রাজধানীতে শিক্ষককে পেটালেন আরেক শিক্ষক
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১৬:৪৭
রাজধানীর উত্তরায় নওয়াব হাবিবুল্লাহ স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরেক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মারধরের শিকার ওই শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) এ ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত মিরাজ হোসেন ব্যবসায়িক সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন হামলার শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক রকিব লিখন।
তিনি জানান, এই হামলার পেছনে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সদস্যদের ইন্ধন রয়েছে।
কলেজের শিক্ষকরা জানান, পূর্বের একটি ঘটনার জেরে রকিব লিখনকে এভাবে মারধর করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধির কক্ষে বসে ছিলেন রকিব লিখন। এমন সময় হঠাৎ সেখানে এসে রকিব লিখনকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি দিতে থাকেন মিরাজ হোসেন। একপর্যায়ে কাঠের লাঠি দিয়ে আঘাত করলে রকিব মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় উপস্থিত অন্য শিক্ষকরা পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে আক্রমণের শিকার রকিব লিখনকে গুরুতর আহতাবস্থায় উত্তরা কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় নিরাপত্তার জন্য আহত শিক্ষক রকিবের স্ত্রী উত্তরা পূর্ব থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
আহত শিক্ষক রকিব লিখন বলেন, ‘মাথার পেছনে সজোরে আঘাত করায় পেছনের এক পাশ ফুলে গেছে এবং ডান হাতেও প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে। তুচ্ছ ঘটনায় আমার ওপর এই হামলা হয়েছে। হামলার সময় কলেজের কম্পিউটার অপারেটর সবুজও মারার চেষ্টা করে, তবে অন্য শিক্ষকরা বাধা দেয়ায় সে মারতে পারেনি।’
জানা গেছে, খণ্ডকালীন শিক্ষক মিরাজ হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন, হারুনুর রশীদ ও বাহাদুর হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক এবং কম্পিউটার অপারেটর সবুজ মিলে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এই সিন্ডিকেট স্থানীয় সাবেক এমপি সাহারা খাতুন, হাবিব হাসান এবং খসরু চৌধুরীর আশীর্বাদপুষ্ট। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, মতের অমিল হলে তারা সমস্যা সৃষ্টি করে। প্রভাবশালীদের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় অন্যরা ভয়ে কিছু বলতে পারেন না।
এমন ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান সাজ্জাদ হোসেন জানান, হামলার ঘটনায় শিক্ষক মিরাজ হোসেনকে অন্য শিক্ষকরা সম্মিলিতভাবে বয়কট করেছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার উত্তরায় দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের সাথে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় সাবেক অধ্যক্ষ শাহিনুর মিয়াকে দায়িত্বে পূণর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সন্ধ্যায় শাহিনুর মিয়াকে
বরখাস্তের পুরনো নোটিশ টিচারদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেন বর্তমান অধ্যক্ষ মির্জা মাহমুদা। ফলে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
এই অবস্থায় আবারো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন কলেজের অন্য শিক্ষকরা।
বিষয়টি নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা মাহমুদা বলেন, মিরাজকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য তদন্ত করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি মাত্র এক মাস হলো দায়িত্ব নিয়েছি। অভিযোগ সম্পর্কে আমি তেমন জানি না। তবে এসব বিষয়ে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উস্কানি দিচ্ছে।’
এদিকে সম্প্রতি কলেজের নতুন গভর্নিং বডি গঠিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এই গভর্নিং বডি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খসরু চৌধুরীর আশীর্বাদপুষ্ট।