২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
নৌপথে চাঁদা আদায়

আইনের কঠোর প্রয়োগই কাম্য

-

একটি সহযোগী দৈনিকের সোনারগাঁ প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীতে শুল্ক আদায়ের নামে অবাধে চলছে নৌ-চাঁদাবাজি। নির্ধারিত শুল্কের অতিরিক্ত টাকা না দিলেই মারধর কিংবা হেনস্তা করা হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। এর বিরুদ্ধে নৌযান মালিকরা বিআইডব্লিউটিএ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
নৌযান মালিক ও শ্রমিকরা জানান, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, কিশোরগঞ্জসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে পাথর, বালু, কয়লাসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজ মেঘনা নদীর সোনারগাঁ উপজেলার নুনেরটেক, বৈদ্যেরবাজার ও মেঘনা সেতু এলাকা হয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুরসহ আশপাশের জেলায় যাতায়াত করে। এসব নৌযান ও স্থানীয়ভাবে চলা বিভিন্ন বালুবাহী ট্রলার, যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে ছোট ছোট নৌকায় করে প্রতিদিন শুল্ক আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করছে দুর্বৃত্তরা।
তা ছাড়া পিরোজপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন নৌঘাট ইজারা নিয়ে নৌপথে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ দিয়েছেন নৌযান মালিকরা।
এসব চাঁদাবাজির ঘটনায় গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন এমবি হোসেন অ্যান্ড মাকসুদ খান জাহাজের মাস্টার মো: বাদল। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৮ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে হোলসিম ঘাটে মালপত্র লোড করার পর শুল্ক হিসেবে চার হাজার টাকা নিয়ে তাকে মাত্র ৪০০ টাকার রসিদ ধরিয়ে দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, মেঘনা নদীর বিভিন্ন ঘাটে মালপত্র লোড-আনলোডের জন্য ইজারাদারদের নির্দিষ্ট শুল্ক দিতে হয়। মালপত্র ও নৌযানের ধরন অনুযায়ী এ শুল্কের পরিমাণ কমবেশি হয়ে থাকে।
তবে এ পথে চলাচলকারী নৌযানের চালক ও জাহাজের মাস্টাররা জানান, নির্দিষ্ট শুল্কের চেয়ে ইজারাদারদের সন্ত্রাসী বাহিনী ৫-১০ গুণ বেশি শুল্ক আদায় করছে। বাড়তি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভয় দেখানোর পাশাপাশি শারীরিকভাবে তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ইজারাদার জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি মেঘনা নদীর যে নৌঘাট ইজারা নিয়েছি, সেখান থেকে সরকার নির্ধারিত শুল্ক আদায় করছি। এখানে কোনো বাড়তি টাকা নেয়া হয় না। আমার বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএতে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে, সেটি ঠিক নয়।’ বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জের উপপরিচালক শরিফ হোসেন বলেন, ‘অতিরিক্ত শুল্ক আদায়ের ঘটনায় একটি অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইজারাদারকে শোকজ করা হয়েছে।’
আইনের শাসন সবার কাম্য। তবে আইনের কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন। এ ছাড়া চাঁদাবাজি নৌপথে কখনোই বন্ধ হবে না। আমরা আশা করি, অবিলম্বে আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে মেঘনাসহ সব নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধ হবে।


আরো সংবাদ



premium cement