কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
- ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
মিয়ানমারের রাখাইন থেকে আবারো আসতে শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। গত কয়েক সপ্তাহে নতুন করে আট হাজার রোহিঙ্গা ঢুকেছে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে। গত রোববার এক দিনে ঢুকেছে আরো ৫০০ জন। এর আগে গত শুক্রবার কক্সবাজার সীমান্ত দিয়ে এসেছে আরো দুই শতাধিক। মূলত রাখাইনে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যকার সঙ্ঘাত এবং নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতে তারা বাংলাদেশে আসছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ। বিষয়টি মানবিক। তবে বাংলাদেশের ওপর এর যে নানামুখী চাপ সৃষ্টি হচ্ছে সেটিও সামান্য নয়।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সীমান্তবর্তী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ঢুকে পড়ে সাড়ে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এর আগে থেকে সেখানে ছিল আরো চার লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরগুলোতে অবস্থান করছে।
এই বিপুলসংখ্যক আশ্রিত মানুষের ভরণপোষণে আন্তর্জাতিক বিশ্ব এবং জাতিসঙ্ঘসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া গেলেও তা যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশেরও অর্থনৈতিক এবং অন্যবিধ সহায়তার দরকার হয়। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে ক্রমাগত বিপর্যয় ঘটছে উখিয়া-টেকনাফের পরিবেশ-প্রতিবেশের। সামাজিক ও অর্থনৈতিক জটিলতা ক্রমাগত বেড়েছে। বর্জ্য অব্যবস্থাপনা, পাহাড় কাটা ও বন উজাড়ের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন চ্যালেঞ্জ। সামাজিক জটিলতা, ভৌগোলিক ক্ষয়, আইনশৃঙ্খলাসহ নানাভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে বাংলাদেশ। বহু দেন-দরবার করেও রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো যায়নি। প্রতিটি উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। কার্যত পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের অকূটনৈতিকসুলভ আচরণে আমাদের এমন ব্যর্থতা। ২০১৯ সালেও দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের ওপর আস্থাহীনতায় সেই উদ্যোগও ব্যর্থ হয়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। অনুপ্রবেশের সময় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে নাফ নদী থেকে আবারো মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে। তারপরও এ মুহূর্তে যেসব রোহিঙ্গা আসছেন তাদের নিয়ে বাণিজ্য শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, তাদের কাছ থেকে মাথাপিছু ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। আগে থেকে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা এ ব্যাপারে দালালিতে নিয়োজিত বলে অসমর্থিত খবরে প্রকাশ। বিষয়টি সতর্কতার সাথে দেখা দরকার। কারণ একবার বাণিজ্য শুরু হলে রোহিঙ্গাদের ঢল অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারে।
আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার সামর্থ্য বাংলাদেশের নেই। মানবিক দিক বিবেচনার পাশাপাশি আমাদের সঙ্গতির দিকটিও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেন বলেছেন, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ কিভাবে রোধ করা যায় তা নিয়ে শিগগির উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হবে। পতিত স্বৈরাচারের সময় বিষয়টি যথাযথভাবে সমাধানের আন্তরিক উদ্যোগ ছিল না বলাই বাহুল্য।
আমরা আশা করব, বর্তমান সরকার আন্তরিক উদ্যোগ নিয়ে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বকে সক্রিয় করে তুলতে সক্ষম হবে। সেই সাথে কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থার অধীনে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা