ১৯৭৭ সালে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। দুই বছর পর ১৯৭৯ সালে বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন তিনি।
তিনি কর্মজীবনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। এরপর পরিকল্পনা বিভাগের সদস্য হয়েছিলেন। বিদ্যুৎ-জ্বালানি এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন তিনি।
সূত্র : বাসস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা