২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
পাবনায় পদ্মায় বালু উত্তোলন

ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিন

-


নদীবিধৌত বাংলাদেশে নদীভাঙনে প্রতি বছর লাখো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। হাজারো হেক্টর জমি বিলীন হয়ে যায়। নদীভাঙনে ভূমিহীন হয়ে পড়া লোকজন নিকটবর্তী বাঁধ, চর কিংবা শহরের বস্তিতে গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
গত ২২ বছরে শুধু পদ্মা ও যমুনার ভাঙনে ৫০ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমি বিলীন হয়েছে, যা সেন্টমার্টিন দ্বীপের চেয়ে ছয়গুণ বড়। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসের (সিইজিআইএস) তথ্য অনুযায়ী, যমুনায় ২৫ হাজার ২৯০ হেক্টর ও পদ্মায় ২৫ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমি বিলীন হয়েছে।
নদীভাঙন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে স্বীকৃত হলেও এটি অনেক সময় মানবসৃষ্টও বটে। পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারায় পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় তেমনটিই ঘটেছে। এখানে নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের যেন মহোৎসব চলছে। প্রতিদিন অন্তত কোটি টাকার বালু তোলা হচ্ছে। এর ফলে তীরে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন এ বিষয়ে দায় নিচ্ছে না। বাস্তবে স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশেই পাবনা ও কুষ্টিয়ার প্রভাবশালী একটি চক্র অবাধে এই অপকর্ম করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নয়া দিগন্তের প্রতিবেদন মতে, পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের চর কণ্ঠগজরা এলাকায় ১৫ থেকে ২০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। শতাধিক ট্রলারে উত্তোলিত বালু চলে যাচ্ছে পাবনার ভাড়ারা, দোগাছী, পাকশী, সুজানগর, কুষ্টিয়ার কুমারখালী ও রাজবাড়ীর পাংসাসহ বিভিন্ন স্থানে।

কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক এমপি সেলিম আলতাফের সহযোগী আব্দুল আলিম এবং পাবনার ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মাহমুদ খানের নিয়ন্ত্রিত প্রভাবশালী একটি চক্র বালু উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা নৌ-পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহলকে ম্যানেজ করে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত বুধবার বালু তুলতে নিষেধ করায় তিন ব্যক্তিকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনার পর ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।
পদ্মা নদীর ভাঙনে জমি হারানো এক কৃষক বলেন, নৌকার ওপর অস্ত্র নিয়ে তারা বালু তোলে। ভুক্তোভোগী ওই কৃষক আরো বলেন, ‘ধারণা ছিল, হাসিনা সরকার পতনের পর বালু উত্তোলন বন্ধ হবে। কিন্তু তা বন্ধ না হয়ে আরো বেপরোয়াভাবে চলছে। কেউ প্রতিবাদ করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে।’
বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে পাবনার ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান বলেন, গত এক মাস ধরে বালু তোলা হচ্ছে। এর সাথে আমার জড়িত থাকার বিষয়ে যা শুনেছেন তা মিথ্যা। অন্য দিকে নিজেদের যোগসাজশের অভিযোগ অস্বীকার করেন পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
আমরা মনে করি, পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের চর কণ্ঠগজরা এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে নদী ভাঙলে তা মেনে নেয়া যেত। কিন্তু মনুষ্যসৃষ্ট এ ভাঙন কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আশা করব, স্থানীয় প্রশাসন বালু উত্তোলন বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।


আরো সংবাদ



premium cement
বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের দাবি বাংলাদেশ অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস ঢাবি সিন্ডিকেটে এখনো বহাল আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা হাসিনা বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করতে দিগন্ত টেলিভিশনসহ অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করেছে : ফখরুল শীত শুরু হচ্ছে তবু কমেনি ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যয়বহুল তদন্তেও শনাক্ত হয়নি লাশটি কার ‘রহস্যজনক’ কারণে নেয়া হয়নি ডিএনএ নমুনা নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন যুদ্ধবিরতির মার্কিন চেষ্টার মধ্যে লেবাননে ইসরাইলি হামলায় চিকিৎসাকর্মী নিহত অস্বস্তিতে ক্রেতারা : কমিয়ে দিতে হচ্ছে কেনাকাটা গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪৪ হাজার ছাড়াল আমরা মানুষের সম্মিলিত প্রজ্ঞাকে সম্মান করি

সকল