প্রাণ ফিরে আসুক শিক্ষাঙ্গনে
- ১৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৫
কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে গড়ে ওঠা আন্দোলন ঠেকাতে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৬ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। এর একমাত্র লক্ষ্য ছিল, ছাত্র আন্দোলন যাতে কোনোভাবে জোরদার হতে না পারে। সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নির্দেশ দিয়ে হাজারো মানুষ হত্যা করে হাসিনা সরকার। তবু স্বৈরাচারী হাসিনার শেষ রক্ষা হয়নি। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট খুনি হাসিনাকে শুধু ক্ষমতা ছাড়তে নয়, দেশে ছেড়ে পালাতে হয়েছে। এখন তিনি ভারতের আশ্রয়ে বসে বিভিন্ন চক্রান্ত করছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ।
সেই ১৬ আগস্ট থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ। প্রকৃতপক্ষে প্রায় এক মাস ধরে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে চলছে অচলাবস্থা। গত ৭ আগস্টে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেয়া হলেও বিভিন্ন কারণে তা পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম চালু থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুব কম। নিরাপত্তার কারণে অভিভাবকরা সন্তানদের পাঠাতে দ্বিধা করেছেন।
এ দিকে সদ্য বিদায়ী সরকারের আমলে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্পূর্ণ দলীয়করণের কারণে সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক ভিসিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরতরা পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, দেশের ৫৫টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৯ জন ভিসি, ১১ জন প্রোভিসি ও পাঁচজন ট্রেজারার পদত্যাগ করেছেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদত্যাগ করতে পারেন। কারণ স্বৈরাচারী সরকারের আমলে দলীয় অনুগত লোকদের গুরুত্বপূর্ণ সব পদে নিয়োগ দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান ও পরিবেশ নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা ছিল না। ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধিই ছিল মূল লক্ষ্য। এদের সরিয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। এ জন্য কিছু সময় প্রয়োজন। এ ছাড়া সরকারি অনেক বড় বড় কলেজে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে অধিদফতর ও প্রতিষ্ঠানে অযোগ্যদের সরিয়ে সঠিক ব্যক্তিদের সেখানে বসাতে হবে। ফলে দ্রুততম সময়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চালু করা সম্ভব হলেও শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে সময় লাগবে।
পতিত সরকার দেশের সব খাতের মতো শিক্ষাব্যবস্থায় যে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালিয়েছে, তা নজিরবিহীন। এর একটি দিক হলো নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের তাহজিব-তমদ্দুনবিরোধী এই নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বলা চলে একরকম জোর করে জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয়। দেশবাসীর প্রত্যাশা, অন্তর্বর্তী সরকার এই কারিকুলাম যথাযোগ্য সংশোধন, পরিমার্জন করবে যাতে বৃহত্তর জন-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। সব মিলিয়ে ভেঙে পড়া শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে দাঁড় করানো একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার তাতে সন্দেহ নেই।
সব কিছুর পরও শান্তিকামী ও পরিবর্তনপ্রত্যাশী দেশবাসীর আশা, সারা দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলো আবার প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক শিক্ষার্থীদের পদচারণায়। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী নেতাকর্মীদের মতো গর্হিত কর্মকাণ্ড যাতে কেউ করার দুঃসাহস করতে না পারে সে দিকে তীক্ষèদৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের সন্তানরা যাতে নির্মল পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণ ও নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সেটিই কাম্য।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা