নির্বাসিত সাংবাদিকদের স্বীকৃতি দিন
- ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শেখ হাসিনা যখন দেশকে খাঁচাবন্দী করছিল, সে সময় দেশের গণমাধ্যম যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি। গণমাধ্যমে কর্মরতদের বড় অংশ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার বদলে সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক মূল্যবোধে চালিত হয়েছে। আরো খোলাসা করে বললে, তারা পেশার পরিচয় ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে হাসিনার সহযোগী হয়েছে। সাংবাদিকদের একটি গ্রুপ বরাবর হাসিনার ফ্যাসিবাদের অংশ ছিলেন। একপর্যায়ে দেশ গুম খুন লুটপাটের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। কিন্তু এসবের খবর দেশের কোনো সংবাদমাধ্যম দিত না। তখন এসব খবর পরিবেশনের দায়িত্ব নেন নির্বাসিত কয়েকজন সাংবাদিক। মূলত তারাই গত কয়েক বছরে গণ-অভ্যুত্থানের জন্য ছাত্র-জনতার মানস তৈরি করেছেন।
আমাদের ছাত্ররা মাঠে থেকে অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে দিয়েছেন। তাদের সমর্থনে রাস্তায় নেমে আসে লাখো মানুষ। সবাইকে একসূত্রে গেঁথেছেন যে নির্বাসিত সাংবাদিকরা, দেশ পুনর্গঠনে সেই নায়কদেরকে মনে রাখতে হবে। তারাই এই অভ্যুত্থানের মূল চেতনা ধারণ করেন। তাদের উপযুক্ত মূল্যায়ন করা না হলে আমরা অকৃতজ্ঞ হবো; এমনকি পথ হারাব।
নির্বাসিত সাংবাদিকদের মধ্যে যারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন তাদের অন্যতম হলেন, পিনাকী ভট্টাচার্য, মুশফিকুল ফজল আনসারি, কনক সরোয়ার, ইলিয়াস হোসেন, তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের খান, ফাহাম আব্দুস সালম, শাহেদ আলম। এ ছাড়া আরো বেশ কয়েকজন নিয়মিত ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংবাদ বিশ্লেষণ করে জাতিকে সজাগ করেছেন। এরা সামাজিকমাধ্যমে সোচ্চার না হলে জানার কোনো উপায়ই ছিল না যে, দেশে প্রায় ৯০ ভাগ মানুষের ভিন্নমতও রয়েছে। তারও আগে দেশের ভেতরে ফ্যাসিবাদের প্রাথমিক পর্যায়ে লড়াই করেছেন মজলুম সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। সত্য তুলে ধরার পাশাপাশি তিনিই প্রথম ফ্যাসিবাদ নিয়ে জাতিকে সতর্ক করেন। তিনি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন, হামলা মামলায় পড়ে তার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়। বেশ কয়েক বছর কারা নির্যাতনের পর তিনিও নির্বাসিত হন। এভাবে যারাই দেশে সৎ সাংবাদিকতা করতে চেয়েছেন তারাই কোণঠাসা হয়েছেন কিংবা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। নির্বাসিত সাংবাদিকরা যখন সঠিক তথ্য-উপাত্ত ও বিশ্লেষণ দিয়ে সরকারের মিথ্যাচার ও ভণ্ডামি দেশবাসীর কাছে তুলে ধরছেন, তখনো দেশে গণমাধ্যমের একটি অংশ তাদেরকে গুজব সৃষ্টিকারী বলে প্রচার করেছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে। অপরাধী হিসেবে ট্যাগ দিয়ে ছবি প্রকাশ করে সম্মানহানি করেছে। মাহমুদুর রহমানকে যখন আদালত প্রাঙ্গণে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা রক্তাক্ত করেছে, সংগ্রামের বয়োবৃদ্ধ সম্পাদক আবুল আসাদকে দুর্বৃত্তরা অফিসে ঢুকে হামলা করেছে তখন সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো একটি বিবৃতি পর্যন্ত দেয়নি।
বিজয়ের এই সময়ে তাই গণমাধ্যম ও এর পেছনের সাংবাদিকদের ভূমিকার স্বীকৃতি থাকা দরকার। ফ্যাসিবাদের সময়ে এদের ভূমিকার মূল্যায়ন হওয়া দরকার। সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম নীতি তৈরি করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে তার আগে গণমাধ্যমে নিয়োজিত দেশের মিত্রদের শনাক্ত করতে হবে। যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিল তাদের অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি দিতে হবে। যারা চুপ থেকে ফ্যাসিবাদের উত্থান সহজ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া দরকার। অন্য দিকে যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং নির্বাসিত হয়ে দেশের পক্ষে লড়াই করেছেন তাদের প্রত্যেকের অবদান স্বীকার করা উচিত। আমরা মনে করি, গণমাধ্যম নীতি প্রণয়নেও তাদের অংশগ্রহণ থাকা উচিত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা