নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরুর দাবিতে ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৪৪, আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৪৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্তি চূড়ান্তভাবে বাতিল করে আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর দাবি জানিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। একইসাথে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের আশ্বাস দেয়ায় সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা কলেজ শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বারি সাগর।
তিনি বলেন, ‘আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলের দাবি নিয়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আন্দোলন ও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। আমাদের দাবি ছিল অধিভুক্তি বাতিল করে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করতে হবে। কারণ, যে লক্ষ্য আর উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হয়েছে, সেটা প্রায় আট বছরেও অর্জন করা যায়নি। বরং অধিভুক্তির পর থেকে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানের উন্নতির পরিবর্তে আরো ভোগান্তি বেড়েছে। এসব ভোগান্তির বিরুদ্ধে সময়ে-সময়ে অনেক আন্দোলন, সংগ্রাম হয়েছে। বস্তুত যা ছিল সংস্কারের আন্দোলন।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর গত সেপ্টেম্বরে আমাদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সেটা আসলে আর সংস্কার নয়, আমরা চূড়ান্ত মুক্তির আন্দোলন শুরু করেছি। এ আন্দোলনের শুরু থেকে আমরা সব মহল থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি। দীর্ঘ আন্দোলনের পর আমাদের দাবির বাস্তবতা উপলব্ধি করে সরকারও সাড়া দিয়েছে। দাবি বাস্তবায়নে সরকার ইউজিসি’র সমন্বয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর একটি উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দেয়। যে কমিটি খুবই আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ কমিটি সাত কলেজের সবগুলো কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে বসে কথা বলেছে। আমরা প্রতিটি কলেজ থেকে ২০ থেকে ২২ জনের প্রতিনিধি গিয়ে ইউজিসিতে আমাদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা বলে এসেছি। এরপর ইউজিসির নেতৃত্বে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথেও কথা বলেছে। সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সাথেও কমিটির কথা হয়েছে। সবার সাথে কথা বলে এ কমিটি সাত কলেজের সমন্বয়ে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করা সম্ভব, সে সম্পর্কিত রূপরেখা জাতির সামনে প্রকাশ করবে। সরকার সেটা বাস্তবায়ন করবে।’
এ সময় সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের ফোকাল পয়েন্ট আব্দুর রহমান বলেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির অধীনে ভোগান্তির মধ্যে ছিলেন। সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে, ঢাবির অধীনে আমাদের পরিচয় সঙ্কটের বিষয়টি। সরকারকে আমাদের সমস্যার বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। তারা আমাদের কথা শুনেছে, দাবির যৌক্তিকতা উপলব্ধি করতে পেরেছে এবং সবশেষ চূড়ান্তভাবে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের আশ্বাস দিয়েছে। সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কিন্তু গতকাল সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ঘোষিত ছয় দফা দাবির একটি বাস্তবায়ন হয়েছে, বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য আরো ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এরপর সবার সাথে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত জানাব।’
এ সময় তিনি পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে
১. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রকাশ করতে হবে।
২. এক মাসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
৩. সব বর্ষের চলমান পরীক্ষা পূর্বঘোষিত রুটিন অনুযায়ী চলমান রাখতে হবে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর সাথে চলমান সব শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৫. উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাত কলেজের চলমান সঙ্কট নিরসনে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি, সাত কলেজের অধ্যক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে আগামী দু’ দিনের মধ্যে টেবিলটকের আয়োজন করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা